প্রযুক্তি ডেস্ক : ব্যবহারকারীর সংখ্যার হিসেবে এখনও বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক মাধ্যম হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা কারণে গ্রহণযোগ্যতা কমা শুরু হয়েছে ফেসবুকের; এক দশক আগের জনপ্রিয়তা নেই প্ল্যাটফর্মটির। সুদিন ফেরানোর বাজির ঘোড়া হিসেবে এখন নতুন ‘ডিসকভারি ইঞ্জিন’-এ জোর দিচ্ছেন প্ল্যাটফর্মটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। সম্প্রতি ‘ল্যান্ড অফ দ্য জায়ান্ট’ পডকাস্টে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফেসবুক ফিডের ভবিষ্যৎ নিয়ে বিষদ আলোচনা করেছেন মেটা ইনকর্পোরেটেডের ফেসবুক অ্যাপ প্রধান টম অ্যালিসন। জনপ্রিয়তা ফিরে পাওয়ার প্রচেষ্টার ফলাফল হিসেবে ‘নতুন প্রজন্মের ব্যবহারকারীরা যেভাবে সেবাটি ব্যবহার করবেন তাতে সাড়া দিতে উপযোগী ফেসবুক অ্যাপ’ কেন্দ্রিক পরিকল্পনার কথা বলেছেন তিনি। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে, দায়িত্ব নেওয়ার পর এটিই ছিল অ্যালিসনের প্রথম ‘বিস্তারিত সাক্ষাৎকার’। যুক্তরাষ্ট্রের পিউ রিসার্চ সেন্টারের করা কয়েক বছরের জরিপ বলছে, প্রতি বছরেই কিশোরবয়সিদের কাছে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে প্ল্যাটফর্মটি। এখানে নিজের ব্যক্তিগত জীবন আর তুলে ধরতে আগ্রহ বোধ করেন না তরুণরা। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবহারকারীকে মূল ফিডে আরও বিনোদনমূলক কনটেন্ট রাখতে চায় ফেসবুক। সেই লক্ষ্য থেকেই ‘ডিসকভারি ইঞ্জিন’-এর আবির্ভাব। তবে, কার্যত হালের জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম টিকটকের দেখানো পথেই হাঁটার চেষ্টা করছে ফেসবুক; আর সে ব্যবসায়িক পরিকল্পনার গালভরা নামও পেয়ছে এটি- ‘ডিসকভারি ইঞ্জিন’। কিশোর ও তরুণদের মধ্যে টিকটক যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, নিজের থলেতেও ওই একই সোনার মোহর চায় প্ল্যাটফর্মটি। ফেসবুক আবারও ‘কুল’ হতে চায় বলে মন্তব্য করেছে ভার্জ। এই ‘কুল’ হওয়ার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ব্যবহারকারীর ফিডে বিনোদনমূলক কনটেন্টের উপস্থিতি বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে ফেসবুক; সে প্রচেষ্টাই রূপ নিয়েছে “ডিসকভারি ইঞ্জিন”-এ।
পডকাস্টের আলাপে আরও অংশ নিয়েছিলেন মেটার নীতিমালাবিষয়ক শীর্ষ নির্বাহী নিক ক্লেগ। বিশ্বের কয়েকশ কোটি মানুষ নিজের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ফিডে কী দেখবেন সেটি নির্ধারণের ক্ষমতা রয়েছে তার কোম্পানির। সে বিষয়েই কথা বলেছেন ক্লেগ। অ্যালগরিদমের নির্বাচিত কনটেন্ট নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে ক্লেগ বলেন, “অদ্ভুত বিষয় হচ্ছে, ভবিষ্যতে আমরা সেটাই করবো যার দোষ দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। আপনি যদি ফ্রান্সেস হাউগেনের (সাবেক ফেসবুক কর্মী ও তথ্য ফাঁসকারী) মতামতে কান দেন, মনে হবে ‘ওরা বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য মানুষকে চামচে তুলে খাওয়াচ্ছে’। অবশ্যই এর পুরোটাই বানোয়াট। কারণ, মানুষ ফেসবুকে যা দেখে অবশ্যই তার মূল চালিকা শক্তি আমাদের সিস্টেম; কিন্তু এখানে মানুষের নিজের পছন্দ, তাদের বন্ধু-বান্ধব, তারা কাদের সঙ্গে ওঠা-বসা করেন, কোন ধরনের কনটেন্ট দেখেন এমন সব কিছুরই সম্পর্ক আছে।” ফেসবুক এর সবকিছুই ‘ডিসকভারি ইঞ্জিন’ কৌশল দিয়ে বদলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বলে জানিয়েছে ভার্জ। ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামকে টিকটকের মতো করে গড়ে তুলতে এআইয়ের সহযোগিতা নিয়ে ব্যবহারকারীদের আরও বেশি অপরিচিতি মানুষের কনটেন্ট দেখাবে মেটা।
আবারও ‘কুল হতে’ চায় ফেসবুক
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ