ঢাকা ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

আফগান ব্যাংকিং ব্যবস্থা পতনের দ্বারপ্রান্তে : জাতিসংঘ

  • আপডেট সময় : ১১:১৩:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১
  • ৮৪ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক সংকটের ব্যাপারে আবারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, দেশটির অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। আর তাই মানবিক ও আর্থিক নিরাপত্তার স্বার্থে আফগান ব্যাংকগুলোকে রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
গত সোমবার জাতিসংঘ এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। জরুরি পদক্ষেপ ছাড়া কয়েক মাসের মধ্যে আফগান ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলেও সতর্কতা উচ্চারণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গত সোমবার নিউইয়র্কে বলেন, আফগানিস্তানের ক্রেডিট মার্কেটে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বহুগুণে বেড়েছে। দেশটিতে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ২০২০ সালে যেখানে ছিল শতকরা ২০ ভাগ, সেটি চলতি বছরে ৫৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনডিপি।
ডুজারিক জানান, ইউএনডিপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- আফগানিস্তানের ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা তাদের পুঁজি তুলে ফেলছেন যা অব্যাহত থাকলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্যাংকে জনগণের গচ্ছিত অর্থ শতকরা ৪০ ভাগ কমে যাবে। জাতিসংঘ মহাসচিবের এই মুখপাত্র আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের জন্য সাহায্যের আবেদনে যে সাড়া পাওয়া গেছে তাতে ৬০ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল সংগৃহিত হয়েছে এবং এই অর্থ দিয়ে আফগানিস্তানের এক কোটি ১০ লাখ মানুষকে সেবার আওতায় আনা সম্ভব হবে।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আফগানিস্তানে আসন্ন শীতকালকে সামনে রেখে দেশটির দারিদ্র ও বেকারত্ব ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শীতকালে দেশটির কোনো কোনো এলাকার তাপমাত্র হিমাঙ্কের নিচে চলে যায় এবং এ সময় সেখানকার মানুষের তেমন কোনো কাজ থাকে না বললেই চলে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য বিশ্বের কোনো দেশই এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বারবার সতর্ক করেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আফগানিস্তান। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে এবং প্রচ- শীতের মধ্যে লাখ লাখ আফগান অনাহারের মধ্যে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি, চলমান খাদ্য সংকট এবং শীত মৌসুমের শুরু আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে গেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আফগান ব্যাংকিং ব্যবস্থা পতনের দ্বারপ্রান্তে : জাতিসংঘ

আপডেট সময় : ১১:১৩:২৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে অর্থনৈতিক সংকটের ব্যাপারে আবারও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি বলছে, দেশটির অর্থনৈতিক ও ব্যাংকিং ব্যবস্থা পতনের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। আর তাই মানবিক ও আর্থিক নিরাপত্তার স্বার্থে আফগান ব্যাংকগুলোকে রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
গত সোমবার জাতিসংঘ এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলে গতকাল মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। জরুরি পদক্ষেপ ছাড়া কয়েক মাসের মধ্যে আফগান ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে বলেও সতর্কতা উচ্চারণ করা হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক গত সোমবার নিউইয়র্কে বলেন, আফগানিস্তানের ক্রেডিট মার্কেটে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বহুগুণে বেড়েছে। দেশটিতে অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ ২০২০ সালে যেখানে ছিল শতকরা ২০ ভাগ, সেটি চলতি বছরে ৫৭ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে ইউএনডিপি।
ডুজারিক জানান, ইউএনডিপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- আফগানিস্তানের ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা তাদের পুঁজি তুলে ফেলছেন যা অব্যাহত থাকলে চলতি বছরের শেষ নাগাদ ব্যাংকে জনগণের গচ্ছিত অর্থ শতকরা ৪০ ভাগ কমে যাবে। জাতিসংঘ মহাসচিবের এই মুখপাত্র আরও বলেন, এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের জন্য সাহায্যের আবেদনে যে সাড়া পাওয়া গেছে তাতে ৬০ কোটি ৬০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল সংগৃহিত হয়েছে এবং এই অর্থ দিয়ে আফগানিস্তানের এক কোটি ১০ লাখ মানুষকে সেবার আওতায় আনা সম্ভব হবে।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, আফগানিস্তানে আসন্ন শীতকালকে সামনে রেখে দেশটির দারিদ্র ও বেকারত্ব ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শীতকালে দেশটির কোনো কোনো এলাকার তাপমাত্র হিমাঙ্কের নিচে চলে যায় এবং এ সময় সেখানকার মানুষের তেমন কোনো কাজ থাকে না বললেই চলে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য বিশ্বের কোনো দেশই এখনও তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থা আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক সংকট প্রতিদিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে। জাতিসংঘ বারবার সতর্ক করেছে যে, বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকটের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে আফগানিস্তান। দেশটির অর্ধেকেরও বেশি মানুষ তীব্র খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন হয়েছে এবং প্রচ- শীতের মধ্যে লাখ লাখ আফগান অনাহারের মধ্যে থাকতে বাধ্য হচ্ছে।
এছাড়া করোনাভাইরাস মহামারি, চলমান খাদ্য সংকট এবং শীত মৌসুমের শুরু আফগানিস্তানের চলমান পরিস্থিতিকে আরও খারাপের দিকে নিয়ে গেছে।