ঢাকা ০৮:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

আফগানিস্তানে বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে তালেবান

  • আপডেট সময় : ১১:৫৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানে ডলারসহ বিদেশি সব মুদ্রার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে তিন মাস আগে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া কট্টরপন্থি গোষ্ঠী তালেবান।
এক ঘোষণায় তালেবান বলেছে, “অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও দেশের জাতীয় স্বার্থে সব ধরণের বাণিজ্যে সব আফগান নাগরিকের আফগানি মুদ্রা ব্যবহার করা প্রয়োজন।
“ইসলামিক আমিরাতের (তালেবান আফগানিস্তানকে এ নামেই ডাকে) সব নাগরিক, দোকানদার, ছোট-বড় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে এখন থেকে সব লেনদেন আফগানি মুদ্রায় করতে এবং বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। “যারা এ নির্দেশ অমান্য করবে তাদেরকে আইনী ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে,” অনলাইনে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।
তাদের এই পদক্ষেপে এমনিতেই খাদের কিনারায় থাকা দেশটির অর্থনীতি আরও সংকটজনক অবস্থায় পড়বে বলে পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা। অগাস্টে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের কাছে থাকা আফগানিস্তানের কোটি কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করে রাখে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দেশটির অর্থনীতি সংকটে পড়েছে।
আফগানিস্তানে নগদ অর্থের গুরুতর সংকট থাকায় বিদেশিরা যে অর্থ-সম্পদ আটকে রেখেছে, তা ছাড়ে তালেবান অনুরোধ জানিয়েছে। বিদেশি সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেও আফগানিস্তান বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। এর আগে বিদেশ থেকে আসা অনুদানই দেশটির সরকারি ব্যয়ের তিন-চতুর্থাংশ মেটাত।
আফগানিস্তানের বাজারগুলোতে মার্কিন ডলারের চল রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা সীমান্তসহ দেশটির বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায়ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলার ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
চলতি বছর দেশটির অর্থনীতি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সংকুচিত হতে পারে বলে গত মাসে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তেমনটা হলে দেশটির লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে এবং তীব্র মানবিক সংকট সৃষ্টি হবে, বলেছে তারা। আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক দৈন্যদশা শরণার্থী সংকটে হাওয়া দিতে পারে, যার প্রভাব প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশাপাশি তুরস্ক এবং ইউরোপেও পড়তে পারে বলে অনুমান আইএমএফের।
দেশটি ভয়াবহ খরাতেও ভুগছে, যার কারণে গম উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও হু হু করে বাড়ছে। খরা, সংঘাত ও কোভিড-১৯ এর মিলিত আঘাতে লাখ লাখ আফগান নাগরিক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আফগানিস্তানে বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে তালেবান

আপডেট সময় : ১১:৫৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফগানিস্তানে ডলারসহ বিদেশি সব মুদ্রার ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে তিন মাস আগে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া কট্টরপন্থি গোষ্ঠী তালেবান।
এক ঘোষণায় তালেবান বলেছে, “অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও দেশের জাতীয় স্বার্থে সব ধরণের বাণিজ্যে সব আফগান নাগরিকের আফগানি মুদ্রা ব্যবহার করা প্রয়োজন।
“ইসলামিক আমিরাতের (তালেবান আফগানিস্তানকে এ নামেই ডাকে) সব নাগরিক, দোকানদার, ছোট-বড় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে এখন থেকে সব লেনদেন আফগানি মুদ্রায় করতে এবং বিদেশি মুদ্রা ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। “যারা এ নির্দেশ অমান্য করবে তাদেরকে আইনী ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে,” অনলাইনে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে এমনটাই বলেছেন তালেবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ।
তাদের এই পদক্ষেপে এমনিতেই খাদের কিনারায় থাকা দেশটির অর্থনীতি আরও সংকটজনক অবস্থায় পড়বে বলে পর্যবেক্ষকদের আশঙ্কা। অগাস্টে তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের কাছে থাকা আফগানিস্তানের কোটি কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করে রাখে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর দেশটির অর্থনীতি সংকটে পড়েছে।
আফগানিস্তানে নগদ অর্থের গুরুতর সংকট থাকায় বিদেশিরা যে অর্থ-সম্পদ আটকে রেখেছে, তা ছাড়ে তালেবান অনুরোধ জানিয়েছে। বিদেশি সাহায্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেও আফগানিস্তান বড় ধরনের সংকটে পড়েছে। এর আগে বিদেশ থেকে আসা অনুদানই দেশটির সরকারি ব্যয়ের তিন-চতুর্থাংশ মেটাত।
আফগানিস্তানের বাজারগুলোতে মার্কিন ডলারের চল রয়েছে। পাকিস্তানের সঙ্গে থাকা সীমান্তসহ দেশটির বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায়ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডলার ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
চলতি বছর দেশটির অর্থনীতি ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সংকুচিত হতে পারে বলে গত মাসে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তেমনটা হলে দেশটির লাখ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে এবং তীব্র মানবিক সংকট সৃষ্টি হবে, বলেছে তারা। আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক দৈন্যদশা শরণার্থী সংকটে হাওয়া দিতে পারে, যার প্রভাব প্রতিবেশী দেশগুলোর পাশাপাশি তুরস্ক এবং ইউরোপেও পড়তে পারে বলে অনুমান আইএমএফের।
দেশটি ভয়াবহ খরাতেও ভুগছে, যার কারণে গম উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামও হু হু করে বাড়ছে। খরা, সংঘাত ও কোভিড-১৯ এর মিলিত আঘাতে লাখ লাখ আফগান নাগরিক দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি।