প্রযুক্তি ডেস্ক: আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের শনাক্ত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই— এমনই উঠে এসেছে সা¤প্রতিক এক গবেষণায়।
‘ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার’-এর এই যুগান্তকারী গবেষণায় নেতৃত্বে দিয়েছেন ড. কলিন ওয়ালশ।
গবেষণায় দেখা গেছে, ‘ভ্যান্ডারবিল্ট সুইসাইড অ্যাটেম্পট অ্যান্ড আইডিয়েশন লাইকলিহুড মডেল বা ভিএসএআইএল’ নামের এক এআই সিস্টেম নিয়মিত ভিজিটের সময় উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের বাছাই করতে ডাক্তারদের সাহায্য করতে পারে।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেন’-এ। গবেষণায় চিকিৎসকদের সতর্ক করার জন্য দুটি পদ্ধতি পরীক্ষা করেছেন গবেষকরা। এর একটি হচ্ছে পপআপ নোটিফিকেশন আর অপরটি হচ্ছে রোগীর ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য রেকর্ডে ঝুঁকির তথ্য দেখানোর মাধ্যমে সতর্কতা।
আত্মহত্যার ফলে মারা যাওয়া বেশিরভাগ মানুষ তাদের মৃত্যুর আগে এক বছরের মধ্যে অন্তত একজন স্বাস্থ্যসেবীর কাছে গিয়েছেন। তবে, মানসিক স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কোনো কারণে যাননি-বলেছেন ওয়ালশ।
এই বাছাই বা ‘ইউনিভার্সাল স্ক্রিনিং’ সব ক্ষেত্রে ব্যবহারিক নয়। তাই উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের শনাক্ত ও গুরুত্বপূর্ণ কথোপকথনকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে আমরা ভিএসএআইএল ডিজাইন করেছি।
যুক্তরাষ্ট্রে আত্মহত্যা একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা। সেখানে প্রতি এক লাখ মৃত্যুর মধ্যে ১৪.২ জনই মারা যান আত্মহত্যায়। দেশটিতে মৃত্যুর ১১তম প্রধান কারণ এটি বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ।
রোগীর আত্মহত্যার চেষ্টার ৩০ দিনের ঝুঁকি হিসাব করার জন্য ইলেকট্রনিক স্বাস্থ্য রেকর্ড বিশ্লেষণ করে একটি পদ্ধতি প্রস্তাব করেছে ভিএসএআইএল।
সা¤প্রতিক গবেষণায় ভ্যান্ডারবিল্টের বিভিন্ন ক্লিনিকে নজর দিয়েছিলেন গবেষকরা। যেখানে মৃগী বা মাইগ্রেনের মতো কিছু স্নায়বিক অবস্থার রোগীরা আত্মহত্যার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ছয় মাস ধরে এ সিস্টেমটি আট শতাংশ রোগীকে নিয়মিত ভিজিট করেছে, যেখানে সাত হাজার সাতশ ৩২ জন রোগীর মধ্যে পাঁচশ ৯৬ জন রোগীর বেলায় সতর্ক করেছে এটি।
“আমাদের গবেষণার ফলাফলে ইঙ্গিত মিলেছে, সাবধানে ডিজাইন করা এআই সিস্টেম আত্মহত্যা ঠেকাতে বিভিন্ন পরিষেবার প্রয়োজন এমন রোগীদের শনাক্তে সহায়তা করতে পারে,” বলেছেন ওয়ালশ।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এই উদ্ভাবনী ব্যবহার আত্মহত্যা ঠেকাতে সাহায্য করতে পারে, যা গবেষকদের আশার আলো দেখাচ্ছে। তারা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা সময়োপযোগী ও ব্যবহারিক পদ্ধতিতে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের আরও ভালভাবে শনাক্ত ও সহায়তা করতে পারে।