কক্সবাজার সংবাদদাতা : ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিল আঘাত হানা প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় উপকূলীয় এলাকাগুলো। এতে প্রাণ হারান লাখো মানুষ আর উদ্বাস্তু হয় হাজারো পরিবার। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়া। সেই প্রলয়ংকরি ঘূর্নিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারে কুতুবদিয়া ও মহেশখালীর উপকূল। সেই রাত আর মৃত্যু উপত্যকার কথা মনে করতেই শিউরে ওঠেন উপকূলের মানুষ। কেননা আজও অরক্ষিতই রয়েছেন উপকূলের বাসিন্দারা। কক্সবাজারের বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার তাবালেরচর। বেড়িবাঁধের কিনারায় বসে সাগরের দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন পুতিলা বেগমে। ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ে এখানেই হারিয়েছেন ৪ সন্তান। ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে একে একে হারিয়ে গেছে ৩৪টি বছর। তবু ভুলতে পারছেন না সন্তান হারানোর বেদনা। প্রায় সময় বেড়িবাঁধের কিনারায় বসে সন্তানদের ফেরার প্রহর গুনেন। ঘূর্ণিঝড়ের কথা বর্ণনা দিতে গিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েন পুতিলা।
তিনি বলেন, ৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা কবরের পাড়ে গেলেও ভুলতে পারব না’। পুতিলা বেগমের মত ৩৪ বছর আগের প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড়ের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ আর প্রাণহাণির দুঃসহ স্মৃতি নিয়ে আবারো দিনটি হাজির হয়েছে উপকূলবাসীর কাছে। ভয়াল সে স্মৃতি আজো কাঁদায় পুরো উপকূলবাসীকে। নিহতদের লাশ, স্বজন হারানোদের আর্তচিৎকার আর বিলাপ বার বার ফিরে আসে তাদের জীবনে। একই এলাকার বাসিন্দা খুশিদা বেগম। এখনো সেদিনের স্মৃতি ভুলতে পারেননি তিনিও।
তার দাবি টেকসই বেড়িবাঁধ চাই। কুতুবদিয়া উত্তর ধুরুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, ষাটের দশকে ৬০ বর্গকিমি আয়তনের সাগরবেষ্টিত এই দ্বীপ ক্রমেই ছোট হয়ে আসছে। এখন তা মাত্র ১৭ বর্গকিমি। বাঁধ ভেঙে প্রতিবছরই সাগরে বিলীন হচ্ছে দ্বীপের ভূমি। বিগত সরকারের সময়ে বেড়িবাঁধ সংস্কারের নামে শুধু লুটপাট হয়েছে। তাই বর্তমান সরকারের কাছে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা( ইউএনও) ক্যাথোয়াইপ্রু মারমা বলেন, আসন্ন বর্ষা মৌসুমের কথা বিবেচনা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে কথা হয়েছে। দ্রুত সময়ে সমাধানের চেষ্টা চলছে। কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে বেড়িবাঁধ নির্মাণে ইতিমধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।