প্রত্যাশা ডেস্ক: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ এক বিস্ময়কর অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেছেন, নিউদিল্লি কাবুলকে হাতিয়ার বানিয়ে তার দেশে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, কাবুল যদি ইসলামাবাদের ওপর আক্রমণ করে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ‘৫০ গুণ শক্তিশালী’ জবাব দেয়া হবে।
গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) জিও নিউজের প্রাইমটাইম শো ‘আজ শাহজেব খানজাদা কে সাথে’ এ কঠোর ভাষায় আফগান প্রতিনিধি দলের সমালোচনা করেন আসিফ। ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
বারবার শান্তি চুক্তি থেকে পিছু হটায় আফগানিস্তানের তালেবান সরকারেরও তীব্র সমালোচনা করেন পাকিস্তানি মন্ত্রী। ইস্তামবুলে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যকার শান্তি আলোচনা নাটকীয়ভাবে ভেঙে পড়ার পর, এমন মন্তব্য করেন তিনি।
আসিফকে উদ্ধৃত করে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন জানিয়েছে, আমি মনে করি আলোচনা ভাঙানো হয়েছে। আমাদের কাছে চুক্তি ছিল। কিন্তু তারপর তারা কাবুলকে ফোন করে সেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটাল। কাবুল আগে একই রকম অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক এবং গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। রূপক অর্থে তিনি বলেছিলেন কাবুলকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করছে-’পুতুলের নাটক’ সাজানো হচ্ছে। তার ভাষায়, আমি তাদের প্রতিনিধিদলকে প্রশংসা জানাবো, কিন্তু কাবুলে যারা রশি টানছে এবং পুতুলের নাটক মঞ্চস্থ করছে তারা দিল্লি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
আসিফ দাবি করেন, ভারত তাদের পশ্চিম সীমান্তে পরাজয় পূরণ করছে কাবুলের মাধ্যমে। সেখানে থাকা সামরিক শাসকগোষ্ঠীর কিছু উপাদান ভারতে গিয়েছে এবং তাদের মন্দির ভ্রমণ করেছে। আসিফের অভিযোগ, ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে একটি কম তীব্রতার যুদ্ধ চালাতে চায়। সেটি বাস্তবায়নে তারা কাবুলকে ব্যবহার করছে। আফগানিস্তানের হুমকি এবং ইসলামাবাদের ওপর সম্ভাব্য আক্রমণ সম্পর্কে আসিফ আরো কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেন, গত চার বছর ধরে তারা সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে এসেছে। কোনো সন্দেহ নাই যে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদে কাবুল দায়ী। আর কাবুল দিল্লির একটি হাতিয়ার।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তান শনিবার (২৫ অক্টোবর) ইস্তানবুলে শান্তি আলাপনার দ্বিতীয় ধাপ শুরু করেছিল। কাতার ও তুরস্কের মধ্যস্থতায় হওয়া এই শান্তি আলোচনা শেষে কোনো সমঝোতা ছাড়াই শেষ হয়।
তাৎক্ষণিক যে ইস্যুটি উত্তেজনা সৃষ্টি করে, তা হলো- পাকিস্তান প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে স্বীকার করে যে, তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এমন এক চুক্তি আছে যা পাকিস্তানের ভূখণ্ড থেকে ড্রোন অপারেশন চালানোর অনুমতি দেয়। পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছিলেন এই চুক্তি ‘ভঙ্গ করা যাবে না’; যা আফগান পক্ষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি করে। কারণ তারা নিশ্চয়তা চেয়েছিল পাকিস্তান আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন করে মার্কিনি ড্রোন ব্যবহার করবে না। চলতি মাসের শুরুতে দুই প্রতিবেশী দেশ সীমান্তে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল।
সানা/আপ্র/২৯/১০/২০২৫


























