ঢাকা ০৫:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৫

আমরা সকলে হাতি বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি : বনমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০১:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১
  • ১১১ বার পড়া হয়েছে

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : হাতি বাঁচাতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়ে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বনবিভাগের কর্মীদের আরও সক্রিয় হতে বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের রুবী গেইট এলাকায় ফরেস্ট একাডেমির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “হাতি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। আমরা সকলে হাতি বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি। সেই ব্যর্থতার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।”
গত এক মাসে দেশে ৭-৮টি হাতি মারা গেছে এবং তার দায়িত্ব ‘এড়ানো যায় না’ বলে মন্তব্য করেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোনো অবস্থায় যেন এরকম অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। বন বিভাগের হিসাবে, দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত হাতির সংখ্যা ২৬৮টি। এছাড়া ভারত ও মিয়ানমার থেকে দেড় শতাধিক হাতি বিভিন্ন সময়ে যাওয়া-আসা করে।
গত ৩০ বছরে দেশে হাতি মারা গেছে ১৪২টি। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২২টি, ২০২১ সালে ১১টি হাতি মারা গেছে। শুধু চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই মারা মারা যাওয়া হাতির সংখ্যা আটটি। হাতি যেন ফসল মাড়িয়ে নষ্ট না করতে পারে, সেজন্য ক্ষেতে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ তৈরি করেন স্থানীয়রা। এরকম তারে জড়িয়ে মৃত্যুর পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে গুলি করে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আবাস সঙ্কুচিত হওয়ায় খাবার নিয়ে হাতি আর মানুষের দ্বন্দ্বে একের পর এক এমন মৃত্যু এ প্রাণিটির জীবনযাত্রাকে আরও বেশি হুমকির মুখে ফেলছে।
এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বনমন্ত্রী বলেন, “হাতি যদি ফসলের ক্ষতি করে, তার ক্ষতিপূরণ আমার সরকার দিচ্ছে। তাহলে কেন সে হাতি মারবে?
“হাতি আমাদের মৌলভীবাজার এলাকাতেও আছে। ১৫-২০টা বন্য হাতি এক মাস যাবত আছে। ধান ক্ষেতে হাতি নেমে, ধান খেয়ে নেয়। লোকজন আমাদের বলে হাতি ধান খেয়ে নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও তো হাতি মারে না।
“সেই ক্ষতিপূরণ আমরা দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। মন্ত্রণালয় নিচ্ছে। মানুষকে একটু বুঝিয়ে বলা, ফসলের ক্ষতি করলে সে ক্ষতিপূরণ আমরা দিচ্ছি। আপনারা হাতি মারবেন না। হাতি মারলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।”
দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্য হাতি হত্যা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য গত মাসে হাই কোর্ট থেকেও নির্দেশনা আসে।
মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশের জীব বৈচিত্র্য সকল প্রাণী রক্ষার দায়িত্ব বন বিভাগের। বন বিভাগের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আপনার এলাকায় যদি একটি বন্যপ্রাণী মারা যায় তাহলে দায়িত্ব সকলের।”
যে এলাকায় বন্য প্রাণী মারা যাবে তার দায়িত্ব সেখানকার ফরেস্ট গার্ড থেকে শুরু করে ডিএফও এবং সিএফও’র দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাসহ সবাইকে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে বন ক্যাডারের নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষকদের দুই মাসব্যাপী ওরিয়েন্টেশন কোর্স এর সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বনভূমির পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত করার আবশ্যকতা তুলে ধরে তিনি জানান, সামাজিক বনায়ন ও কোস্টাল বেল্টে বনায়নের মাধ্যমে সে লক্ষে কাজ চলছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে ‘অবদান’ অস্বীকারেই নাখোশ ট্রাম্প

আমরা সকলে হাতি বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি : বনমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০১:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২১

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : হাতি বাঁচাতে ব্যর্থতার কথা স্বীকার করে নিয়ে এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে বনবিভাগের কর্মীদের আরও সক্রিয় হতে বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের রুবী গেইট এলাকায় ফরেস্ট একাডেমির এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “হাতি রক্ষার দায়িত্ব আমাদের। আমরা সকলে হাতি বাঁচাতে ব্যর্থ হয়েছি। সেই ব্যর্থতার দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে।”
গত এক মাসে দেশে ৭-৮টি হাতি মারা গেছে এবং তার দায়িত্ব ‘এড়ানো যায় না’ বলে মন্তব্য করেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোনো অবস্থায় যেন এরকম অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, সেজন্য জনসচেতনতা প্রয়োজন। বন বিভাগের হিসাবে, দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসরত হাতির সংখ্যা ২৬৮টি। এছাড়া ভারত ও মিয়ানমার থেকে দেড় শতাধিক হাতি বিভিন্ন সময়ে যাওয়া-আসা করে।
গত ৩০ বছরে দেশে হাতি মারা গেছে ১৪২টি। এর মধ্যে ২০২০ সালে ২২টি, ২০২১ সালে ১১টি হাতি মারা গেছে। শুধু চলতি বছরের নভেম্বর মাসেই মারা মারা যাওয়া হাতির সংখ্যা আটটি। হাতি যেন ফসল মাড়িয়ে নষ্ট না করতে পারে, সেজন্য ক্ষেতে বৈদ্যুতিক তারের ফাঁদ তৈরি করেন স্থানীয়রা। এরকম তারে জড়িয়ে মৃত্যুর পাশাপাশি বিভিন্ন সময়ে গুলি করে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। আবাস সঙ্কুচিত হওয়ায় খাবার নিয়ে হাতি আর মানুষের দ্বন্দ্বে একের পর এক এমন মৃত্যু এ প্রাণিটির জীবনযাত্রাকে আরও বেশি হুমকির মুখে ফেলছে।
এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়াতে আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বনমন্ত্রী বলেন, “হাতি যদি ফসলের ক্ষতি করে, তার ক্ষতিপূরণ আমার সরকার দিচ্ছে। তাহলে কেন সে হাতি মারবে?
“হাতি আমাদের মৌলভীবাজার এলাকাতেও আছে। ১৫-২০টা বন্য হাতি এক মাস যাবত আছে। ধান ক্ষেতে হাতি নেমে, ধান খেয়ে নেয়। লোকজন আমাদের বলে হাতি ধান খেয়ে নিচ্ছে। কিন্তু তারপরও তো হাতি মারে না।
“সেই ক্ষতিপূরণ আমরা দেওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছি। মন্ত্রণালয় নিচ্ছে। মানুষকে একটু বুঝিয়ে বলা, ফসলের ক্ষতি করলে সে ক্ষতিপূরণ আমরা দিচ্ছি। আপনারা হাতি মারবেন না। হাতি মারলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।”
দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্য হাতি হত্যা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর জন্য গত মাসে হাই কোর্ট থেকেও নির্দেশনা আসে।
মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, “বাংলাদেশের জীব বৈচিত্র্য সকল প্রাণী রক্ষার দায়িত্ব বন বিভাগের। বন বিভাগের সবাইকে দায়িত্ব নিতে হবে। আপনার এলাকায় যদি একটি বন্যপ্রাণী মারা যায় তাহলে দায়িত্ব সকলের।”
যে এলাকায় বন্য প্রাণী মারা যাবে তার দায়িত্ব সেখানকার ফরেস্ট গার্ড থেকে শুরু করে ডিএফও এবং সিএফও’র দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাসহ সবাইকে নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। ৩৮তম বিসিএসের মাধ্যমে বন ক্যাডারের নিয়োগপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষকদের দুই মাসব্যাপী ওরিয়েন্টেশন কোর্স এর সমাপনী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বন ও পরিবেশমন্ত্রী। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বনভূমির পরিমাণ ২৫ শতাংশে উন্নীত করার আবশ্যকতা তুলে ধরে তিনি জানান, সামাজিক বনায়ন ও কোস্টাল বেল্টে বনায়নের মাধ্যমে সে লক্ষে কাজ চলছে।