নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকের বাদ্যের সঙ্গে উলুধ্বনি, শঙ্খনাদ আর কাসর ঘণ্টা বাজিয়ে গত সোমবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে বাঙালি হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে শ্রী শ্রী দুর্গাদেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন, সপ্তমাদি কল্পারম্ভ ও মহাসপ্তমী বিহিত পূজার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে মহাসপ্তমী।
আজ বুধবার মহাঅষ্টমীতে সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটের দুর্গাদেবীর অষ্টমাদি কল্পারম্ভ ও বিহিত পূজা। বেলা ১১টায় মহাষ্টমী তিথিতে কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হবে। রাত ১১টা ৫৪ মিনিটে সন্ধি পূজা আরম্ভ ও সমাপনী রাত ১২টা ৪২ মিনিটে। এর আগে মধ্যাহ্নে মহাপ্রসাদ বিতরণ।
মহানবমী (বৃহস্পতিবার): সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের মধ্যে দুর্গাদেবীর মহানবমী কল্পারম্ভ ও মহানবমী বিহিত পূজা। বিজয়া দশমী (শুক্রবার): সকাল ৯টা ১১ মিনিটের মধ্যে দুর্গাদেবীর দশী বিহিতপূজা ও পূজান্তে দর্পন বিসর্জন।
ঢাকা মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রঞ্জন ম-ল জানান, গত সোমবার সকাল ৯টায় দেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভে ষষ্ঠী পূজা শুরু হয়েছে। তিনি জানান, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বিবেচনায় ম-পে দর্শনার্থীদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বছর পূজায় কোনো আরতি প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক আয়োজন কিংবা মন্দিরের আশেপাশে মেলা থাকছে না। মন্দিরের প্রবেশ পথে নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা লাইন রাখা হচ্ছে।
এবার দেশজুড়ে ৩২ হাজার ১১৭ ম-পে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে; গত বছরের তুলনায় এক হাজার ৯০৫টি ম-প বেড়েছে। ঢাকায় এ বছর দুর্গ পূজা হবে ২৩৮টি ম-পে। দুর্গাপূজা ঘিরে ‘কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম।
রোববার ঢাকেশ্বরী মন্দিরে পরিদর্শন করে তিনি মহামারীর এই সময়ে ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে স্বাস্থ্যবিধি মানার উপর জোর দেন।
পূজাম-পে কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ রয়েছে। পূজাম-পগুলোতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। শুধু পূজা নয়, সব ধর্মীয় উৎসবে নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে।’
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর স্বামীবাগে লোকনাথ মন্দিরে দুর্গাপূজা উপলক্ষে পূজাম-প পরিদর্শন ও বস্ত্র বিতরণ শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের মানুষ ধর্মভীরু, ধর্মান্ধ নয়। ধর্ম যার যার উৎসব সবার, এ নীতিতে বিশ্বাসী বাংলাদেশের মানুষ।’ তিনি বলেন, ‘যারা দেশে ধর্মের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চেয়েছিল, তাদের কঠোরভাবে দমন করা হয়েছে।’