ঢাকা ০২:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫

আনন্দময় হোক শিশুর ভুবন

  • আপডেট সময় : ১১:০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪
  • ১৫০ বার পড়া হয়েছে

শিশুশ্রম এক বিশাল বৈশ্বিক সমস্যা যা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিশেষভাবে প্রকট। ২০২১ সালের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬০ মিলিয়ন শিশু শ্রমিক রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই অমানবিক পরিশ্রমের শিকার। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। অভাবের তাড়নায় এই শিশুরা কারখানায়, কৃষি খামারে, গৃহস্থালী কাজে, এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পেও কাজ করতে বাধ্য হয়।
প্রত্যেক শিশুরই অধিকার আছে পড়াশোনা এবং খেলাধুলার মাধ্যমে শৈশব কাটানোর। শিক্ষা শিশুদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে, স্বনির্ভর ও স্বাধীন ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক হয়। অন্যদিকে খেলাধুলা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে অপরিহার্য। খেলাধুলা শিশুদের সৃজনশীলতা, সামাজিকতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি বৃদ্ধি করে। শিশুশ্রমে আবদ্ধ শিশুদের এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, যা তাদের পুরো জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
শিশুশ্রম প্রতিরোধে সরকারি পর্যায়ে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি। এছাড়াও সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারণা চালানো উচিত। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে শিশুশ্রমের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানাতে হবে। বিশেষ করে পরিবারকে তাদের সন্তানদের শিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। আমাদের দেশে, অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে অনেক পরিবার শিশুদের কাজে পাঠায়। এক্ষেত্রে সরকার ও এনজিওগুলোকে দরিদ্র পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো উচিত। বিশ্বের অনেক দেশেই শিশুশ্রম প্রতিরোধে সফল উদাহরণ দেখা যায়। আমাদের দেশও এক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, এনজিও সংস্থা ঘাসফুল ব্র্যাক ও সরকারি সহায়তায় মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে। এই উদ্যোগটির ফলে জেনেভা ক্যাম্পের পরিবারের মাঝে শিশুদের পড়াশোনা করানোর হার কিছুটা হলেও বেড়েছে। এভাবে ছোটখাটো উদ্যোগের পাশাপাশি শিশুশ্রম প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। প্রতিটি শিশুকে তার প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। শিক্ষা ও খেলার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাইলেই একত্রিত হয়ে শিশুদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারি। বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আমাদের সবার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। এটি আমাদের শিশুদের প্রতি দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের সুরক্ষা, শিক্ষা এবং সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাই আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি, যাতে প্রতিটি শিশু তার শৈশব কাটাতে পারে পড়াশোনা ও খেলার ছলে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আনন্দময় হোক শিশুর ভুবন

আপডেট সময় : ১১:০৮:০৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪

শিশুশ্রম এক বিশাল বৈশ্বিক সমস্যা যা উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিশেষভাবে প্রকট। ২০২১ সালের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৬০ মিলিয়ন শিশু শ্রমিক রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই অমানবিক পরিশ্রমের শিকার। এতে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। অভাবের তাড়নায় এই শিশুরা কারখানায়, কৃষি খামারে, গৃহস্থালী কাজে, এমনকি ঝুঁকিপূর্ণ শিল্পেও কাজ করতে বাধ্য হয়।
প্রত্যেক শিশুরই অধিকার আছে পড়াশোনা এবং খেলাধুলার মাধ্যমে শৈশব কাটানোর। শিক্ষা শিশুদের মেধা ও প্রতিভার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে, স্বনির্ভর ও স্বাধীন ব্যক্তিত্ব গঠনে সহায়ক হয়। অন্যদিকে খেলাধুলা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে অপরিহার্য। খেলাধুলা শিশুদের সৃজনশীলতা, সামাজিকতা ও নেতৃত্বের গুণাবলি বৃদ্ধি করে। শিশুশ্রমে আবদ্ধ শিশুদের এই মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়, যা তাদের পুরো জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
শিশুশ্রম প্রতিরোধে সরকারি পর্যায়ে কঠোর আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি। এছাড়াও সমাজের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রচারণা চালানো উচিত। পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে শিশুশ্রমের ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে জানাতে হবে। বিশেষ করে পরিবারকে তাদের সন্তানদের শিক্ষার প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। আমাদের দেশে, অর্থনৈতিক সমস্যার কারণে অনেক পরিবার শিশুদের কাজে পাঠায়। এক্ষেত্রে সরকার ও এনজিওগুলোকে দরিদ্র পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানো উচিত। বিশ্বের অনেক দেশেই শিশুশ্রম প্রতিরোধে সফল উদাহরণ দেখা যায়। আমাদের দেশও এক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ, এনজিও সংস্থা ঘাসফুল ব্র্যাক ও সরকারি সহায়তায় মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্পের শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো পৌঁছে দিচ্ছে। এই উদ্যোগটির ফলে জেনেভা ক্যাম্পের পরিবারের মাঝে শিশুদের পড়াশোনা করানোর হার কিছুটা হলেও বেড়েছে। এভাবে ছোটখাটো উদ্যোগের পাশাপাশি শিশুশ্রম প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে। প্রতিটি শিশুকে তার প্রাপ্য অধিকার সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। শিক্ষা ও খেলার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাইলেই একত্রিত হয়ে শিশুদের একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে পারি। বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস আমাদের সবার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ। এটি আমাদের শিশুদের প্রতি দায়িত্বের কথা মনে করিয়ে দেয়। শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের সুরক্ষা, শিক্ষা এবং সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে আমাদের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাই আসুন, আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করি, যাতে প্রতিটি শিশু তার শৈশব কাটাতে পারে পড়াশোনা ও খেলার ছলে।