ঢাকা ০৯:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রথম ভারতীয় শুভাংশু শুক্লা

  • আপডেট সময় : ০৫:১৯:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫
  • ২ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক: প্রথম ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস-এ পা রেখে ইতিহাস গড়েছেন নভোচারী শুভাংশু শুক্লা। সরাসরি এক টেলিভিশন সম্প্রচারে দেখা গিয়েছে, ‘এক্সিয়ম-৪’ মিশনটি মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে সফলভাবে ডকিং বা যুক্ত হয়েছে। এরপর আইএসএসের ভেতরে প্রবেশ করেছেন ওই মিশনে থাকা চারজন নভোচারী।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সাবেক নভোচারী পেগি হুইটসনের নেতৃত্বে ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লার পরিচালনায় ‘এক্সিয়ম-৪’ মিশনটি মহাকাশে উৎক্ষেপিত হয়েছে বুধবার। এ মিশনের অন্য সদস্যরা হলেন– পোল্যান্ডের স্লাওসজ উজনানস্কি-উইসনিয়েস্কি ও হাঙ্গেরির তিবোর কাপু। গবেষণা ও অন্যান্য কাজের জন্য সেখানে দুই সপ্তাহ কাটাবেন তারা।

মিশনের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা হলেন মহাকাশে যাওয়া দ্বিতীয় ভারতীয়। ১৯৮৪ সালের পরে এবারই প্রথম কোনো ভারতীয় আবার মহাকাশে গেলেন। এর আগে ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে রুশ সয়ুজ মহাকাশযানে করে মহাকাশে গিয়েছিলেন নভোচারী রাকেশ শর্মা। ‘এক্সিয়ম-৪’ হচ্ছে এক বাণিজ্যিক মহাকাশযাত্রা, যেটি পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনভিত্তিক ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানি ‘এক্সিয়ম স্পেস’। বুধবার ভারতীয় সময় দুপুর ১২টা ১ মিনিটে ফ্লোরিডায় অবস্থিত নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে মহাকাশযানটি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ভারতীয় সময় বিকাল ৪টায় মহাকাশযানটি আইএসএসের সঙ্গে সফলভাবে ডকিং করেছে। এরপর মহাকাশযান ও মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে নিরাপদ সংযোগ তৈরি হলে উভয় পাশের দরজা খুলে যায় এবং আইএসএসের ভেতরে প্রবেশ করেন মহাকাশচারীরা।

এ মিশনের চারজন যোগ দেওয়ায় এখন আইএসএসে থাকা নভোচারীর সংখ্যা ১১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি। যৌথ উদ্যোগের এ মিশনটিতে অংশ নিয়েছে নাসা, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’, ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইএসএ’ ও ইলন মাস্কের মহাকাশ কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’। এ মিশনের মাধ্যমে চার দশকেরও বেশি সময় পরে আবার নিজেদের দেশের হয়ে মহাকাশে গেলেন ইউরোপের দুই নভোচারী। দুই সপ্তাহের এ মিশনে মূলত ৬০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন নভোচারীরা। যার মধ্যে সাতটি পরীক্ষার নকশা তৈরি করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লার জন্য এ মিশনে একটি আসন ও তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পাঁচশ কোটি রুপি খরচ করেছে ইসরো। সংস্থাটি বলেছে, আইএসএসে অবস্থানের সময় শুক্লার হাতে-কলমে যে অভিজ্ঞতা তবে তা দেশটির ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনে খুবই কাজে লাগবে। ইসরো বলেছে, ২০২৭ সালে প্রথমবারের মতো মহাকাশে নভোচারী পাঠাতে চায় তারা। পাশাপাশি ২০৩৫ সালের মধ্যে একটি নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি ও ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে একজন মহাকাশচারী পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।

কী অসাধাারণ এক যাত্রা! বৃহস্পতিবার সকালে নভোচারীদের সঙ্গে লাইভে কথা বলেছে এক্সিয়ম স্পেস কোম্পানিটি, যেখানে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা মহাকাশে নিজের প্রথম ২৪ ঘণ্টার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বলেন, কি অসাধারণ অভিজ্ঞতা! মহাকাশে কেবল ভেসে থাকার বিষয়টি অসাধারণ এক অনুভূতি একইসঙ্গে-মজার সময়ও পার করেছি। শুক্লা হেসে আরো বলেন, ‘আমরা যখন মহাকাশের শূন্যে ভাসছিলাম তখন আমার ভালো বোধ হচ্ছিল না। তবে আমাকে বলা হয়েছে, আমি না কি অনেক ঘুমিয়েছি, যা একটি ভালো লক্ষণ। আমি মহাকাশের এ দৃশ্য, এ অভিজ্ঞতা উপভোগ করেছি এবং আবার নতুন করে সবকিছু শিখছি। ঠিক যেমন একটি শিশু হাঁটতে, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে, খেতে ও পড়তে শেখে তেমন।’

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে প্রথম ভারতীয় শুভাংশু শুক্লা

আপডেট সময় : ০৫:১৯:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫

প্রযুক্তি ডেস্ক: প্রথম ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস-এ পা রেখে ইতিহাস গড়েছেন নভোচারী শুভাংশু শুক্লা। সরাসরি এক টেলিভিশন সম্প্রচারে দেখা গিয়েছে, ‘এক্সিয়ম-৪’ মিশনটি মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে সফলভাবে ডকিং বা যুক্ত হয়েছে। এরপর আইএসএসের ভেতরে প্রবেশ করেছেন ওই মিশনে থাকা চারজন নভোচারী।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সাবেক নভোচারী পেগি হুইটসনের নেতৃত্বে ও গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লার পরিচালনায় ‘এক্সিয়ম-৪’ মিশনটি মহাকাশে উৎক্ষেপিত হয়েছে বুধবার। এ মিশনের অন্য সদস্যরা হলেন– পোল্যান্ডের স্লাওসজ উজনানস্কি-উইসনিয়েস্কি ও হাঙ্গেরির তিবোর কাপু। গবেষণা ও অন্যান্য কাজের জন্য সেখানে দুই সপ্তাহ কাটাবেন তারা।

মিশনের গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা হলেন মহাকাশে যাওয়া দ্বিতীয় ভারতীয়। ১৯৮৪ সালের পরে এবারই প্রথম কোনো ভারতীয় আবার মহাকাশে গেলেন। এর আগে ১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় হিসেবে রুশ সয়ুজ মহাকাশযানে করে মহাকাশে গিয়েছিলেন নভোচারী রাকেশ শর্মা। ‘এক্সিয়ম-৪’ হচ্ছে এক বাণিজ্যিক মহাকাশযাত্রা, যেটি পরিচালনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনভিত্তিক ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানি ‘এক্সিয়ম স্পেস’। বুধবার ভারতীয় সময় দুপুর ১২টা ১ মিনিটে ফ্লোরিডায় অবস্থিত নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে যাত্রা শুরু করে মহাকাশযানটি।

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ভারতীয় সময় বিকাল ৪টায় মহাকাশযানটি আইএসএসের সঙ্গে সফলভাবে ডকিং করেছে। এরপর মহাকাশযান ও মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে নিরাপদ সংযোগ তৈরি হলে উভয় পাশের দরজা খুলে যায় এবং আইএসএসের ভেতরে প্রবেশ করেন মহাকাশচারীরা।

এ মিশনের চারজন যোগ দেওয়ায় এখন আইএসএসে থাকা নভোচারীর সংখ্যা ১১ জনে দাঁড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিবিসি। যৌথ উদ্যোগের এ মিশনটিতে অংশ নিয়েছে নাসা, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’, ইউরোপের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইএসএ’ ও ইলন মাস্কের মহাকাশ কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’। এ মিশনের মাধ্যমে চার দশকেরও বেশি সময় পরে আবার নিজেদের দেশের হয়ে মহাকাশে গেলেন ইউরোপের দুই নভোচারী। দুই সপ্তাহের এ মিশনে মূলত ৬০টি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাবেন নভোচারীরা। যার মধ্যে সাতটি পরীক্ষার নকশা তৈরি করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লার জন্য এ মিশনে একটি আসন ও তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য পাঁচশ কোটি রুপি খরচ করেছে ইসরো। সংস্থাটি বলেছে, আইএসএসে অবস্থানের সময় শুক্লার হাতে-কলমে যে অভিজ্ঞতা তবে তা দেশটির ভবিষ্যতের মহাকাশ মিশনে খুবই কাজে লাগবে। ইসরো বলেছে, ২০২৭ সালে প্রথমবারের মতো মহাকাশে নভোচারী পাঠাতে চায় তারা। পাশাপাশি ২০৩৫ সালের মধ্যে একটি নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি ও ২০৪০ সালের মধ্যে চাঁদে একজন মহাকাশচারী পাঠানোরও পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থাটির।

কী অসাধাারণ এক যাত্রা! বৃহস্পতিবার সকালে নভোচারীদের সঙ্গে লাইভে কথা বলেছে এক্সিয়ম স্পেস কোম্পানিটি, যেখানে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা মহাকাশে নিজের প্রথম ২৪ ঘণ্টার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলেছেন। তিনি বলেন, কি অসাধারণ অভিজ্ঞতা! মহাকাশে কেবল ভেসে থাকার বিষয়টি অসাধারণ এক অনুভূতি একইসঙ্গে-মজার সময়ও পার করেছি। শুক্লা হেসে আরো বলেন, ‘আমরা যখন মহাকাশের শূন্যে ভাসছিলাম তখন আমার ভালো বোধ হচ্ছিল না। তবে আমাকে বলা হয়েছে, আমি না কি অনেক ঘুমিয়েছি, যা একটি ভালো লক্ষণ। আমি মহাকাশের এ দৃশ্য, এ অভিজ্ঞতা উপভোগ করেছি এবং আবার নতুন করে সবকিছু শিখছি। ঠিক যেমন একটি শিশু হাঁটতে, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে, খেতে ও পড়তে শেখে তেমন।’