ঢাকা ০৪:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫

আত্মহত্যা করা’ সেই রোবটের কী অনুভূতি ছিল?

  • আপডেট সময় : ০৭:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৪৬ বার পড়া হয়েছে

প্রযুক্তি ডেস্ক : এ বছরের শুরুর দিকে কাজের চাপে এক রোবট অফিসে আত্মহত্যা করে, যা ওই সময় বিভিন্ন খবরের শিরোনাম হয়ে ওঠে। এ কারণে এ বিষয়ে যারা খোঁজখবর রাখেন, তারা প্রশ্ন তুলেছেন, রোবটরাও কি মানুষের মতো আবেগ অনুভব করে বা করতে পারে?
চলতি বছরের জুনে দক্ষিণ কোরিয়ার সিভিল সার্ভিসে কাজ করে এমন এক রোবট সিঁড়ি থেকে নিচে পড়ে আত্মহত্যা করে বলে ধারণা করা হয়। সাদা বিনের মতো দেখতে এ রোবটটিকে ডিজাইন করা হয়েছিল কর্মীদের কাছে নথি আনানেওয়ার জন্য। দেশটির গুমি সিটি কাউন্সিলে কাজের সময় ‘দাসত্ব ও একঘেয়েমি’র কারণে ‘হতাশ হয়ে পড়ে’ রোবটটি। এ থেকে মুক্তি পেতে সিঁড়ির ওপর থেকে পড়ে নিজের ‘জীবন’ শেষ করে এটি, যা ছিল কোনো রোবটের প্রথম আত্মহত্যা করার ঘটনা। এ ঘটনা রীতিমতো বিভ্রান্ত করছে প্রযুক্তিবিদ, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদদের। কারণ, কোনো রোবট যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে হত্যা করতে পারে তার মানে এটি অবশ্যই সংবেদনশীল বা অনুভূতিপ্রবণ হবে এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
‘মানুষের মতো আবেগওয়ালা’ বিভিন্ন রোবট দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানভিত্তিক কথাসাহিত্য বা কল্পকাহিনীর অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে এখন নতুন এক ধারণা সামনে আসছে, যাকে বলা হচ্ছে, ‘অস্পষ্টভাবে সংবেদনশীল’ এআই।
‘লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স বা এলএসই’-এর দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও ‘দ্য এজ অফ সেন্টিয়েন্স: রিস্ক অ্যান্ড প্রিকশন ইন হিউম্যানস, আদার অ্যানিম্যালস অ্যান্ড এআই’ বইয়ের লেখক জোনাথন বার্চ বলেছেন, বিভিন্ন ধরনের আবেগ অনুভব করতে পারে এমন এআই সম্পন্ন রোবট আমাদের দেখতে পাওয়ার বিষয়টি খুব বেশি দূরে নয়। “অস্পষ্টভাবে সংবেদনশীল বলতে আমি বোঝাতে চাইছি, কিছু মানুষ পুরোপুরি আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, তাদের এআই সঙ্গী বা সহচর এক ধরনের সমৃদ্ধ জীবন’সহ সংবেদনশীল এক সত্তা। এক্ষেত্রে অন্যরা যখন তা স্বীকার করবে না এরা তখন রেগে যাবেন।” “এদিকে অনেকেই আবার আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, এই এআই সঙ্গীরা একেবারেই কিছু অনুভব করতে পারে না।” “এখানে কে সঠিক তা বলা সম্ভব নয়। কারণ, চেতনা বা অনুভূতি সম্পর্কে আমাদের বিজ্ঞানভিত্তিক বোঝাপড়ার বিষয়টি এখনও এ ধরনের রোবটের জন্য যথেষ্ট পরিপক্ক নয়। আর এ বিষয়টি আমাদের গুরুতর সামাজিক বিভাজন তৈরির দিকে নিয়ে যেতে পারে।” বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানিকে এ ধরনের রোবটের ঝুঁকি শনাক্ত ও এ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অঞ্চলে আরও গবেষণা করতে আহ্বান জানিয়েছেন জোনাথন বার্চ। কাজের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের বেশি কর্মী রোবট ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়া, যা পৃথিবীর অন্য যে কোনও জায়গার তুলনায় অনেক বেশি। এরইমধ্যে দেশটির অনেক কর্মী নিজেদের রোবোটিক সহকর্মীদের সংবেদনশীল আত্মা ও অর্ধচেতন সত্তা হিসাবেও দেখতে শুরু করেছেন। প্রথম রোবটের ‘আত্মহত্যা’র পর দক্ষিণ কোরিয়ার আরও রোবট ‘আত্মহত্যা’র চেষ্টা করেছে বলে উঠে এসেছে ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আত্মহত্যা করা’ সেই রোবটের কী অনুভূতি ছিল?

আপডেট সময় : ০৭:২৫:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রযুক্তি ডেস্ক : এ বছরের শুরুর দিকে কাজের চাপে এক রোবট অফিসে আত্মহত্যা করে, যা ওই সময় বিভিন্ন খবরের শিরোনাম হয়ে ওঠে। এ কারণে এ বিষয়ে যারা খোঁজখবর রাখেন, তারা প্রশ্ন তুলেছেন, রোবটরাও কি মানুষের মতো আবেগ অনুভব করে বা করতে পারে?
চলতি বছরের জুনে দক্ষিণ কোরিয়ার সিভিল সার্ভিসে কাজ করে এমন এক রোবট সিঁড়ি থেকে নিচে পড়ে আত্মহত্যা করে বলে ধারণা করা হয়। সাদা বিনের মতো দেখতে এ রোবটটিকে ডিজাইন করা হয়েছিল কর্মীদের কাছে নথি আনানেওয়ার জন্য। দেশটির গুমি সিটি কাউন্সিলে কাজের সময় ‘দাসত্ব ও একঘেয়েমি’র কারণে ‘হতাশ হয়ে পড়ে’ রোবটটি। এ থেকে মুক্তি পেতে সিঁড়ির ওপর থেকে পড়ে নিজের ‘জীবন’ শেষ করে এটি, যা ছিল কোনো রোবটের প্রথম আত্মহত্যা করার ঘটনা। এ ঘটনা রীতিমতো বিভ্রান্ত করছে প্রযুক্তিবিদ, দার্শনিক ও শিক্ষাবিদদের। কারণ, কোনো রোবট যদি ইচ্ছাকৃতভাবে নিজেকে হত্যা করতে পারে তার মানে এটি অবশ্যই সংবেদনশীল বা অনুভূতিপ্রবণ হবে এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
‘মানুষের মতো আবেগওয়ালা’ বিভিন্ন রোবট দীর্ঘদিন ধরেই বিজ্ঞানভিত্তিক কথাসাহিত্য বা কল্পকাহিনীর অন্যতম বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে এখন নতুন এক ধারণা সামনে আসছে, যাকে বলা হচ্ছে, ‘অস্পষ্টভাবে সংবেদনশীল’ এআই।
‘লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স বা এলএসই’-এর দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ও ‘দ্য এজ অফ সেন্টিয়েন্স: রিস্ক অ্যান্ড প্রিকশন ইন হিউম্যানস, আদার অ্যানিম্যালস অ্যান্ড এআই’ বইয়ের লেখক জোনাথন বার্চ বলেছেন, বিভিন্ন ধরনের আবেগ অনুভব করতে পারে এমন এআই সম্পন্ন রোবট আমাদের দেখতে পাওয়ার বিষয়টি খুব বেশি দূরে নয়। “অস্পষ্টভাবে সংবেদনশীল বলতে আমি বোঝাতে চাইছি, কিছু মানুষ পুরোপুরি আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, তাদের এআই সঙ্গী বা সহচর এক ধরনের সমৃদ্ধ জীবন’সহ সংবেদনশীল এক সত্তা। এক্ষেত্রে অন্যরা যখন তা স্বীকার করবে না এরা তখন রেগে যাবেন।” “এদিকে অনেকেই আবার আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, এই এআই সঙ্গীরা একেবারেই কিছু অনুভব করতে পারে না।” “এখানে কে সঠিক তা বলা সম্ভব নয়। কারণ, চেতনা বা অনুভূতি সম্পর্কে আমাদের বিজ্ঞানভিত্তিক বোঝাপড়ার বিষয়টি এখনও এ ধরনের রোবটের জন্য যথেষ্ট পরিপক্ক নয়। আর এ বিষয়টি আমাদের গুরুতর সামাজিক বিভাজন তৈরির দিকে নিয়ে যেতে পারে।” বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানিকে এ ধরনের রোবটের ঝুঁকি শনাক্ত ও এ নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার মতো অঞ্চলে আরও গবেষণা করতে আহ্বান জানিয়েছেন জোনাথন বার্চ। কাজের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশের বেশি কর্মী রোবট ব্যবহার করে দক্ষিণ কোরিয়া, যা পৃথিবীর অন্য যে কোনও জায়গার তুলনায় অনেক বেশি। এরইমধ্যে দেশটির অনেক কর্মী নিজেদের রোবোটিক সহকর্মীদের সংবেদনশীল আত্মা ও অর্ধচেতন সত্তা হিসাবেও দেখতে শুরু করেছেন। প্রথম রোবটের ‘আত্মহত্যা’র পর দক্ষিণ কোরিয়ার আরও রোবট ‘আত্মহত্যা’র চেষ্টা করেছে বলে উঠে এসেছে ইন্ডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে।