ঢাকা ০৭:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

আতালান্তার ঝড় সামলে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়

  • আপডেট সময় : ০৬:১৪:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ৫৯ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক: ইউরোপের রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আতালান্তা। পজেশন ধরে রাখার পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করল তারা। প্রথমবার সমতা টেনে, দ্বিতীয়বার ব্যবধান কমিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেল দলটি। তবে, তৃতীয়বার আর ভাঙতে পারল না জয়ে ফিরতে মরিয়া রিয়াল মাদ্রিদের দেয়াল। নাটকীয় লড়াইয়ে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে ওঠার আশা জোরাল রাখল কার্লো আনচেলত্তির দল। ইতালিয়ান ক্লাবটির মাঠে মঙ্গলবার রাতে ৩-২ গোলে জিতেছে রিয়াল। চোট কাটিয়ে মাঠে নেমেই গোল করে ও করিয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রাখলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা দুই হারের পর জয়ের দেখা পেল প্রতিযোগিতাটির রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা। গত সপ্তাহে নিজেকে মেলে ধরার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জালের দেখা পেলেন কিলিয়ান এমবাপে। তার দারুণ গোলে শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর বিরতির আগমুহূর্তে সমতা টানেন চার্ল দে কেটেলার। দ্বিতীয়ার্ধে তিন মিনিটের মধ্যে ভিনিসিউস ও জুড বেলিংহ্যামের গোলে জয়ের পথে এগিয়ে যায় রিয়াল।
আদেমোলা লুকমানের গোলে ব্যবধান কমিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকে আতালান্তা। কিন্তু বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা করেও তৃতীয় গোলের দেখা আর পায়নি দলটি। প্রায় ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে আতালান্তা গোলের জন্য ২০টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্যে রাখে। বিপরীতে রিয়ালের ১০ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। ছয় ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে উঠেছে রিয়াল। আসরে প্রথম চার ম্যাচে জাল অক্ষত রাখা আতালান্তা গত রাউন্ডে হজম করে একটি গোল। এবার খেল তিনটি। চার ধাপ পিছিয়ে নবম স্থানে নেমে গেছে তারা, ১১ পয়েন্ট নিয়ে। যেকোনো মূল্যে জয়ে ফেরার লক্ষ্যে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম আক্রমণেই লক্ষ্যে শট নেয় রিয়াল। তবে এমবাপের সেই প্রচেষ্টা রুখে দেন গোলরক্ষক। স্বরূপে ফেরার তাড়নায় থাকা ফরাসি ফরোয়ার্ডকে অবশ্য বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। ব্রাহিম দিয়াসের পাস বক্সের মুখে নিযন্ত্রণে নেওয়ার মাঝেই রক্ষণের শেষ বাধা টপকে, কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এমবাপে। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় বিশ্বকাপ জয়ী তারকার মোট গোল হলো ৫০টি, ৭৯ ম্যাচে। চার মিনিট পর দ্বিতীয় গোল পেতে পারতেন এমবাপে; তবে এবার তার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। শুরুর ধাক্কা সামলে পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াতে থাকে আতালান্তা। প্রথম ৩৫ মিনিটের মধ্যে গোলের জন্য রিয়ালের চেয়ে বেশি সাতটি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা, যদিও গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার তেমন কঠিন পরীক্ষা নিতে পারছিল না দলটি। এর মাঝেই বড় একটা ধাক্কা খায় রিয়াল। চোট পেয়ে ৩৬তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন এমবাপে। তার বদলি নামেন চোট কাটিয়ে ফেরা আরেক ফরোয়ার্ড রদ্রিগো। বিরতির বাঁশি বাজতে তখন আর কয়েক সেকেন্ড কেবল বাকি। সেই সময়ে বক্সে প্রতিপক্ষের জিয়াদ কোলাসিনাচকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন অহেলিয়া চুয়ামেনি আর পেনাল্টি পায় আতালান্তা। দারুণ স্পট কিকে সমতা টানেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড দে কেটেলার।
আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে তিন মিনিটে ভালো দুটি আক্রমণ করে আতালান্তা। ৫৪তম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত তারা, বক্সের বাইরে থেকে লুকমানের শট ঝাঁপিয়ে ফেরান কোর্তোয়া। লুকমানের ওই সুযোগ নষ্টের হতাশা আরও বেড়ে যায় তিন মিনিটের মধ্যে রিয়ালের দুই গোলে। ৫৬তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলের সুযোগে দলকে ফের এগিয়ে নেন ভিনিসিউস। আতালান্তার খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে আসা বল বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় নিচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন চোট কাটিয়ে ফেরা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। পরের গোলেও জড়িয়ে ভিনিসিউসের নাম। তার বাড়ানো বল ধরে বক্সে ঢুকে এক ঝটকায় প্রতিপক্ষের একজনকে ফাঁকি দিয়ে নিচু কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন বেলিংহ্যাম। তবে, সেরি আয় টানা ৯ ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১১ ম্যাচে জয়ী আতালান্তা এই যাত্রায় পাল্টা আঘাত হানতে দেরি করেনি। ৬৫তম মিনিটে বক্সে লুকাস ভাসকেসের বাধা সামলে নিচু জোরাল শটে কাছের পোস্ট ঘেঁষে ঠিকানা খুঁজে নেন নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড লুকমান। এরপর রিয়ালকে আরও চেপে ধরে আতালান্তা। তাদের আক্রমণের তোড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। অনেক সুযোগ নষ্টের ভিড়ে একেবারে শেষ সময়েও পরিষ্কার সুযোগ পায় তারা; কিন্তু কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন মাতেও রেতেগি। আরেক ম্যাচে সালসবুর্ককে ৩-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। ৭ পয়েন্ট নিয়ে ২৪তম স্থানে উঠেছে ফরাসি ক্লাবটি। আর দিনের শুরুতে জিরোনাকে ১-০ গোলে হারানো লিভারপুল ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শেখ মুজিব জাতির পিতা নন, স্বাধীনতা অর্জনে তার ত্যাগকে স্বীকার করি

আতালান্তার ঝড় সামলে রিয়ালের রোমাঞ্চকর জয়

আপডেট সময় : ০৬:১৪:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

ক্রীড়া ডেস্ক: ইউরোপের রেকর্ড চ্যাম্পিয়নদের চোখে চোখ রেখে লড়াই করল আতালান্তা। পজেশন ধরে রাখার পাশাপাশি আক্রমণেও আধিপত্য করল তারা। প্রথমবার সমতা টেনে, দ্বিতীয়বার ব্যবধান কমিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে গেল দলটি। তবে, তৃতীয়বার আর ভাঙতে পারল না জয়ে ফিরতে মরিয়া রিয়াল মাদ্রিদের দেয়াল। নাটকীয় লড়াইয়ে জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে ওঠার আশা জোরাল রাখল কার্লো আনচেলত্তির দল। ইতালিয়ান ক্লাবটির মাঠে মঙ্গলবার রাতে ৩-২ গোলে জিতেছে রিয়াল। চোট কাটিয়ে মাঠে নেমেই গোল করে ও করিয়ে দলের জয়ে বড় অবদান রাখলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে টানা দুই হারের পর জয়ের দেখা পেল প্রতিযোগিতাটির রেকর্ড ১৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা। গত সপ্তাহে নিজেকে মেলে ধরার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর টানা দ্বিতীয় ম্যাচে জালের দেখা পেলেন কিলিয়ান এমবাপে। তার দারুণ গোলে শুরুতে পিছিয়ে পড়ার পর বিরতির আগমুহূর্তে সমতা টানেন চার্ল দে কেটেলার। দ্বিতীয়ার্ধে তিন মিনিটের মধ্যে ভিনিসিউস ও জুড বেলিংহ্যামের গোলে জয়ের পথে এগিয়ে যায় রিয়াল।
আদেমোলা লুকমানের গোলে ব্যবধান কমিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াইয়ে থাকে আতালান্তা। কিন্তু বাকি সময়ে অনেক চেষ্টা করেও তৃতীয় গোলের দেখা আর পায়নি দলটি। প্রায় ৫৫ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে আতালান্তা গোলের জন্য ২০টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্যে রাখে। বিপরীতে রিয়ালের ১০ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। ছয় ম্যাচে তিন জয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ১৮ নম্বরে উঠেছে রিয়াল। আসরে প্রথম চার ম্যাচে জাল অক্ষত রাখা আতালান্তা গত রাউন্ডে হজম করে একটি গোল। এবার খেল তিনটি। চার ধাপ পিছিয়ে নবম স্থানে নেমে গেছে তারা, ১১ পয়েন্ট নিয়ে। যেকোনো মূল্যে জয়ে ফেরার লক্ষ্যে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে প্রথম আক্রমণেই লক্ষ্যে শট নেয় রিয়াল। তবে এমবাপের সেই প্রচেষ্টা রুখে দেন গোলরক্ষক। স্বরূপে ফেরার তাড়নায় থাকা ফরাসি ফরোয়ার্ডকে অবশ্য বেশিক্ষণ আটকে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। ব্রাহিম দিয়াসের পাস বক্সের মুখে নিযন্ত্রণে নেওয়ার মাঝেই রক্ষণের শেষ বাধা টপকে, কোনাকুনি শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন এমবাপে। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় বিশ্বকাপ জয়ী তারকার মোট গোল হলো ৫০টি, ৭৯ ম্যাচে। চার মিনিট পর দ্বিতীয় গোল পেতে পারতেন এমবাপে; তবে এবার তার বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। শুরুর ধাক্কা সামলে পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াতে থাকে আতালান্তা। প্রথম ৩৫ মিনিটের মধ্যে গোলের জন্য রিয়ালের চেয়ে বেশি সাতটি শট নিয়ে দুটি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা, যদিও গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার তেমন কঠিন পরীক্ষা নিতে পারছিল না দলটি। এর মাঝেই বড় একটা ধাক্কা খায় রিয়াল। চোট পেয়ে ৩৬তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন এমবাপে। তার বদলি নামেন চোট কাটিয়ে ফেরা আরেক ফরোয়ার্ড রদ্রিগো। বিরতির বাঁশি বাজতে তখন আর কয়েক সেকেন্ড কেবল বাকি। সেই সময়ে বক্সে প্রতিপক্ষের জিয়াদ কোলাসিনাচকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন অহেলিয়া চুয়ামেনি আর পেনাল্টি পায় আতালান্তা। দারুণ স্পট কিকে সমতা টানেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড দে কেটেলার।
আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে তিন মিনিটে ভালো দুটি আক্রমণ করে আতালান্তা। ৫৪তম মিনিটে এগিয়েও যেতে পারত তারা, বক্সের বাইরে থেকে লুকমানের শট ঝাঁপিয়ে ফেরান কোর্তোয়া। লুকমানের ওই সুযোগ নষ্টের হতাশা আরও বেড়ে যায় তিন মিনিটের মধ্যে রিয়ালের দুই গোলে। ৫৬তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলের সুযোগে দলকে ফের এগিয়ে নেন ভিনিসিউস। আতালান্তার খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে আসা বল বক্সে পেয়ে প্রথম ছোঁয়ায় নিচু শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন চোট কাটিয়ে ফেরা ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। পরের গোলেও জড়িয়ে ভিনিসিউসের নাম। তার বাড়ানো বল ধরে বক্সে ঢুকে এক ঝটকায় প্রতিপক্ষের একজনকে ফাঁকি দিয়ে নিচু কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন বেলিংহ্যাম। তবে, সেরি আয় টানা ৯ ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ১১ ম্যাচে জয়ী আতালান্তা এই যাত্রায় পাল্টা আঘাত হানতে দেরি করেনি। ৬৫তম মিনিটে বক্সে লুকাস ভাসকেসের বাধা সামলে নিচু জোরাল শটে কাছের পোস্ট ঘেঁষে ঠিকানা খুঁজে নেন নাইজেরিয়ার ফরোয়ার্ড লুকমান। এরপর রিয়ালকে আরও চেপে ধরে আতালান্তা। তাদের আক্রমণের তোড়ে কোণঠাসা হয়ে পড়ে স্প্যানিশ চ্যাম্পিয়নরা। অনেক সুযোগ নষ্টের ভিড়ে একেবারে শেষ সময়েও পরিষ্কার সুযোগ পায় তারা; কিন্তু কাছ থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট শট নেন মাতেও রেতেগি। আরেক ম্যাচে সালসবুর্ককে ৩-০ গোলে হারিয়েছে পিএসজি। ৭ পয়েন্ট নিয়ে ২৪তম স্থানে উঠেছে ফরাসি ক্লাবটি। আর দিনের শুরুতে জিরোনাকে ১-০ গোলে হারানো লিভারপুল ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে শীর্ষে। নকআউট পর্ব নিশ্চিত হয়ে গেছে তাদের।