ঢাকা ১০:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫

আপনি ভুল করেননি, অপরাধ করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট

  • আপডেট সময় : ০২:৫৯:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩
  • ৭৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলকে উদ্দেশে করে হাইকোর্ট বলেছেন, আপনি আদালতের আদেশ টেম্পারিং (ঘষামাজা করে পরিবর্তন) করেছেন। এতে আপনার বুক কাঁপল না? টেম্পারিং করে আপনি ভুল করেননি। জেনে বুঝে আপনি ক্রাইম (অপরাধ) করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেছেন। শুনানিতে জেলা জজ ইসমাইলের আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আমরা কনটেস্ট করতে চাই না। আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। আমরা খুবই অনুতপ্ত। এ পর্যায়ে হাইকোর্ট জেলা জজকে ডায়াসের সামনে ডেকে আদেশ টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চান। তখন জেলা জজ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, ভুলে এটা হয়েছে। তখন আদালত বলেন, আপনি ভুল করেননি। আপনি জেনে বুঝে ক্রাইম করেছেন। এ সময় তার আইনজীবীরা আবারও ক্ষমা চাইলে হাইকোর্ট বলেন, আপনারা ক্ষমা চাইছেন। অনুতপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু জেলা জজের মধ্যে তো কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি অনুতপ্তও নন। মন থেকে অনুশোচনা আসতে হয়। এরপর এ আদেশের জন্য আগামী ২৭ জুলাই দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে আইনশৃঙ্খলায় বিঘœ ঘটানোর অভিযোগে করা এক মামলায় আসামিদের জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আজ হাইকোর্টের এই বেঞ্চে হাজির হন মোহাম্মদ ইসমাইল। আজ আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
ওই মামলায় কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়া সত্ত্বেও একই দিন জেলা জজ আসামিদের জামিন দেন বলে গতকাল হাইকোর্টের শুনানিতে বলা হয়। এটিকে গতকাল ‘অস্বাভাবিক’ উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। জানা যায়, জমির দখল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলায় বিঘœ ঘটানোর অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে খোদেস্তা বেগম নামের একজন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘœকারী দ্রুতবিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন। মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতে গত ২১ মে আসামিরা দুপুর ১২টার দিকে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। সেদিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৯ আসামির জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদেশের কপি পাননি উল্লেখ করে সকাল ১০টার দিকে আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জামিনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হলফনামাসহ আবেদন করেন। একই দিন কক্সবাজারের দায়রা জজ ৯ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে খোদেস্তা বেগম হাইকোর্টে আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) করেন।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

প্রধান উপদেষ্টা হতাশ-ক্ষুব্ধ, ‘পদত্যাগ’ নিয়ে আলোচনা

আপনি ভুল করেননি, অপরাধ করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট

আপডেট সময় : ০২:৫৯:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক: কক্সবাজারের জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাঈলকে উদ্দেশে করে হাইকোর্ট বলেছেন, আপনি আদালতের আদেশ টেম্পারিং (ঘষামাজা করে পরিবর্তন) করেছেন। এতে আপনার বুক কাঁপল না? টেম্পারিং করে আপনি ভুল করেননি। জেনে বুঝে আপনি ক্রাইম (অপরাধ) করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেছেন। শুনানিতে জেলা জজ ইসমাইলের আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা বলেন, আমরা কনটেস্ট করতে চাই না। আমরা আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইছি। আমরা খুবই অনুতপ্ত। এ পর্যায়ে হাইকোর্ট জেলা জজকে ডায়াসের সামনে ডেকে আদেশ টেম্পারিংয়ের বিষয়ে জানতে চান। তখন জেলা জজ বিভিন্নভাবে ব্যাখ্যা দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে বলেন, ভুলে এটা হয়েছে। তখন আদালত বলেন, আপনি ভুল করেননি। আপনি জেনে বুঝে ক্রাইম করেছেন। এ সময় তার আইনজীবীরা আবারও ক্ষমা চাইলে হাইকোর্ট বলেন, আপনারা ক্ষমা চাইছেন। অনুতপ্ত হচ্ছেন। কিন্তু জেলা জজের মধ্যে তো কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি অনুতপ্তও নন। মন থেকে অনুশোচনা আসতে হয়। এরপর এ আদেশের জন্য আগামী ২৭ জুলাই দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে আইনশৃঙ্খলায় বিঘœ ঘটানোর অভিযোগে করা এক মামলায় আসামিদের জামিন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে আজ হাইকোর্টের এই বেঞ্চে হাজির হন মোহাম্মদ ইসমাইল। আজ আদালতে আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
ওই মামলায় কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন। এই আদেশ বাস্তবায়ন না হওয়া সত্ত্বেও একই দিন জেলা জজ আসামিদের জামিন দেন বলে গতকাল হাইকোর্টের শুনানিতে বলা হয়। এটিকে গতকাল ‘অস্বাভাবিক’ উল্লেখ করেন হাইকোর্ট। জানা যায়, জমির দখল নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আইনশৃঙ্খলায় বিঘœ ঘটানোর অভিযোগে ৯ জনের বিরুদ্ধে খোদেস্তা বেগম নামের একজন কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ ও আইনশৃঙ্খলা বিঘœকারী দ্রুতবিচার আদালতে নালিশি মামলা করেন। মামলায় আসামিরা হাইকোর্টে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন। গত ১১ এপ্রিল হাইকোর্ট তাদের ছয় সপ্তাহের মধ্যে কক্সবাজারের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট আদালতে গত ২১ মে আসামিরা দুপুর ১২টার দিকে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। সেদিন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ৯ আসামির জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগেই চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আদেশের কপি পাননি উল্লেখ করে সকাল ১০টার দিকে আদেশের বিরুদ্ধে আসামিরা জামিনের জন্য জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হলফনামাসহ আবেদন করেন। একই দিন কক্সবাজারের দায়রা জজ ৯ আসামির জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে খোদেস্তা বেগম হাইকোর্টে আবেদন (ফৌজদারি রিভিশন) করেন।