নিজস্ব প্রতিবেদক: বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থান নেন পোশাকশ্রমিকেরা। এ সময় বৃষ্টি শুরু হলেও ভিজেই দাবি আদায়ে বিক্ষোভ করেছেন তারা।
এদিকে বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের পক্ষ থেকে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যান।
মঙ্গলবার (২০ মে) বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থানরত শ্রমিকদের মধ্যে থেকে আট সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনে প্রবেশ করেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন- এনসিপি শ্রমিক উইংয়ের প্রধান সমন্বয়কারী মাজহারুল ইসলাম, যুগ্ম সমন্বয়কারী শাহ আলম, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভানেত্রী তাসলিমা আখতার, শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম, শ্রমিক শাহিনসহ মোট আটজন।
জানা গেছে, শ্রমিকদের দীর্ঘদিনের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের দাবিতে চূড়ান্ত আলোচনার উদ্দেশ্যে তারা যমুনায় গেছেন। সেখান থেকে তাদের সমাধান পেলে তারা আন্দোলন শেষ করবেন। এছাড়া আন্দোলনে অনড় থাকবেন।
এর আগে, দুপুর আড়াইটার দিকে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির আওতায় জাতীয় শ্রম ভবনের সামনে থেকে কয়েক শতাধিক শ্রমিক মিছিল নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবনের উদ্দেশে যাত্রা করেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে পুলিশের ব্যারিকেডে আটকে গেলে তারা কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও শ্রমিকরা আন্দোলন চালিয়ে যান। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পর তারা আরো শক্তভাবে বিক্ষোভে অংশ নেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। বিকেল ৩টা নাগাদ মিছিল নিয়ে কাকরাইল মোড়ে এসে উপস্থিত হন আন্দোলনকারীরা। এসময় ১৮ মাস আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া ডার্ড গ্রুপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি মোতাবেক শ্রমিক-কর্মচারীদের সব পাওনা পরিশোধের দাবি জানান তারা। আন্দোলন শুরুর কিছু সময় পরই বৃষ্টি শুরু হলেও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনমুখী কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা। এসময় আজকের মধ্যেই বেতন পরিশোধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেতনের দাবিতে ব্যানার হাতে স্লোগান দিতে দিতে পল্টনের দিক থেকে যমুনার উদ্দেশে এগিয়ে আসেন আন্দোলনকারী শ্রমিকরা। কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এরপর আন্দোলনকারীরা কাকরাইল মোড় অবরোধ করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় বৃষ্টি। পরে বৃষ্টিতে ভিজেই বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তারা।
এসময় ‘বেতন চাই, বোনাস চাই-চূড়ান্ত হিসাব আজই চাই’, ‘১৮ মাসের ঘাম কোথায়? টিএনজেড জবাব চাই!’, ‘মেহনতি মানুষের ঘাম বৃথা যেতে পারে না’, ‘যেখানে বেতন নেই, সেখানে শান্তি নেই!’, ‘আমরা চাই না দয়া, চাই ন্যায্য পাওনা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
এদিকে বৃষ্টির সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সাময়িকভাবে কিছুটা পেছনে সরে গেলেও পরে আবার বৃষ্টির পরই আগের অবস্থানে ফিরে আসেন। জানতে চাইলে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ঘিরে কাকরাইল ও আশপাশে যে কোনো ধরনের আন্দোলন ও মিছিল নিষিদ্ধ। তবে তারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছে, তাই আপাতত কোনো সমস্যা নেই। যদি কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে কিংবা পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে, তাহলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।