ঢাকা ১১:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
সরকারি চাকরিতে প্রকৌশলীদের কোটা বাস্তবায়ন দাবির আন্দোলন

আজ থেকে সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন

  • আপডেট সময় : ০৯:১৪:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে

বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগে সমাবেশে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ, বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে প্রকৌশলীদের কোটা বাস্তবায়নের দাবিতে চলমান আন্দোলন আরো বেগবান করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে তারা জানিয়েছেন, জনদুর্ভোগ এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এ জন্য আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) থেকে দেশের সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে সম্পূর্ণ শাটডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগে এক সমাবেশে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ এবং বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর আগে রাত সোয়া ১০টার দিকে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন এবং পুলিশের হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রেসিডেন্ট ওয়ালিউল্লাহ বলেন, আমাদের তিন দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছি। গত দুই দিন আমরা সারা দেশে সড়ক অবরোধ করেছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ শাহবাগে সমবেত হয়েছে দেশের সব ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা। আমরা প্রস্তুত আছি আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার জন্য। তবে জনগণের দুর্ভোগ বিবেচনায় আমরা আপাতত কোনও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবো না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশি হামলায় ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘আগামীকাল (বুধবার) থেকে সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ শাটডাউন থাকবে। কোনও ক্লাস বা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। বিকাল ৫টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের কাউন্সিল হলে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে একটি সভা হবে, সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও ছাত্রনেতার অবস্থান দেখে আমরা বিস্মিত। তারা প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সচেতন নন। অথচ আজকের হামলায় শুধু প্রকৌশল নয়, ঢাবিরও অন্তত চার জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমার দুই জুনিয়রের শরীরে গ্রেনেডের স্পিলিন্টার ঢুকে তারা হাসপাতালে ভর্তি আছে।’

এর আগে সন্ধ্যায় (সোয়া ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীদের ১১ সদস্য প্রতিনিধি দল। তবে বৈঠকে কোনও অগ্রগতি হয়নি। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকালে আবারও সরকারের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

চুয়েটে অন্তর্বর্তী সরকারের গায়েবানা জানাজা পড়লেন শিক্ষার্থীরা: অন্তর্বর্তী সরকারের গায়েবানা জানাজা পড়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৭ আগস্ট) মাগরিবের নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেট এলাকায় সড়কে এ গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করেন তারা। জানাজা শেষে বিশেষ মোনাজাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হেদায়েত কামনা করেছেন তারা। এরপরই দুই নম্বর গেট থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে জিইসি মোড় থেকে মিছিল করে ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন চুয়েটের শিক্ষার্থী। রাউজানের ক্যাম্পাস থেকে বাসযোগে শহরে এসে বিক্ষোভে অংশ নেন তারা। এ সময় তারা দাবি মেনে নিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা সড়কে অবস্থান করেন। মাগরিবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে যান। ২ নম্বর গেট মোড় অবরোধ করায় আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

ঢাকায় বুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদসহ তিন দফা দাবির বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত না আসায় সরকারের গায়েবানা জানাজা পড়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, বললেন বুয়েট ভিসি: আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান। বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তিনি বলেন, দাবি জানাতে যমুনা যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করেছে। সভ্য সমাজে এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভিসি বলেন, শিক্ষার্থীদের কিছু যৌক্তিক দাবি নিয়ে বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যমুনার উদ্দেশে যাচ্ছিল। তখন পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে; যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও বলেন, পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড এবং রাবার বুলেটে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের বুয়েটের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনও অনেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয় ব্যবস্থা নিতে আমি ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করি। এই দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরি। দায়িত্ব নিয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসে কমিটি গঠন করতে এবং বিষয়টির সমাধান করতে তাদের অনুরোধ করি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কমিটি মানি না বলে ওঠেন। পাশাপাশি ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন। ভিসি বলেন, কমিটির বিষয়ে যদি কারও কোনও বক্তব্য থাকে বলেন। আমরা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করবো। এ সময় শিক্ষার্থীরা আবার বলে ওঠেন তাদের এখানে আসতে হবে। বুয়েট ভিসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় অনেকেই ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

সানা/২৮/০৮/২০২৫

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সরকারি চাকরিতে প্রকৌশলীদের কোটা বাস্তবায়ন দাবির আন্দোলন

আজ থেকে সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন

আপডেট সময় : ০৯:১৪:৪০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারি চাকরিতে প্রকৌশলীদের কোটা বাস্তবায়নের দাবিতে চলমান আন্দোলন আরো বেগবান করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তবে তারা জানিয়েছেন, জনদুর্ভোগ এড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। এ জন্য আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) থেকে দেশের সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে সম্পূর্ণ শাটডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগে এক সমাবেশে প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ওয়ালিউল্লাহ এবং বুয়েট শিক্ষার্থী জুবায়ের এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এর আগে রাত সোয়া ১০টার দিকে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন এবং পুলিশের হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের প্রেসিডেন্ট ওয়ালিউল্লাহ বলেন, আমাদের তিন দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছি। গত দুই দিন আমরা সারা দেশে সড়ক অবরোধ করেছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ শাহবাগে সমবেত হয়েছে দেশের সব ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীরা। আমরা প্রস্তুত আছি আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার জন্য। তবে জনগণের দুর্ভোগ বিবেচনায় আমরা আপাতত কোনও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবো না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশি হামলায় ৫০ জনের বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার নিন্দা জানাই। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘আগামীকাল (বুধবার) থেকে সব ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ শাটডাউন থাকবে। কোনও ক্লাস বা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। বিকাল ৫টায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের কাউন্সিল হলে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে একটি সভা হবে, সেখানেই পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

প্রকৌশল অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও ছাত্রনেতার অবস্থান দেখে আমরা বিস্মিত। তারা প্রকৌশল অনুষদের শিক্ষার্থীদের বিষয়ে সচেতন নন। অথচ আজকের হামলায় শুধু প্রকৌশল নয়, ঢাবিরও অন্তত চার জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমার দুই জুনিয়রের শরীরে গ্রেনেডের স্পিলিন্টার ঢুকে তারা হাসপাতালে ভর্তি আছে।’

এর আগে সন্ধ্যায় (সোয়া ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত) বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে বৈঠক করেন আন্দোলনকারীদের ১১ সদস্য প্রতিনিধি দল। তবে বৈঠকে কোনও অগ্রগতি হয়নি। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকালে আবারও সরকারের সঙ্গে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

চুয়েটে অন্তর্বর্তী সরকারের গায়েবানা জানাজা পড়লেন শিক্ষার্থীরা: অন্তর্বর্তী সরকারের গায়েবানা জানাজা পড়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৭ আগস্ট) মাগরিবের নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেট এলাকায় সড়কে এ গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করেন তারা। জানাজা শেষে বিশেষ মোনাজাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হেদায়েত কামনা করেছেন তারা। এরপরই দুই নম্বর গেট থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের ব্যানারে জিইসি মোড় থেকে মিছিল করে ২ নম্বর গেটের বিপ্লব উদ্যানের সামনে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই ছিলেন চুয়েটের শিক্ষার্থী। রাউজানের ক্যাম্পাস থেকে বাসযোগে শহরে এসে বিক্ষোভে অংশ নেন তারা। এ সময় তারা দাবি মেনে নিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা সড়কে অবস্থান করেন। মাগরিবের পর অন্তর্বর্তী সরকারের গায়েবানা জানাজার নামাজ আদায় করে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে সরে যান। ২ নম্বর গেট মোড় অবরোধ করায় আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।

ঢাকায় বুয়েট শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদসহ তিন দফা দাবির বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত না আসায় সরকারের গায়েবানা জানাজা পড়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এবং বেসরকারি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়, বললেন বুয়েট ভিসি: আন্দোলনরত প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান। বুধবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে তিনি বলেন, দাবি জানাতে যমুনা যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করেছে। সভ্য সমাজে এটা কোনোভাবে কাম্য নয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। ভিসি বলেন, শিক্ষার্থীদের কিছু যৌক্তিক দাবি নিয়ে বুয়েটসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যমুনার উদ্দেশে যাচ্ছিল। তখন পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে; যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তিনি আরও বলেন, পুলিশের টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড এবং রাবার বুলেটে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের বুয়েটের পক্ষ থেকে যতটা সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এখনও অনেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালে ভর্তি। আমাদের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করবো। অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয় ব্যবস্থা নিতে আমি ও প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করি। এই দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরি। দায়িত্ব নিয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে বসে কমিটি গঠন করতে এবং বিষয়টির সমাধান করতে তাদের অনুরোধ করি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা কমিটি মানি না বলে ওঠেন। পাশাপাশি ভুয়া ভুয়া স্লোগান দেন। ভিসি বলেন, কমিটির বিষয়ে যদি কারও কোনও বক্তব্য থাকে বলেন। আমরা কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করবো। এ সময় শিক্ষার্থীরা আবার বলে ওঠেন তাদের এখানে আসতে হবে। বুয়েট ভিসি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় অনেকেই ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা রাজপথে থেকে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

সানা/২৮/০৮/২০২৫