গার্গী তনুশ্রী পাল : কোনো শিশুরই অনাহারে থাকার কথা নয়। ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে থাকার কথা নয় খোলা আকাশের নিচে।
বলছিলাম সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কথা। তাদের যখন বই খাতা-কলম হাতে স্কুলে যাবার কথা, তখন ভিক্ষা করার কথা নয় রাস্তায় রাস্তায়। কিংবা ময়লা আবর্জনা ঘেটে প্লাস্টিক বর্জ্য কুড়িয়ে টাকা উপার্জনের কথা নয় কোনো শিশুর। বাল্য বিবাহের শিকার হয়ে জীবনভর কষ্ট করার জন্য কোনো শিশু জন্ম নেয়নি। তারপরও অনেক শিশু পেট পুরে খাবার পায় না, ঘুমানোর জন্য পায় না কোনো ছাদ, রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করে। কিছু না বোঝার বয়সেই বিয়ে হয়, বয়সের আগেই সন্তান জন্ম দেয়। বেশির ভাগই কষ্টের জীবন বয়ে চলে সারা জীবন। আমাদের দেশে পথশিশুদের একটা বড় অংশের বসবাস শহর অঞ্চলে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, কষ্ট, অনিশ্চিয়তা, অশিক্ষাসহ নানান কারণে তাদের সঠিকভাবে বেড়ে উঠা ব্যাহত হচ্ছে। আবার অনেককেই ব্যবহার করা হচ্ছে মন্দ কাজে। পরিজনহীন হয়ে দিনে দিনে হয়ে উঠছে অপরাধী, কেউ কেউ গ্রহণ করছে মাদক, জড়িয়ে পড়ছে ভয়ঙ্কর অপরাধের সঙ্গে। অনেক ক্ষেত্রেই আমরা তাদের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করি না। প্রতিদিন কঠিন জীবনের মধ্য দিয়ে যেতে যেতে তারা হারিয়ে ফেলছে ন্যায়-অন্যায় বোধ।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভপমেন্ট স্টাডিজ ২০২৪ সালে পথ শিশুর সংখ্যা এক দশমিক ছয় লক্ষ হওয়ার যে ধারণা করেছিল, তা যদি পুরোপুরি ঠিকও হয়, তবুও তার ফলাফল হবে আরো অনেক বেশি কঠিন। প্রতি বছর এই শিশুর কত অংশকে আমরা নিয়ে আসতে পারছি স্কুলে, সুন্দর, সুস্থ জীবনে?
কবে আসবে সেই দিন, যেদিন পত্রিকার পাতায় আমরা আর খোঁজে পাব না এমন খবর? এই শিশুদের জীবন যদি বদলে দেওয়া না যায়, তাদের যদি নিয়ে আসা না যায় পাঠশালায়, বন্ধ করা না যায় বাল্যবিবাহ কিংবা কোনো শিশুকে শিশুমাতা হওয়া থেকে, তাহলে আমরা কি পারবো একটা শান্তির স্বদেশ গড়তে? কেমন করে তারা গড়ে উঠবে সুনাগরিক হয়ে? পথশিশুদের জন্য আলো ঝলমল জীবন আর কত দূরে? দূরত্ব যাই হোক, আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতেই হবে। আমরা সবাই যদি চেষ্টা করি তাহলে নিশ্চয় পারব বদলে দিতে এই শিশুদের আগামী দিন। তাই, আমিই বদলে দিব পথশিশুদের জীবন- এটাই হোক আমাদের অঙ্গিকার।
আমিই বদলে দেব পথশিশুদের জীবন
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ


























