বিনোদন প্রতিবেদক: শারীরিক অবস্থা কিছুটা জটিল হওয়ার কারণে আবারো আইসিইউতে ভর্তি দেশবরেণ্য লালনসংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন। অনেক বছর ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছেন তিনি। কিছুদিন ধরে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে, বর্তমানে সপ্তাহে দুই দিন তাঁকে ডায়ালাইসিস করাতে হয়। নিয়মিত ডায়ালাইসিসের অংশ হিসেবে গত ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। ডায়ালাইসিসের পর শিল্পীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে একাধিক সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী।
ছেলে ইমাম নিমেরি উপল জানিয়েছেন,‘আম্মাকে ডায়ালাইসিস করতে নিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়। তারপর তো আইসিইউতে ভর্তি করাতে হয়।’
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিকিৎসক আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানালেন, আজ (শুক্রবার) দিনের যেকোনো সময় আইসিইউ থেকে কেবিনে স্থানান্তর করা হবে ফরিদা পারভীনকে। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা কিছুটা জটিল। কিডনি জটিলতার পাশাপাশি তাঁর শ্বাসকষ্টসহ আরো নানা সমস্যা আছে। আমরা প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। তাঁর সুস্থতার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছি।
এর আগে ফরিদা পারভীনের শারীরিক অবস্থা প্রসঙ্গে স্বামী যন্ত্রসংগীতশিল্পী গাজী আবদুল হাকিম বলেছিলেন, সার্বিকভাবে তাঁর অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। গত কয়েক মাসে এ নিয়ে চারবার আইসিইউতে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করাতে হয়েছে। ফুসফুস আর কিডনিজনিত নানা সমস্যায় ভুগছেন তিনি। শরীর প্রচণ্ড দুর্বল থাকে। উঠে দাঁড়ানোর মতো শক্তি পান না। হাঁটতেও পারেন না। সবাই তাঁর জন্য দোয়া করবেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন ফরিদা পারভীন। ফুসফুসের সমস্যা ছাড়াও ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ও থাইরয়েড জটিলতা রয়েছে তাঁর। বমি ও শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় শারীরিক অবস্থা আরো জটিল আকার ধারণ করেছে।
১৯৬৮ সালে রাজশাহী বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নজরুলসংগীত গেয়ে সংগীতাঙ্গনে পথচলা শুরু করেন ফরিদা পারভীন। ১৯৭৩ সালে দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা পান তিনি। পরে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে লালনসংগীতে তালিম নেন এবং ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন লালনগীতির জীবন্ত কিংবদন্তি। সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৮৭ সালে তিনি লাভ করেন একুশে পদক। পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে লালনের গান শেখাতে গড়ে তোলেন ‘অচিন পাখি স্কুল’।
সানা/আপ্র/০৫/০৯/২০২৫