ঢাকা ০৪:৩৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫

আগুন নেভাতে পানি সংকট

  • আপডেট সময় : ১১:৪৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩
  • ১৬৭ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি আগুনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। বিশেষ করে আগুন নেভাতে পানি সংকটে পড়েন তারা। আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে পানি সংকট নিরসনে এখনও পর্যন্ত সমন্বিত কোনও উদ্যোগ নেই ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, রাজউক এবং ঢাকা ওয়াসা-সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে।
আগুন নেভানের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বড় সড়কের আশেপাশে জলাধার নির্মাণ, কিংবা ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহে ‘ওয়াটার হাইড্রেন্ট’ স্থাপন নিশ্চিত করতে নেই কোনও তৎপরতা। যদিও ভূমি অধিগ্রহণে জায়গা সংকটের বিষয়গুলো তুলে ধরছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এবং ঘনত্ব বিবেচনায় আগুন নেভাতে পানির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা না গেলে— কোনও পদক্ষেপ কাজে আসবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
একটি সংবাদসংস্থাকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা বলছেন-রাজধানীর রমনা, ধানমন্ডি, হাতিরঝিল এবং গুলশান-বনানীতে লেক থাকায় আশেপাশের এলাকাগুলোতে অগ্নিকা-ের ঝুঁকি কম। কিন্তু পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরু গলি ও জনঘনত্ব বেশি। এছাড়াও পুরান ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কেমিক্যাল রাখার কারণে আগুন লাগলে বেশ বেগ পেতে হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে পানি সংকটে পড়তে হয়। ফায়ার হ্যাজার্ড রাজধানীর যেকোনও জায়গায় এখন অ্যালার্মিং। কত জায়গায় রিজার্ভার করা সম্ভব এমন প্রশ্ন রাখেন তারা। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। নকশাবহির্ভূত ভবন বা মার্কেট নির্মাণের কারণে অনেক ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া অবৈধ বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের লাইনের বিষয় তো রয়েছেই।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, আগুন কখন কোথায় লাগবে এ বিষয়টি কেউ আগে থেকে বলতে পারে না। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসার একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আগুন লাগলে তারা পানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে। রাজধানীজুড়ে ওয়াসার ১৬০টি পানির পাম্প থেকে পানি নিতে পারবে ফায়ার সার্ভিস। দেখা গেছে, আগুনের স্থান দূরে হলে সেসব পাম্প থেকে পানি নেওয়া সম্ভব হয় না। সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসাকে যৌথভাবে রাজধানীর জনঘনত্ব বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জলাধার তৈরি এবং ওয়াটার হাইড্রেন্ট বা ফায়ার হাইড্রেন্ট তৈরি করতে হবে। কারণ, জায়গার বিষয়টি দেখভাল করে সিটি করপোরেশন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, কোথাও আগুন লাগলে, তা নেভাতে পানি সংকটের বিষয়টি অনুধাবন করে, এরই মধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জলাধার তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি করতে গেলে জমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। জননিরাপত্তায় সব বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় ওয়াসার শরণাপন্ন হলে ওয়াসা আশানুরূপভাবে পানি সরবরাহ করতে পারছে না। রাজধানীর কাকরাইল এবং লালমাটিয়া এই দুই জায়গা থেকে পানি সরবরাহ করতে পারছে তারা। এছাড়া অন্য কোথাও থেকে অগ্নি দুর্ঘটনা কিংবা অন্য বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
ঢাকা ওয়াসার দাবি, আগুন নেভাতে পানির সহায়তা দিতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে তাদের সমঝোতা চুক্তি রয়েছে। ঢাকা ওয়াসার ৯০০ ফায়ার স্ট্যান্ড রয়েছে, যেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস পানি সহায়তা নিতে পারছে। নির্ধারিত স্থানগুলো ছাড়া অন্যান্য জায়গায় আগুন লাগলে, ফায়ার সার্ভিসকে ঢাকা ওয়াসার গাড়ি দিয়ে পানি সরবরাহের মাধ্যমেও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা হয়। বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে ঢাকা ওয়াসার ২২টি গাড়ি পানি সরবরাহ করেছে।
রাজধানীতে ৯০০ ওয়াটার হাইড্রেন্ট রয়েছে দাবি করে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, ‘যেহেতু আমাদের শহরটা অপরিকল্পিত ও আগের তৈরি করা শহর, নতুন করে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো যায় কিনা, দমকল বাহিনী তা স্টাডি করছে। আমরা পূর্ণ সহায়তা করছি। যদি হাইড্রেন্ট বসানো সম্ভব হয়, তাহলে আমরা পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’ বিভিন্ন জায়গায় সরু রাস্তা রয়েছে, ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকলেও গাড়ি ঢুকতে পারবে না। হাইড্রেন্ট দিতে হবে বড় বড় রাস্তায় বলে জানান ওয়াসার এমডি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে আইন রয়েছে— ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এসব বিষয় পরিলক্ষিত হয় না। আগুন নিভাতে গিয়ে পানির সংকটে পড়তে হয় আমাদের। পানি সংকট কমাতে ফায়ার সার্ভিস যেসব জায়গায় আগুন লাগে, তার আশেপাশে কোনও লেক বা পুকুর থাকলে, সেখান থেকে পানি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পানি সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে, কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পানির রিজার্ভার থেকে পানি সরবরাহ ও বিভিন্ন জায়গায় ফায়ার হাইড্রেন্ট করে দেওয়ার বিষয়টি দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটি খতিয়ে দেখছে উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ বলেন, ‘নতুন করে জলাশয় তৈরির সুযোগ সীমিত। কারণ, কেউ জায়গা ছাড়তে চায় না। উন্মুক্ত জায়গাগুলো চিহ্নিত করে বিকল্প পন্থায় ওয়াটার রিজার্ভার করার বিষয়েও কাজ চলছে। অগ্নিদুর্ঘটনা মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে কাজ চলমান রয়েছে। পানি সরবরাহের জন্য ঢাকা ওয়াসার কাছে আমরা শরণাপন্ন হই। তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি— লালমাটিয়া এবং কাকরাইলে তাদের পানি সরবরাহের ব্যবস্থাপনা রয়েছে, ওয়াটার হাইড্রেন্ট রয়েছে।’
আগুন নেভাতে পানি সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি সংকট নিরসনে কার্যকর সমন্বিত ব্যবস্থা না নিলে কার্যকর কোনও সুফল পাবে না নগরবাসী। বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সময় আগুনের ঘটনা ঘটলে তৎপর হয়। তারপর তাদের তৎপরতায় ভাটা পড়ে। সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, রাজউক এবং ফায়ার সার্ভিসকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সুদানে সন্ত্রাসী হামলায় ৬ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী নিহত

আগুন নেভাতে পানি সংকট

আপডেট সময় : ১১:৪৮:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে বেশ কয়েকটি আগুনের ঘটনা নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের। বিশেষ করে আগুন নেভাতে পানি সংকটে পড়েন তারা। আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তবে পানি সংকট নিরসনে এখনও পর্যন্ত সমন্বিত কোনও উদ্যোগ নেই ফায়ার সার্ভিস, সিটি করপোরেশন, রাজউক এবং ঢাকা ওয়াসা-সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে।
আগুন নেভানের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বড় সড়কের আশেপাশে জলাধার নির্মাণ, কিংবা ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহে ‘ওয়াটার হাইড্রেন্ট’ স্থাপন নিশ্চিত করতে নেই কোনও তৎপরতা। যদিও ভূমি অধিগ্রহণে জায়গা সংকটের বিষয়গুলো তুলে ধরছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় এবং ঘনত্ব বিবেচনায় আগুন নেভাতে পানির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা না গেলে— কোনও পদক্ষেপ কাজে আসবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
একটি সংবাদসংস্থাকে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তারা বলছেন-রাজধানীর রমনা, ধানমন্ডি, হাতিরঝিল এবং গুলশান-বনানীতে লেক থাকায় আশেপাশের এলাকাগুলোতে অগ্নিকা-ের ঝুঁকি কম। কিন্তু পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় সরু গলি ও জনঘনত্ব বেশি। এছাড়াও পুরান ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় কেমিক্যাল রাখার কারণে আগুন লাগলে বেশ বেগ পেতে হয়। আগুন নেভাতে গিয়ে পানি সংকটে পড়তে হয়। ফায়ার হ্যাজার্ড রাজধানীর যেকোনও জায়গায় এখন অ্যালার্মিং। কত জায়গায় রিজার্ভার করা সম্ভব এমন প্রশ্ন রাখেন তারা। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। নকশাবহির্ভূত ভবন বা মার্কেট নির্মাণের কারণে অনেক ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়। এছাড়া অবৈধ বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের লাইনের বিষয় তো রয়েছেই।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, আগুন কখন কোথায় লাগবে এ বিষয়টি কেউ আগে থেকে বলতে পারে না। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে সম্প্রতি ঢাকা ওয়াসার একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। আগুন লাগলে তারা পানি সরবরাহ নিশ্চিত করবে। রাজধানীজুড়ে ওয়াসার ১৬০টি পানির পাম্প থেকে পানি নিতে পারবে ফায়ার সার্ভিস। দেখা গেছে, আগুনের স্থান দূরে হলে সেসব পাম্প থেকে পানি নেওয়া সম্ভব হয় না। সিটি করপোরেশন এবং ওয়াসাকে যৌথভাবে রাজধানীর জনঘনত্ব বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় জলাধার তৈরি এবং ওয়াটার হাইড্রেন্ট বা ফায়ার হাইড্রেন্ট তৈরি করতে হবে। কারণ, জায়গার বিষয়টি দেখভাল করে সিটি করপোরেশন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা বলছেন, কোথাও আগুন লাগলে, তা নেভাতে পানি সংকটের বিষয়টি অনুধাবন করে, এরই মধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় জলাধার তৈরির বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটি করতে গেলে জমি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। জননিরাপত্তায় সব বিষয় বিবেচনা করা হচ্ছে। বিভিন্ন সময় ওয়াসার শরণাপন্ন হলে ওয়াসা আশানুরূপভাবে পানি সরবরাহ করতে পারছে না। রাজধানীর কাকরাইল এবং লালমাটিয়া এই দুই জায়গা থেকে পানি সরবরাহ করতে পারছে তারা। এছাড়া অন্য কোথাও থেকে অগ্নি দুর্ঘটনা কিংবা অন্য বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছে না।
ঢাকা ওয়াসার দাবি, আগুন নেভাতে পানির সহায়তা দিতে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে তাদের সমঝোতা চুক্তি রয়েছে। ঢাকা ওয়াসার ৯০০ ফায়ার স্ট্যান্ড রয়েছে, যেখান থেকে ফায়ার সার্ভিস পানি সহায়তা নিতে পারছে। নির্ধারিত স্থানগুলো ছাড়া অন্যান্য জায়গায় আগুন লাগলে, ফায়ার সার্ভিসকে ঢাকা ওয়াসার গাড়ি দিয়ে পানি সরবরাহের মাধ্যমেও আগুন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা হয়। বঙ্গবাজারের আগুন নেভাতে ঢাকা ওয়াসার ২২টি গাড়ি পানি সরবরাহ করেছে।
রাজধানীতে ৯০০ ওয়াটার হাইড্রেন্ট রয়েছে দাবি করে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেন, ‘যেহেতু আমাদের শহরটা অপরিকল্পিত ও আগের তৈরি করা শহর, নতুন করে ফায়ার হাইড্রেন্ট বসানো যায় কিনা, দমকল বাহিনী তা স্টাডি করছে। আমরা পূর্ণ সহায়তা করছি। যদি হাইড্রেন্ট বসানো সম্ভব হয়, তাহলে আমরা পানি দেওয়ার ব্যবস্থা করবো।’ বিভিন্ন জায়গায় সরু রাস্তা রয়েছে, ফায়ার হাইড্রেন্ট থাকলেও গাড়ি ঢুকতে পারবে না। হাইড্রেন্ট দিতে হবে বড় বড় রাস্তায় বলে জানান ওয়াসার এমডি।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে আইন রয়েছে— ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে এসব বিষয় পরিলক্ষিত হয় না। আগুন নিভাতে গিয়ে পানির সংকটে পড়তে হয় আমাদের। পানি সংকট কমাতে ফায়ার সার্ভিস যেসব জায়গায় আগুন লাগে, তার আশেপাশে কোনও লেক বা পুকুর থাকলে, সেখান থেকে পানি নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। পানি সমস্যা সমাধানে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে, কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পানির রিজার্ভার থেকে পানি সরবরাহ ও বিভিন্ন জায়গায় ফায়ার হাইড্রেন্ট করে দেওয়ার বিষয়টি দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটি খতিয়ে দেখছে উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ বলেন, ‘নতুন করে জলাশয় তৈরির সুযোগ সীমিত। কারণ, কেউ জায়গা ছাড়তে চায় না। উন্মুক্ত জায়গাগুলো চিহ্নিত করে বিকল্প পন্থায় ওয়াটার রিজার্ভার করার বিষয়েও কাজ চলছে। অগ্নিদুর্ঘটনা মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে কাজ চলমান রয়েছে। পানি সরবরাহের জন্য ঢাকা ওয়াসার কাছে আমরা শরণাপন্ন হই। তাদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি— লালমাটিয়া এবং কাকরাইলে তাদের পানি সরবরাহের ব্যবস্থাপনা রয়েছে, ওয়াটার হাইড্রেন্ট রয়েছে।’
আগুন নেভাতে পানি সংকটের বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি সংকট নিরসনে কার্যকর সমন্বিত ব্যবস্থা না নিলে কার্যকর কোনও সুফল পাবে না নগরবাসী। বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন সময় আগুনের ঘটনা ঘটলে তৎপর হয়। তারপর তাদের তৎপরতায় ভাটা পড়ে। সিটি করপোরেশন, ঢাকা ওয়াসা, রাজউক এবং ফায়ার সার্ভিসকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা কাটিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।’