ঢাকা ১২:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করছি’: শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ

  • আপডেট সময় : ০৩:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৮২ বার পড়া হয়েছে

সিলেট প্রতিনিধি : দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার প্রতিবাদ জানিয়েছে সিলেটের একদল শিক্ষার্থী।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা’ ব্যানারে সিলেট নগরীর চৌহাটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে বক্তারা বলে, এসব কাজ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হচ্ছে। সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান প্রান্তিকের পরিচালনায় মানববন্ধনে এই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি সিলেটের সভাপতি সৈয়দ মনির হেলাল বলেন, “আমাদের পিতৃতুল্য মাতৃতুল্য শিক্ষকদের ওপর নিপীড়ন নেমে আসছে। এটা স্পষ্টতই অন্যায় ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এসব ঘটনার পেছনে নানান দ্বন্দ্ব ও উসকানি থাকতে পরে। “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাক, তা আমরা চাই না। কিন্তু এসব কাজ করে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করছি।” সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষক প্রণব কান্তি দেব বলেন, ‘‘কোনো শিক্ষক যদি অপরাধী হোন, বা দলীয় পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করে থাকেন, তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে জোরপূর্বক লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। “আমরা যে বাংলাদেশ চাচ্ছি সেই বাংলাদেশে যদি শিক্ষকদের উপর নির্যাতন হয় তার পরিণাম কিন্তু ভালো হবে না। যে কোনো পেশার ক্ষেত্রেই আমরা নিপীড়ন চাই না।’’ চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেটের আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা বলেন, ‘‘শিক্ষকদের পদত্যাগের এই প্রক্রিয়া যদি অব্যাহত থাকতে দেই তাহলে যে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হবে, তার যে প্রভাব পড়বে সারা দেশে।’’ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা মুকুল, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল করিম কিম, আইনজীবী বিদ্যুৎ কুমার দাশ বাপন, ইমজা সিলেটের সহ-সাধারণ সম্পাদক নাবিল হোসেন, এমসি কলজের সাবেক শিক্ষার্থী সাগর দাস, নরোত্তম দাসও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন। সাংস্কৃতিক সংগঠক শামসুল বাসিত শেরো, আইনজীবী অরুপ শ্যাম বাপ্পী, সাংবাদিক রাজীব রাসেল, নগরনাটের সাবেক সভাপতি উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী, আইনজীবী বিশ্বপা ভট্টাচার্য, বন্ধুসভা সিলেটের সাবেক সভাপতি হুমায়রা জাকিয়া পুতুল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং অন্তর্র্বতী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এই ঘটনাগুলো ঘটছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চাপ দিয়ে পদত্যাগ, শারীরিকভাবে আক্রমণের ঘটনায় সমালোচনাও হচ্ছে।
গত ২৫ আগস্ট শিক্ষা উপদেষ্টা অর্থনীতির শিক্ষক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তার মন্ত্রণালয়ে এই বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে একটি বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, “জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে প্রশাসন ভেঙে পড়তে পারে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পেতে অসুবিধা হবে।” পদত্যাগে বাধ্য করা নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ম বিধি অনুযায়ী পদায়ন ও বদল করা হয়। তাদের বলপূর্বক পদত্যাগের সুযোগ নেই। “কাউকে ব্যক্তিগতভাবে অপমানিত করা যাবে না। শিক্ষাঙ্গনে ভদ্রতা বজায় রাখতে হবে।” তবে শিক্ষা উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পরও একের পর এক ঘটনা ঘটে চলছে।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করছি’: শিক্ষক লাঞ্ছনার প্রতিবাদ

আপডেট সময় : ০৩:০৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সিলেট প্রতিনিধি : দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করার প্রতিবাদ জানিয়েছে সিলেটের একদল শিক্ষার্থী।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা’ ব্যানারে সিলেট নগরীর চৌহাটায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে মানববন্ধন করে বক্তারা বলে, এসব কাজ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হচ্ছে। সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান প্রান্তিকের পরিচালনায় মানববন্ধনে এই বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি সিলেটের সভাপতি সৈয়দ মনির হেলাল বলেন, “আমাদের পিতৃতুল্য মাতৃতুল্য শিক্ষকদের ওপর নিপীড়ন নেমে আসছে। এটা স্পষ্টতই অন্যায় ও অনাকাঙ্ক্ষিত। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। এসব ঘটনার পেছনে নানান দ্বন্দ্ব ও উসকানি থাকতে পরে। “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যাক, তা আমরা চাই না। কিন্তু এসব কাজ করে আমরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করছি।” সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি শিক্ষক প্রণব কান্তি দেব বলেন, ‘‘কোনো শিক্ষক যদি অপরাধী হোন, বা দলীয় পরিচয় দিয়ে অপকর্ম করে থাকেন, তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে জোরপূর্বক লাঞ্ছিত করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। “আমরা যে বাংলাদেশ চাচ্ছি সেই বাংলাদেশে যদি শিক্ষকদের উপর নির্যাতন হয় তার পরিণাম কিন্তু ভালো হবে না। যে কোনো পেশার ক্ষেত্রেই আমরা নিপীড়ন চাই না।’’ চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেটের আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা বলেন, ‘‘শিক্ষকদের পদত্যাগের এই প্রক্রিয়া যদি অব্যাহত থাকতে দেই তাহলে যে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হবে, তার যে প্রভাব পড়বে সারা দেশে।’’ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা মুকুল, সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক আবদুল করিম কিম, আইনজীবী বিদ্যুৎ কুমার দাশ বাপন, ইমজা সিলেটের সহ-সাধারণ সম্পাদক নাবিল হোসেন, এমসি কলজের সাবেক শিক্ষার্থী সাগর দাস, নরোত্তম দাসও মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন। সাংস্কৃতিক সংগঠক শামসুল বাসিত শেরো, আইনজীবী অরুপ শ্যাম বাপ্পী, সাংবাদিক রাজীব রাসেল, নগরনাটের সাবেক সভাপতি উজ্জ্বল চক্রবর্ত্তী, আইনজীবী বিশ্বপা ভট্টাচার্য, বন্ধুসভা সিলেটের সাবেক সভাপতি হুমায়রা জাকিয়া পুতুল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং অন্তর্র্বতী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই এই ঘটনাগুলো ঘটছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের চাপ দিয়ে পদত্যাগ, শারীরিকভাবে আক্রমণের ঘটনায় সমালোচনাও হচ্ছে।
গত ২৫ আগস্ট শিক্ষা উপদেষ্টা অর্থনীতির শিক্ষক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ তার মন্ত্রণালয়ে এই বিষয়টি নিয়ে একটি বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে একটি বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়, “জোরপূর্বক পদত্যাগে বাধ্য করে অস্থিরতা সৃষ্টি করলে প্রশাসন ভেঙে পড়তে পারে। শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন ভাতা পেতে অসুবিধা হবে।” পদত্যাগে বাধ্য করা নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ম বিধি অনুযায়ী পদায়ন ও বদল করা হয়। তাদের বলপূর্বক পদত্যাগের সুযোগ নেই। “কাউকে ব্যক্তিগতভাবে অপমানিত করা যাবে না। শিক্ষাঙ্গনে ভদ্রতা বজায় রাখতে হবে।” তবে শিক্ষা উপদেষ্টার এই বক্তব্যের পরও একের পর এক ঘটনা ঘটে চলছে।