বিনোদন প্রতিবেদক: ‘৩৬শে জুলাই’ শিরোনামের সিনেমাটি বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পরিচালক রাশেদ শামীম স্যাম। গত বুধবার পরিচালক সমিতিতে সিনেমাটির নিবন্ধন সেরেছেন বলে জানিয়েছেন এই নির্মাতা। স্যাম বলেন, “সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র আন্দোলনের শুরুর দিন থেকে শেষে দিন পর্যন্ত যা যা ঘটেছে সেটাকেই আমরা নাট্যরূপ দিয়ে সিনেমাটি নির্মাণ করতে চাই। চিত্রনাট্য শুরু করেছি।” সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবি নিয়ে শিক্ষার্থী-চাকরি প্রত্যাশীদের আন্দোলনের শুরুটা হয়েছে জুলাইয়ের এক তারিখ থেকে। এর পর মাসের মাঝামাঝিতে সেই আন্দোলন রূপ নেয় সহিংসতায়, তাতে প্রাণ যায় শিক্ষার্থীসহ বহু মানুষের। জুলাই শেষে অগাস্ট মাস শুরু হলেও, নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অগাস্টের দিনগুলোকেও জুলাই হিসেবে গণনা করছিলেন আন্দোলনকারীরা। তাদের সেই আন্দোলন সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে পরিণত হয়। তাদের বক্তব্য ছিল, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত জুলাই শেষ হবে না। সেদিক থেকে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর ওই দিনটিকে আন্দোলনের শেষ দিন ধরেছেন আন্দোনকারীরা। তাই আন্দোলনের হিসেবে জুলাইকে আন্দোলনকারীরা ধরে নিচ্ছেন ৩৬ দিনের। পরিচালক স্যাম বলেন, আন্দোলনের সময়ই সিনেমাটি নির্মাণের চিন্তা তার মাথায় আসে। আন্দোলনের কিছু ভিডিও সংগ্রহ করে রেখেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, “ড্রোনে কিছু কিছু ভিডিও নিয়ে রেখেছি। আমার মনে হয়েছিল এই আন্দোলন বড় কিছু হতে পারে। হাতিরঝিল, শাহবাগ, শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে ক্যামেরা এবং ড্রোন শট নিয়েছি। সিনেমায় মানুষের এই জমায়েত ভালো করে দেখানোর চেষ্টা করব।”
চিত্রনাট্য নিয়ে স্যাম বলেন, “জুলাই মাসে আন্দোলন ঘিরে ঘটে যাওয়া অমানবিক সব ঘটনা এখানে উঠে আসবে। গুলিতে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা, তার ভালোবাসার গল্প, একটি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন, একজন মা তার সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে তাকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখে সেইসব ইমোশনাল টাচ থাকবে এই সিনেমায়। আমি গল্পটা খুলনা থেকে শুরু করে ঢাকা পর্যন্ত তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করছি গল্পটা মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে।” অভিনয়শিল্পী এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে আন্দোলনের সময় যে শিল্পীরা মাঠে ছিলেন, তাদের এ সিনেমায় যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দেওয়ার কথা ভাবছেন স্যাম। “আমি অনেক অভিনয়শিল্পী ভেবে রেখেছি, কিন্তু যেহেতু চিত্রনাট্য সম্পন্ন হয়নি তাই এখনো কারো সঙ্গে কথা বলিনি। যেমন আজমেরী হোক বাঁধন, কাজী নওশাবা, খায়রুল বাসার, আরশ খান তাদের কাছে চিত্রনাট্য নিয়ে যাব, তারা আন্দোলনে ছিলেন। ব্যাটে বলে মিলে গেলে তাদেরকে চূড়ান্ত করা হবে।” পরিচালক স্যামের তৃতীয় সিনেমা এটি। এর আগে ২০১৮ সালের দিকে তিনি নির্মাণ করেছেন মুক্তিযুদ্ধের সিনেমা ‘পোস্টমাস্টার ৭১’। পরের কাজটি শিশুতোষ গল্পের সিনেমা, নাম ছিল ‘পরী’। এছাড়া চ্যানেল আইয়ের প্রযোজনায় অনেক নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মাণ করে পরিচিতি তৈরি করেছেন স্যাম।