আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালে একটি সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করাই প্রধান ম্যান্ডেট বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। বিবিসি নেপালকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আগামী ছয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন, জেন জি-র আন্দোলন চলাকালীন হত্যা ও সহিংসতার তদন্ত এবং আগের সরকারের ব্যাপক দুর্নীতির তদন্তসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন।
আসন্ন কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে বিবিসির প্রশ্নের জবাবে কোনো রাকঢাক না করে কার্কি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার একমাত্র ম্যান্ডেট হলো, আগামী ছয়মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা। সেটা বাস্তবায়নে যা যা করা প্রয়োজন, আমি সে অনুযায়ীই অগ্রসর হচ্ছি।
সুশাসন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ নয়, বরং নির্বাচনই তাদের অগ্রাধিকার বলেও উল্লেখ করেছেন কার্কি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভের বিস্ফোরণে আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। তাদের প্রধান দাবি ছিল, আগের সরকারের পদত্যাগ, সুশাসন নিশ্চিত ও দুর্নীতি থেকে মুক্তি। এসবের জন্যই তারা নতুন নির্বাচন চেয়েছিল। আর সেটাই আমাদের অগ্রাধিকার।
আগামী ৫ মার্চে আসন্ন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে নেপাল। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনার জন্য সরকারের পদক্ষেপ জানতে চাইলে বিবিসিকে কার্কি বলেন, আমরা ১০ থেকে ১১ জনে একটা মন্ত্রিসভা গঠন করব। নির্বাচনের জন্য আমাদের ভোটার তালিকা হালনাগাদের মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতে হবে, যে নিয়ে আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে আলাপ করব। প্রয়োজনে দিনরাত আমরা কাজ করব।
গত শুক্রবার প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাওদেলের কাছে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন কার্কি। এরপরই তার পরামর্শে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট। এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ করেছে নেপাল বার অ্যাসোসিয়েশন এবং নেপালি কংগ্রেসের মতো প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল।
পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন পক্ষের অসন্তুষ্টি সামাল কীভাবে দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে কার্কি বলেন, এগুলো আমলে নেওয়া আমার কাজ নয়। সব কাজেরই সমর্থক ও বিরোধী পক্ষ থাকে। আমার একমাত্র কাজ নির্বাচন আয়োজন করা।
নেপালের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সরকারি উদ্যোগে কোনো সমঝোতার পদক্ষেপ নেওয়া হবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন নতুন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, আমরা কোনো দলের সঙ্গে সমঝোতায় যাব না। আমরা কেবল একটা নির্বাচন আয়োজন করব। সেখানে দলগুলো নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করে দেশের হাল ধরুক। নির্দিষ্ট কোনো দলের প্রতি আমরা পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ আমরা করতে চাই না।
তবে নির্বাচন আয়োজনের যাত্রায় অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে বলেও স্বীকার করেছেন কার্কি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। পার্লামেন্টও অকার্যকর হয়ে পড়ে। এখন অনেক দল আবার নির্বাচন চাইছে না। সব মিলিয়ে, পরিস্থিতি একবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তবে নির্বাচনটা হয়ে গেলেই সবকিছু আবার পরিষ্কার হয়ে যাবে।
এসি/আপ্র/১৭/০৯/২০২৫