ঢাকা ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

আতলেতিকোর মাঠেও অপ্রতিরোধ্য রিয়াল

  • আপডেট সময় : ১০:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • ৯১ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : রিয়াল মাদ্রিদের জয়রথ থামানোর হুঙ্কার দিয়েছিলেন দিয়েগো সিমেওনে। আক্রমণাত্মক ফুটবলে কোচের কথা কাজে পরিণত করার আশাও জাগালেন কারাসকো-ফেলিক্সরা। তবে তাদের বেশিরভাগ আক্রমণ মুখ থুবড়ে পড়ল। শেষে গিয়ে ব্যবধান কমিয়ে তারা নাটকীয়তার আভাস দিলেও পরে আর পেরে ওঠেনি। দারুণ দুই ফিনিশিংয়ের পর বাকিটা সময় রক্ষণ জমাট রেখে মুখে চওড়া হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ল কার্লো আনচেলত্তির দল। ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় রোববার রাতে লা লিগায় হাইভোল্টেজ ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। রদ্রিগো দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর প্রথমার্ধেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেছেন ফেদে ভালভেরদে। আতলেতিকোর একমাত্র গোলটি করেছেন মারিও এরমোসো। গত মে মাসে ২০২১-২২ আসরের ফিরতি দেখায় এই মাঠে হারতে হয়েছিল রিয়ালকে। দারুণ পারফরম্যান্সে এবার মধুর প্রতিশোধ নিল রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা।
এবারের লিগে এই নিয়ে টানা ৬ ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯ ম্যাচ খেলে সবকটিতে জিতল রিয়াল। লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে আবার শীর্ষেও ফিরল তারা। এই দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই মানেই উত্তেজনার ঢেউ, বাড়তি উত্তাপ। প্রথম ছয় মিনিটেই হলো চারটি ফাউলের ঘটনা। চতুর্থ মিনিটে ফেদে ভালভেরদেকে আতলেতিকোর কোকের ফাউলের ঘটনায় দ্বন্দে জড়াতে যাচ্ছিল দুই পক্ষ। দ্রুত রেফারি এসে পরিবেশ শান্ত করেন। ষষ্ঠ মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। তবে ফেলিপের হেড ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। পাঁচ মিনিট পর ইয়ানিক কারাসকোর কোনাকুনি শট দানি কারভাহালের পায়ে লেগে পাশের জাল কাঁপায়। ওই কর্নার পাঞ্চ করে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি থিবো কোর্তোয়া, আলগা বল ফাঁকায় পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি জোয়াও ফেলিক্স। শুরুর চাপ সামলে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণেই এগিয়ে যায় রিয়াল। অষ্টাদশ মিনিটে রক্ষণের ওপর দিয়ে থ্রু বল বাড়ান অহেলিয়া চুয়ামেনি আর অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকে দারুণ এক হাফ ভলিতে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান রদ্রিগো। গোল করেই মাঠের কোণে গিয়ে নেচে উদযাপন শুরু করেন রদ্রিগো, তার সঙ্গে যোগ দেন ভিনিসিউস জুনিয়র ও অন্যরা। ভিনিসিউসের এই নেচে উদযাপন ইউরোপীয় ফুটবলে সম্প্রতি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। লিগে এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে গোল করলেন রদ্রিগো। পিছিয়ে পড়ার পর শুরুর আক্রমণাত্মক মনোভাব আর ধরে রাখতে পারেনি আতলেতিকো। উল্টো চাপ বাড়ায় রিয়াল। ৩৬তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যায় তারা।
মাঝমাঠের কাছে লুকা মদ্রিচকে পাস দিয়ে বাঁ দিক দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে যান ভিনিসিউস। সতীর্থের ফিরতি থ্রু পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে নেন নিচু শট। বল পোস্টে লেগে চলে যায় অন্য পাশে, ছুটে এসে বিনা বাধায় লক্ষ্যভেদ করেন ভালভেরদে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা তিন ম্যাচে জালের দেখা পেলেন উরুগুয়ের এই মিডফিল্ডার। গত সপ্তাহে ঘরোয়া লিগে মায়োর্কার বিপক্ষে একটি গোল করার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লাইপজিগের জালেও বল পাঠান তিনি। বিরতির আগে আতলেতিকো দুটি সুযোগ তৈরি করলেও কোর্তোয়াকে পরীক্ষায় ফেলার মতো তেমন কিছু করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণাত্মক শুরু করে তারা, কিন্তু শেষে গিয়ে গুলিয়ে ফেলছিল বারবার। রিয়ালও রক্ষণে ছিল জমাট। এই অর্ধের প্রথম ২০ মিনিটের অধিকাংশ সময় বল ছিল রিয়ালের অর্ধেই। কিন্তু প্রতিপক্ষ শিবিরে ভীতি ছড়ানোর মতো তেমন কিছুই করতে পারেনি সিমেওনের শিষ্যরা। তবে হাল ছাড়েনি তারা। তারই সুফল মেলে ৮৩তম মিনিটে। কর্নার পাঞ্চ করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলেন কোর্তোয়া, ফাঁকায় বল পেয়ে কাঁধ দিয়ে ফাঁকা জালে পাঠিয়ে দেন এরমোসো।
আক্রমণের ধার বাড়াতে মরিয়া সিমেওনে ৭২তম মিনিটে উইঙ্গার ইয়ানিক কারাসকোকে তুলে ডিফেন্ডার এরমোসোকে নামান। সিদ্ধান্তটা কাজে লেগে যায় দারুণভাবে। তাতে নতুন রোমাঞ্চের আভাস মিললেও বাকি সময়ে কিছুই করতে পারেনি তারা। উল্টো মেজাজ হারিয়ে বসে। ৮৮তম মিনিটে তাদের ডিফেন্ডার রেইনিলদোকে রিয়ালের রাইট-ব্যাক কারভাহাল ফাউল করলে দুই পক্ষ আবার বাক-বিত-ায় জড়িয়ে পড়ে। এর পরপরই সেবাইয়োসকে অহেতুক ফাউল করে দুই মিনিটের মধ্যে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে আতলেতিকোকে ম্যাচে ফেরানো এরমোসো। পরাজয়ের পাশাপাশি লাল কার্ডে খেলোয়াড় হারানোর হতাশা যোগ হয় আতলেতিকো শিবিরে। টানা ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল। দুইয়ে নেমে যাওয়া বার্সেলোনার পয়েন্ট ১৬। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রিয়াল বেতিস। আসরে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাওয়া আতলেতিকো তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে সাত নম্বরে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আতলেতিকোর মাঠেও অপ্রতিরোধ্য রিয়াল

আপডেট সময় : ১০:১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২২

ক্রীড়া ডেস্ক : রিয়াল মাদ্রিদের জয়রথ থামানোর হুঙ্কার দিয়েছিলেন দিয়েগো সিমেওনে। আক্রমণাত্মক ফুটবলে কোচের কথা কাজে পরিণত করার আশাও জাগালেন কারাসকো-ফেলিক্সরা। তবে তাদের বেশিরভাগ আক্রমণ মুখ থুবড়ে পড়ল। শেষে গিয়ে ব্যবধান কমিয়ে তারা নাটকীয়তার আভাস দিলেও পরে আর পেরে ওঠেনি। দারুণ দুই ফিনিশিংয়ের পর বাকিটা সময় রক্ষণ জমাট রেখে মুখে চওড়া হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়ল কার্লো আনচেলত্তির দল। ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় রোববার রাতে লা লিগায় হাইভোল্টেজ ম্যাচটি ২-১ গোলে জিতেছে রিয়াল। রদ্রিগো দলকে এগিয়ে নেওয়ার পর প্রথমার্ধেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেছেন ফেদে ভালভেরদে। আতলেতিকোর একমাত্র গোলটি করেছেন মারিও এরমোসো। গত মে মাসে ২০২১-২২ আসরের ফিরতি দেখায় এই মাঠে হারতে হয়েছিল রিয়ালকে। দারুণ পারফরম্যান্সে এবার মধুর প্রতিশোধ নিল রেকর্ড চ্যাম্পিয়নরা।
এবারের লিগে এই নিয়ে টানা ৬ ও সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯ ম্যাচ খেলে সবকটিতে জিতল রিয়াল। লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে আবার শীর্ষেও ফিরল তারা। এই দুই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই মানেই উত্তেজনার ঢেউ, বাড়তি উত্তাপ। প্রথম ছয় মিনিটেই হলো চারটি ফাউলের ঘটনা। চতুর্থ মিনিটে ফেদে ভালভেরদেকে আতলেতিকোর কোকের ফাউলের ঘটনায় দ্বন্দে জড়াতে যাচ্ছিল দুই পক্ষ। দ্রুত রেফারি এসে পরিবেশ শান্ত করেন। ষষ্ঠ মিনিটে দারুণ সুযোগ পায় স্বাগতিকরা। তবে ফেলিপের হেড ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। পাঁচ মিনিট পর ইয়ানিক কারাসকোর কোনাকুনি শট দানি কারভাহালের পায়ে লেগে পাশের জাল কাঁপায়। ওই কর্নার পাঞ্চ করে ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি থিবো কোর্তোয়া, আলগা বল ফাঁকায় পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি জোয়াও ফেলিক্স। শুরুর চাপ সামলে প্রথম উল্লেখযোগ্য আক্রমণেই এগিয়ে যায় রিয়াল। অষ্টাদশ মিনিটে রক্ষণের ওপর দিয়ে থ্রু বল বাড়ান অহেলিয়া চুয়ামেনি আর অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বক্সে ঢুকে দারুণ এক হাফ ভলিতে দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসান রদ্রিগো। গোল করেই মাঠের কোণে গিয়ে নেচে উদযাপন শুরু করেন রদ্রিগো, তার সঙ্গে যোগ দেন ভিনিসিউস জুনিয়র ও অন্যরা। ভিনিসিউসের এই নেচে উদযাপন ইউরোপীয় ফুটবলে সম্প্রতি বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। লিগে এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে গোল করলেন রদ্রিগো। পিছিয়ে পড়ার পর শুরুর আক্রমণাত্মক মনোভাব আর ধরে রাখতে পারেনি আতলেতিকো। উল্টো চাপ বাড়ায় রিয়াল। ৩৬তম মিনিটে দ্বিতীয় গোলও পেয়ে যায় তারা।
মাঝমাঠের কাছে লুকা মদ্রিচকে পাস দিয়ে বাঁ দিক দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে এগিয়ে যান ভিনিসিউস। সতীর্থের ফিরতি থ্রু পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে নেন নিচু শট। বল পোস্টে লেগে চলে যায় অন্য পাশে, ছুটে এসে বিনা বাধায় লক্ষ্যভেদ করেন ভালভেরদে। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা তিন ম্যাচে জালের দেখা পেলেন উরুগুয়ের এই মিডফিল্ডার। গত সপ্তাহে ঘরোয়া লিগে মায়োর্কার বিপক্ষে একটি গোল করার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লাইপজিগের জালেও বল পাঠান তিনি। বিরতির আগে আতলেতিকো দুটি সুযোগ তৈরি করলেও কোর্তোয়াকে পরীক্ষায় ফেলার মতো তেমন কিছু করতে পারেনি। দ্বিতীয়ার্ধেও আক্রমণাত্মক শুরু করে তারা, কিন্তু শেষে গিয়ে গুলিয়ে ফেলছিল বারবার। রিয়ালও রক্ষণে ছিল জমাট। এই অর্ধের প্রথম ২০ মিনিটের অধিকাংশ সময় বল ছিল রিয়ালের অর্ধেই। কিন্তু প্রতিপক্ষ শিবিরে ভীতি ছড়ানোর মতো তেমন কিছুই করতে পারেনি সিমেওনের শিষ্যরা। তবে হাল ছাড়েনি তারা। তারই সুফল মেলে ৮৩তম মিনিটে। কর্নার পাঞ্চ করে ক্লিয়ার করতে গিয়ে গড়বড় করে ফেলেন কোর্তোয়া, ফাঁকায় বল পেয়ে কাঁধ দিয়ে ফাঁকা জালে পাঠিয়ে দেন এরমোসো।
আক্রমণের ধার বাড়াতে মরিয়া সিমেওনে ৭২তম মিনিটে উইঙ্গার ইয়ানিক কারাসকোকে তুলে ডিফেন্ডার এরমোসোকে নামান। সিদ্ধান্তটা কাজে লেগে যায় দারুণভাবে। তাতে নতুন রোমাঞ্চের আভাস মিললেও বাকি সময়ে কিছুই করতে পারেনি তারা। উল্টো মেজাজ হারিয়ে বসে। ৮৮তম মিনিটে তাদের ডিফেন্ডার রেইনিলদোকে রিয়ালের রাইট-ব্যাক কারভাহাল ফাউল করলে দুই পক্ষ আবার বাক-বিত-ায় জড়িয়ে পড়ে। এর পরপরই সেবাইয়োসকে অহেতুক ফাউল করে দুই মিনিটের মধ্যে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে আতলেতিকোকে ম্যাচে ফেরানো এরমোসো। পরাজয়ের পাশাপাশি লাল কার্ডে খেলোয়াড় হারানোর হতাশা যোগ হয় আতলেতিকো শিবিরে। টানা ৬ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল। দুইয়ে নেমে যাওয়া বার্সেলোনার পয়েন্ট ১৬। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে রিয়াল বেতিস। আসরে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাওয়া আতলেতিকো তিন জয় ও এক ড্রয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আছে সাত নম্বরে।