নিজস্ব প্রতিবেদক : আন্দোলনকারীদের বাসা থেকে ধরে এনে গুম-খুন করতে সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন আইনজীবী।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার অ্যাডিশনাল চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ছানাউল্ল্যাহর আদালতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সময় রাজধানীর আদাবর থানার গার্মেন্টস কর্মী রুবেল হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে একথা বলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী। এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক আব্দুল মালেক এ আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করে। ওমর ফারুকও রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, ফরহাদ হোসেনকে আগে রাজনীতিতে দেখিনি, নাম শুনিনি। হাসিনা সরকারের অবৈধ এমপি, পরে মন্ত্রী হন। জেনেছি টাকা দিয়ে মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রী। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় জঘন্য কাজ করেছেন। ১ দিন, ২ দিন, তিন দিন এভাবে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন। কারণ স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলে আন্দোলনকারীরা বাসায় থাকবে। বাসা থেকে ধরে এনে গুম, হত্যা করতে পারে। তিনি বলেন, এই ফরহাদ হোসেন ডিসি, ইউএনও-দের নির্দেশ দেন আন্দোলনকারীদের ঠিকানা খুঁজে বের করতে। আন্দোলন দমাতে কঠোর নির্দেশ দেন। হত্যা, গণহত্যারও নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচার বানানোর পিছে এদের ভূমিকা রয়েছে। ক্ষমতা, মন্ত্রিত্বের লোভ, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করতে হাসিনাকে তারা স্বৈরাচার বানিয়েছে। আর যেন স্বৈরাচার ফিরে না আসে। গণতান্ত্রিক আবহাওয়ায় মানুষ যেন বাস করতে পারে। তিনি আরও বলেন, তাদের ঘরে কি সন্তান নাই? গুলি করতে বুক, হাত কাঁপলো না। এদের উসকানি, নির্দেশ ছিলো গুলি করার। এদের জনগণের আদালতে, জনগণের সামনে বিচার করা উচিত। এতো অপকর্ম করেও এরা হাসে। ৭০০ জনকে গুলি করে হত্যা করে। আন্দোলনকারীদের দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেয়। তারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়েছে। উল্লেখযোগ্য যেসব আসামিরা শাস্তির আওতায় আসবে তাদের মধ্যে ফরহাদ হোসেন একজন। আরও আছেন আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান, আসাদুজ্জামান খান কামাল, জুনায়েদ আহমেদ পলক। তার রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি। ফরহাদ হোসেনের পক্ষে জসীম উদ্দিন সরকার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, ফরহাদ হোসেন স্বনামধন্য সিটি কলেজের প্রফেসর। সুনামের সাথে, দক্ষতার সাথে মন্ত্রণালয় চালিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। ঘটনাস্থল থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি। ঘটনার অনেকদিন পরে মামলা। তিনি প্রতিহিংসার শিকার। রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের প্রার্থনা করছি। শুনানি শেষে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। রিমান্ড শুনানিকালে হাস্যোজ্জ্বল ছিলেন ফরহাদ হোসেন। শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে ফরহাদ হোসেনকে আটক করে র্যাব। পরে তাকে আদাবর থানায় হস্তান্তর করা হয়।