ঢাকা ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

আজারবাইজানের বিমান দুর্ঘটনা- দুঃখপ্রকাশ করলেও রাশিয়ার দোষ স্বীকার করেননি পুতিন

  • আপডেট সময় : ০৬:৫৪:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন- ছবি: এপি।

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার আকাশসীমায় আজারবাইজানের যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এ ঘটনায় রাশিয়াকে দোষী হিসেবে উল্লেখ করেননি তিনি। গত ২৫ ডিসেম্বরের দুর্ঘটনা নিয়ে প্রথমবার মন্তব্য করতে গিয়ে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন পুতিন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানায়, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পুতিন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পুতিন রাশিয়ার আকাশসীমায় এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর ও আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

দুঃখপ্রকাশের এই বিরল বার্তায় পুতিন স্বীকার করেছেন যে বিমানটি একাধিকবার চেচনিয়ার গ্রোজনি বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করেছিল।

পুতিন বলেন, দুঃখজনক এই ঘটনা রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করার সময় ঘটেছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, তখন গ্রোজনি, মোজডক এবং ভ্লাদিকাভকাজ শহরগুলো ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার শিকার হচ্ছিল এবং রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই আক্রমণগুলো প্রতিহত করছিল।

তবে ক্রেমলিনের এই বিবৃতিতে বিমানটি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে এমন সরাসরি কোনও স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়নি।

বিমানটি চেচনিয়ার রুশ অঞ্চলে অবতরণের চেষ্টা করার সময় রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার হামলার শিকার হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা পরে বিমানটিকে ক্যাস্পিয়ান সাগর পার হয়ে পথ পরিবর্তনে বাধ্য করে।

এরপর আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের এই বিমানটি কাজাখস্তানের আকতাউ অঞ্চলে জরুরি অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে বিমানটির ৬৭ আরোহীর ৩৮ জনই নিহত হন।

ফ্লাইটের বেশিরভাগ যাত্রী আজারবাইজানের নাগরিক ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে রাশিয়া, কাজাখস্তান এবং কিরগিজস্তানের যাত্রীও ছিলেন।

ধারণা করা হচ্ছে, যারা বেঁচে ছিলেন তারা বিমানের পেছনের অংশে বসে ছিলেন।

এদিকে শনিবার পুতিনের বার্তা প্রকাশের আগেই, আজারবাইজানের বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনস রাশিয়ার বেশিরভাগ শহরে ফ্লাইট স্থগিত করা শুরু করেছিল। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে এয়ারলাইনগুলো।

দেশে জেঁকে বসা বাশার আল-আসাদের স্বৈরশাসনের পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া স্বশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আহমেদ আল-শারা সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের প্রধান। গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর ক্ষমতায় আসেন তিনি।

আসাদের পতনের পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন আহমেদ আল-শারা। সৌদির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সিরিয়ায় নতুন একটি সংবিধানের খসড়া তৈরিতে তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আর দেশে ব্যাপক পরিবর্তন আনার জন্য আরও প্রায় এক বছর সময় লাগবে।

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ পরিবারের কয়েক দশকের শাসন ও ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান আন্দোলনে দেশটির বিভিন্ন বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছিলেন আহমেদ আল-শারা। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় সংলাপ সম্মেলন আহ্বান করে এইচটিএসকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে।’’

পররাষ্ট্র সম্পর্কের বিষয়ে আহমেদ আল-শারা বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সিরিয়ার কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে। সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের সময় আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল রাশিয়া এবং তারা আসাদকে আশ্রয় দিয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক অভিন্ন স্বার্থে কাজ করা উচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত-প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।

আহমেদ আল-শারা ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের একটি দল চলতি মাসে দামেস্ক সফর করেছেন। ওই সময় তারা হায়াত তাহরির আল-শামের এই নেতাকে বাস্তববাদী হিসাবে আখ্যা দেন। একই সঙ্গে এইচটিএসের এই নেতার মাথার দাম ওয়াশিংটন যে ১০ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেছিল, সেটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান। সূত্র: আল-আরাবিয়া, রয়টার্স।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

বাংলাদেশে উগ্র বাম কমিউনিস্টদের ভোট দিতে দেওয়া হয় ২৯ মিলিয়ন ডলার

আজারবাইজানের বিমান দুর্ঘটনা- দুঃখপ্রকাশ করলেও রাশিয়ার দোষ স্বীকার করেননি পুতিন

আপডেট সময় : ০৬:৫৪:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: রাশিয়ার আকাশসীমায় আজারবাইজানের যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত হওয়ার ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে এ ঘটনায় রাশিয়াকে দোষী হিসেবে উল্লেখ করেননি তিনি। গত ২৫ ডিসেম্বরের দুর্ঘটনা নিয়ে প্রথমবার মন্তব্য করতে গিয়ে শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছেন পুতিন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে জানায়, আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন পুতিন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পুতিন রাশিয়ার আকাশসীমায় এই দুঃখজনক ঘটনা ঘটার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছেন। নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর ও আন্তরিক সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।

দুঃখপ্রকাশের এই বিরল বার্তায় পুতিন স্বীকার করেছেন যে বিমানটি একাধিকবার চেচনিয়ার গ্রোজনি বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করেছিল।

পুতিন বলেন, দুঃখজনক এই ঘটনা রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাগুলো ইউক্রেনীয় ড্রোন প্রতিহত করার সময় ঘটেছে।

রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, তখন গ্রোজনি, মোজডক এবং ভ্লাদিকাভকাজ শহরগুলো ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার শিকার হচ্ছিল এবং রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই আক্রমণগুলো প্রতিহত করছিল।

তবে ক্রেমলিনের এই বিবৃতিতে বিমানটি রাশিয়ান ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে এমন সরাসরি কোনও স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়নি।

বিমানটি চেচনিয়ার রুশ অঞ্চলে অবতরণের চেষ্টা করার সময় রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার হামলার শিকার হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা পরে বিমানটিকে ক্যাস্পিয়ান সাগর পার হয়ে পথ পরিবর্তনে বাধ্য করে।

এরপর আজারবাইজান এয়ারলাইন্সের এই বিমানটি কাজাখস্তানের আকতাউ অঞ্চলে জরুরি অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এতে বিমানটির ৬৭ আরোহীর ৩৮ জনই নিহত হন।

ফ্লাইটের বেশিরভাগ যাত্রী আজারবাইজানের নাগরিক ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে রাশিয়া, কাজাখস্তান এবং কিরগিজস্তানের যাত্রীও ছিলেন।

ধারণা করা হচ্ছে, যারা বেঁচে ছিলেন তারা বিমানের পেছনের অংশে বসে ছিলেন।

এদিকে শনিবার পুতিনের বার্তা প্রকাশের আগেই, আজারবাইজানের বেশ কয়েকটি এয়ারলাইনস রাশিয়ার বেশিরভাগ শহরে ফ্লাইট স্থগিত করা শুরু করেছিল। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে এয়ারলাইনগুলো।

দেশে জেঁকে বসা বাশার আল-আসাদের স্বৈরশাসনের পতনের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া স্বশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা আহমেদ আল-শারা সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের প্রধান। গত ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহীদের তুমুল আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর ক্ষমতায় আসেন তিনি।

আসাদের পতনের পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সূচি সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন আহমেদ আল-শারা। সৌদির রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সিরিয়ায় নতুন একটি সংবিধানের খসড়া তৈরিতে তিন বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। আর দেশে ব্যাপক পরিবর্তন আনার জন্য আরও প্রায় এক বছর সময় লাগবে।

সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ পরিবারের কয়েক দশকের শাসন ও ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান আন্দোলনে দেশটির বিভিন্ন বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করেছিলেন আহমেদ আল-শারা। তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় সংলাপ সম্মেলন আহ্বান করে এইচটিএসকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হবে।’’

পররাষ্ট্র সম্পর্কের বিষয়ে আহমেদ আল-শারা বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সিরিয়ার কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে। সিরিয়ায় রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধের সময় আসাদের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিল রাশিয়া এবং তারা আসাদকে আশ্রয় দিয়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে তিনি বলেছিলেন, রাশিয়ার সঙ্গে সিরিয়ার সম্পর্ক অভিন্ন স্বার্থে কাজ করা উচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত-প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতৃত্বাধীন প্রশাসন সিরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে বলে প্রত্যাশা করছেন তিনি।

আহমেদ আল-শারা ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কূটনীতিকদের একটি দল চলতি মাসে দামেস্ক সফর করেছেন। ওই সময় তারা হায়াত তাহরির আল-শামের এই নেতাকে বাস্তববাদী হিসাবে আখ্যা দেন। একই সঙ্গে এইচটিএসের এই নেতার মাথার দাম ওয়াশিংটন যে ১০ মিলিয়ন ডলার ঘোষণা করেছিল, সেটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান। সূত্র: আল-আরাবিয়া, রয়টার্স।