ঢাকা ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

আন্দোলনে স্থবির রাজধানী

  • আপডেট সময় : ০৯:২৪:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

বুধবার ইশরাক হোসেন সমর্থকদের ‘লংমার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচির কারণে দুপুরে পল্টন, শাহবাগ, বিজয় সরণিসহ আশেপাশের কয়েকটি সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় -ছবি সংগৃহীত

প্রত্যাশা ডেস্ক: প্রায় সপ্তাহখঅনেক ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথের দাবিতে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছেন ইশরাকপন্থি নেতাকর্মীরা। এতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র শাহবাগ ও মৎসভবন থেকে চলাচলকারী রাজধানীর অন্যান্য সড়ক। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মমুখী ও গন্তব্যগামী সাধারণ মানুষ।

বুধবার (২১ মে) দুপুরে পল্টন, শাহবাগ, বিজয় সরণিসহ আশেপাশের কয়েকটি সড়ক ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। এদিন বেলা ১১টায় এ অবরোধ করেন তারা। এর আগে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবনের আশেপাশে জড়ো হতে থাকেন ইশরাকপন্থি নেতাকর্মীরা। দুপুরে দেখা গেছে, পল্টন থেকে শুরু করে শাহবাগমুখী এবং মৎস ভবন থেকে শাহবাগ, পল্টন- গুলিস্তানমুখী সম্পূর্ণ সড়কে বন্ধ ছিল যান চলাচল। গণপরিবহনের চালকরা যানবাহন বন্ধ করে বসে ছিলেন। অধিকাংশ গাড়ি থেকে যাত্রীরা নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

মৎস ভবন ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইশরাকের শপথের দাবিতে খণ্ড থণ্ড মিছিল আসার কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজট লেগে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে যান। কোনো কোনো গণপরিবহন আবার যাত্রী নামিয়ে দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যায়।

সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণে বিক্ষোভ: এদিকে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ঈদ-উল আযহার পূর্বেই ১০০ শতাংশ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়াসহ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে লংমার্চ টু সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে যাবার সময় পুলিশের বাধায় পড়েন শিক্ষকরা। বুধবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষকের একটি বিশাল মিছিল সচিবালয়ের দিকে রওনা হয়। সেসময় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয়ের মধ্যবর্তী সড়কেই তাদের পথ আটকে দেয় পুলিশ।

এ সময় শিক্ষকরা ব্যারিকেড সরানোর চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো বেশিসংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষকদের ঘিরে ফেলেন।

হাতে থাকা মাইক দিয়ে শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজন পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে শান্ত স্বরে বলেন, দয়া করে আমাদের মারবেন না। আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে সচিবালয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনে আপনারা আমাদের দাবিগুলো শুনুন। যদি মনে করেন আমাদের দাবি অযৌক্তিক, আমরা ফিরে যাব। তবুও আমাদের গায়ে হাত তুলবেন না। এর আগে শিক্ষকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, আজ যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। যদি এমন হয়, তবে তা ভালো হবে না।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ শিক্ষকদের এলাকা ছাড়তে বললেও, শিক্ষকদের যুক্তিসংগত বক্তব্য শুনে তাদের কঠোরতা কিছুটা কমে আসে। তবে, ব্যারিকেড ধরে দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষকের সচিবালয় অভিমুখে যেতে বাধা দেয় পুলিশ এবং তাদের দাবি শুনতে থাকে। শিক্ষকরাও ব্যারিকেডের ওপাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের দাবি আদায়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিশ মিনিট ধরে শিক্ষকরা ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষকদের প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে সরিয়ে দেয়। সেখানেও শিক্ষকরা স্লোগান অব্যাহত রাখেন। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে সচিবালয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এই আন্দোলনের প্রভাবেও সৃষ্টি হয় যানজট ও জনভোগান্তি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ সমাবেশ: একইদিন নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। অনতিবিলম্বে ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তাদের। এছাড়া বিএনপিপন্থি আখ্যা দিয়ে আইন, অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টার পদত্যাগে বাধ্য করানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। বুধবার (২১ মে) দুপুরে এনসিপি ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানান তারা। এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য আল আমিন টুটুল বলেন, জনভোগান্তির আন্দোলন করে জনগণকে পাশে পাবেন না। এক দল চলে গেছে, আরেক দল খাওয়ার অপেক্ষায়। আমরা চাই স্থানীয় নির্বাচন, যাতে সবাই নাগরিক সুবিধা পায়।
বেলা সাড়ে ১১টায় সমাবেশ শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর ২টায়। এর আগে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নির্বাচন ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা। তবে দুপুর দেড়টায় পুলিশ বেস্টনি অতিক্রম করে মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় মৃদু উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এরপরই কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হন। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ছাড়াও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব সরোয়ার তুষারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

যা বলছেন সাধারণ মানুষ ও পরিবহন শ্রমিকরা: পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, প্রতিদিন এমন সড়ক অবরোধের কারণে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। কাজে এলেও দিন শেষে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ফলে গাড়ির মালিককে খরচের টাকা দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গুলিস্থান থেকে মিরপুরগামী মবিনুল ইসলাম বলেন, ‘এক ঘণ্টার ওপরে একই স্থানে গাড়িতেই বসে আছি। গাড়ির চাকা ঘুরছেই না। এত যানজট যে নেমে হেঁটে সামনে গিয়ে গাড়িতে উঠবো সে উপায়ও নেই। পুরা রোড বন্ধ, কোনো গাড়িই যাতায়াত করতে পারছে না।’
শাহবাগ থেকে পায়ে হেঁটে পল্টনের দিকে যাচ্ছেন মো. রশিদ। তিনি বলেন, ‘প্রতিটা দিন আন্দোলন আর সড়ক অবরোধ ভালো লাগে না। এভাবে কী রাস্তায় চলাচল করা যায়? যেদিনই আন্দোলন হয় সেদিনই ঠিক টাইমে অফিসে যেতে পারি না। এভাবে প্রত্যেক দিন যদি আন্দোলন আর রাস্তা বন্ধ করা হয় তাহলে আমরা কীভাবে চাকরি করবো?’

মৎস ভবন মোড়ে যানজটে আটকে আছেন বাসচালক তানভীর হাসিব। তিনি বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা ধরে গাড়ি নিয়ে আটকে আছি। সকাল থেকে মাত্র একটা ভাড়া মারতে পেরেছি। তারপর থেকেই যানজটে আটকা। আজ খালি হাতেই ফিরতে হবে। এভাবে গাড়ি বন্ধ করে কতক্ষণ বসে থাকবো?’
রমজান পরিবহনের হেলপার আজিজ মিয়া বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ করে প্রতিদিনই আন্দোলন করছে। আমরা কোথায় যাবো, আমাদের দোষ কী? আমাদের গাড়ি চালাতে দেন। সারাদিন এভাবে আটকে থেকে দিন শেষে মালিককে দেওয়ার টাকা হয় না। আমাদেরও তো পরিবার আছে। আমরা কীভাবে চলবো।’

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আন্দোলনে স্থবির রাজধানী

আপডেট সময় : ০৯:২৪:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

প্রত্যাশা ডেস্ক: প্রায় সপ্তাহখঅনেক ধরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনের শপথের দাবিতে রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড় অবরোধ করে আন্দোলন করছেন ইশরাকপন্থি নেতাকর্মীরা। এতে অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র শাহবাগ ও মৎসভবন থেকে চলাচলকারী রাজধানীর অন্যান্য সড়ক। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মমুখী ও গন্তব্যগামী সাধারণ মানুষ।

বুধবার (২১ মে) দুপুরে পল্টন, শাহবাগ, বিজয় সরণিসহ আশেপাশের কয়েকটি সড়ক ঘুরেও একই চিত্র দেখা গেছে। এদিন বেলা ১১টায় এ অবরোধ করেন তারা। এর আগে সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মৎস্য ভবনের আশেপাশে জড়ো হতে থাকেন ইশরাকপন্থি নেতাকর্মীরা। দুপুরে দেখা গেছে, পল্টন থেকে শুরু করে শাহবাগমুখী এবং মৎস ভবন থেকে শাহবাগ, পল্টন- গুলিস্তানমুখী সম্পূর্ণ সড়কে বন্ধ ছিল যান চলাচল। গণপরিবহনের চালকরা যানবাহন বন্ধ করে বসে ছিলেন। অধিকাংশ গাড়ি থেকে যাত্রীরা নেমে পায়ে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন।

মৎস ভবন ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইশরাকের শপথের দাবিতে খণ্ড থণ্ড মিছিল আসার কারণে সড়কে দীর্ঘ যানজট লেগে যাওয়ায় অনেকেই বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে যান। কোনো কোনো গণপরিবহন আবার যাত্রী নামিয়ে দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে চলে যায়।

সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণে বিক্ষোভ: এদিকে শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাজমান সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ঈদ-উল আযহার পূর্বেই ১০০ শতাংশ উৎসব ভাতা, পূর্ণাঙ্গ বাড়ি ভাড়াসহ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে লংমার্চ টু সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচিতে যাবার সময় পুলিশের বাধায় পড়েন শিক্ষকরা। বুধবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষকের একটি বিশাল মিছিল সচিবালয়ের দিকে রওনা হয়। সেসময় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয়ের মধ্যবর্তী সড়কেই তাদের পথ আটকে দেয় পুলিশ।

এ সময় শিক্ষকরা ব্যারিকেড সরানোর চেষ্টা করলে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো বেশিসংখ্যক পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষকদের ঘিরে ফেলেন।

হাতে থাকা মাইক দিয়ে শিক্ষকদের মধ্য থেকে একজন পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে শান্ত স্বরে বলেন, দয়া করে আমাদের মারবেন না। আমরা ন্যায্য দাবি নিয়ে সচিবালয়ে যাচ্ছি। প্রয়োজনে আপনারা আমাদের দাবিগুলো শুনুন। যদি মনে করেন আমাদের দাবি অযৌক্তিক, আমরা ফিরে যাব। তবুও আমাদের গায়ে হাত তুলবেন না। এর আগে শিক্ষকদের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, আজ যেন তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। যদি এমন হয়, তবে তা ভালো হবে না।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ শিক্ষকদের এলাকা ছাড়তে বললেও, শিক্ষকদের যুক্তিসংগত বক্তব্য শুনে তাদের কঠোরতা কিছুটা কমে আসে। তবে, ব্যারিকেড ধরে দাঁড়িয়ে থেকে শিক্ষকের সচিবালয় অভিমুখে যেতে বাধা দেয় পুলিশ এবং তাদের দাবি শুনতে থাকে। শিক্ষকরাও ব্যারিকেডের ওপাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের দাবি আদায়ে স্লোগান দিতে থাকেন। বিশ মিনিট ধরে শিক্ষকরা ব্যারিকেডের সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ শিক্ষকদের প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে সরিয়ে দেয়। সেখানেও শিক্ষকরা স্লোগান অব্যাহত রাখেন। এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে কয়েকজন শিক্ষক প্রতিনিধিকে সচিবালয়ের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। এই আন্দোলনের প্রভাবেও সৃষ্টি হয় যানজট ও জনভোগান্তি।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বিক্ষোভ সমাবেশ: একইদিন নির্বাচন কমিশনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)। অনতিবিলম্বে ইসি পুনর্গঠন ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি তাদের। এছাড়া বিএনপিপন্থি আখ্যা দিয়ে আইন, অর্থ ও পরিকল্পনা উপদেষ্টার পদত্যাগে বাধ্য করানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মুখ্য সংগঠক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী। বুধবার (২১ মে) দুপুরে এনসিপি ঢাকা মহানগর আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এসব দাবি জানান তারা। এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য আল আমিন টুটুল বলেন, জনভোগান্তির আন্দোলন করে জনগণকে পাশে পাবেন না। এক দল চলে গেছে, আরেক দল খাওয়ার অপেক্ষায়। আমরা চাই স্থানীয় নির্বাচন, যাতে সবাই নাগরিক সুবিধা পায়।
বেলা সাড়ে ১১টায় সমাবেশ শুরু হয়ে শেষ হয় দুপুর ২টায়। এর আগে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নির্বাচন ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন নেতাকর্মীরা। তবে দুপুর দেড়টায় পুলিশ বেস্টনি অতিক্রম করে মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন তারা। এ সময় মৃদু উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এরপরই কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হন। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ছাড়াও কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব সরোয়ার তুষারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

যা বলছেন সাধারণ মানুষ ও পরিবহন শ্রমিকরা: পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, প্রতিদিন এমন সড়ক অবরোধের কারণে তারা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছেন। কাজে এলেও দিন শেষে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ফলে গাড়ির মালিককে খরচের টাকা দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ব্যক্তিগত প্রয়োজনে গুলিস্থান থেকে মিরপুরগামী মবিনুল ইসলাম বলেন, ‘এক ঘণ্টার ওপরে একই স্থানে গাড়িতেই বসে আছি। গাড়ির চাকা ঘুরছেই না। এত যানজট যে নেমে হেঁটে সামনে গিয়ে গাড়িতে উঠবো সে উপায়ও নেই। পুরা রোড বন্ধ, কোনো গাড়িই যাতায়াত করতে পারছে না।’
শাহবাগ থেকে পায়ে হেঁটে পল্টনের দিকে যাচ্ছেন মো. রশিদ। তিনি বলেন, ‘প্রতিটা দিন আন্দোলন আর সড়ক অবরোধ ভালো লাগে না। এভাবে কী রাস্তায় চলাচল করা যায়? যেদিনই আন্দোলন হয় সেদিনই ঠিক টাইমে অফিসে যেতে পারি না। এভাবে প্রত্যেক দিন যদি আন্দোলন আর রাস্তা বন্ধ করা হয় তাহলে আমরা কীভাবে চাকরি করবো?’

মৎস ভবন মোড়ে যানজটে আটকে আছেন বাসচালক তানভীর হাসিব। তিনি বলেন, ‘কয়েক ঘণ্টা ধরে গাড়ি নিয়ে আটকে আছি। সকাল থেকে মাত্র একটা ভাড়া মারতে পেরেছি। তারপর থেকেই যানজটে আটকা। আজ খালি হাতেই ফিরতে হবে। এভাবে গাড়ি বন্ধ করে কতক্ষণ বসে থাকবো?’
রমজান পরিবহনের হেলপার আজিজ মিয়া বলেন, ‘রাস্তা বন্ধ করে প্রতিদিনই আন্দোলন করছে। আমরা কোথায় যাবো, আমাদের দোষ কী? আমাদের গাড়ি চালাতে দেন। সারাদিন এভাবে আটকে থেকে দিন শেষে মালিককে দেওয়ার টাকা হয় না। আমাদেরও তো পরিবার আছে। আমরা কীভাবে চলবো।’