ঢাকা ০৭:১২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫

আখেরি মোনাজাতে লাখো মুসল্লি, শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা

  • আপডেট সময় : ০২:০৪:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • ৭২ বার পড়া হয়েছে

গাজীপুর প্রতিনিধি : ইজতেমায় ৬৬ দেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেছেন। যেখানে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ময়দানের আশপাশ। মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ মোনাজাত পরিচালনা করেছেন। মোনাজাত শেষে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ। মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং ইসলামের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। এ ছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম জানান, রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টায় মোনাজাত শুরু হয়ে পৌনে বারোটার দিকে শেষ হয়। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
আখেরি মোনাজাতে নিজের আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লি প্রার্থনা করেন। ২৬ মিনিটের মোনাজাতে দুই হাত ওপরে তুলে লাখ লাখ মুসল্লি বারবার বলছিলেন, ‘আমিন আমিন।’ মোনাজাতের সময় পুরো টঙ্গী এলাকা ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
গতকাল রোববার ফজরের পরে বয়ানে ছিলেন মুফতি মাকসুদ (ভারত)। বাংলা তরজমা করেছেন মাওলানা আব্দুল্লাহ। বয়ানের পরেই হেদায়েতের কথা বলেছেন এবং ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ (ভারত)। বাংলা তরজমা করেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ।
১ম পর্বের ইজতেমায় ২০ মুসল্লি ২য় পর্বের ইজতেমা ৭ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। ১ম পর্বে ৭২টি দেশ থেকে ৮ হাজার এবং ২য় পর্বে ৬৫ দেশের ৯ হাজার ২৩১ জন বিদেশি মেহমান অংশগ্রহণ করেছেন।
মহাসড়কে বসে মোনাজাতে অংশ নেওয়া মুসল্লি রেজাউল করিম বলেন, ‘মোনাজাতের আগে বয়ান শুনেছি। হুজুর ফজিলত ও ইমান-আমলের কথা বলেছেন। তিনি চিল্লায় সাথী ভাইদের উদ্দেশে ইমান-আমল পালন করা বিষয়ে কথা বলেছেন। যারা সূরা ফাতেহা ভালোভাবে জানেন না, তাদের সূরা ফাতেহা শিখিয়েছেন।’
তিনি আরও জানান, অজু করার সময় তার স্মার্ট ফোন চুরি হয়ে গিয়েছে। তাই বাড়িতে যোগাযোগ সমস্যা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় পর্বে ১৪ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ের মধ্যে একজন শ্রীলংকান নাগরিক রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের বাংলাদেশি মেয়ে শারমিন আক্তারকে যৌতুকবিহীন বিয়ে করেন। ভারতের দিল্লি মারকাজের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ ময়দানে মাশোয়ারার কামরায় যৌতুকবিহীন বিয়ে পড়ান। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় ‘মোহর ফাতেমি’র নিয়মানুযায়ী। এ নিয়ম অনুযায়ী মোহরানা ধরা হয় দেড়শ তোলা রূপা বা এর সমমূল্যের অর্থ। মেহমানদের মধ্যে আরবি ভাষাভাষীর ৭৩২ জন, ইংরেজি ভাষাভাষীর রয়েছেন ২ হাজার ৬১৫ জন, উর্দু ভাষাভাষীর ২ হাজার ৬৬২ জন। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের ২ হাজার ৭৫৯ জন এবং অন্যান্য ভাষাভাষীর ২৭৩ জন ইজতেমায় অংশ নেন। এ ছাড়া ১৯০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। ভারত থেকে এবারের ইজতেমায় সর্বাধিক মেহমান এসেছেন। এ বছর ভারত থেকে ৪ হাজার ৬০১ জন বিদেশি মেহমান অংশ নিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়া থেকে ৭৭৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ৫৮২ জন, নেপাল থেকে ৪৯০ জন, শ্রীলঙ্কা থেকে ৪৭৪ জন, থাইল্যান্ড থেকে ২৫৫ জন, আমেরিকা থেকে ৮৫ জনসহ বিশ্বের ৬৫টি দেশের মোট ৯২৩১ জন বিদেশি মেহমান অংশ নেন।
টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রাকিবুল ইসলাম বলেন, শিডিউল অনযায়ী ট্রেন চলবে। কুমিল্লা, আখাউড়া ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে। মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে ৫ মিনিট যাত্রাবিরতি করবে। মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমার আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কলকারখানাসহ অফিস ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে মন্ত্রিপরিষদের একাধিক সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেছেন। গত ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার (যোবায়ের আহমদ) প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আখেরি মোনাজাতে লাখো মুসল্লি, শান্তি-সমৃদ্ধি কামনা

আপডেট সময় : ০২:০৪:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

গাজীপুর প্রতিনিধি : ইজতেমায় ৬৬ দেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি আখেরি মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেছেন। যেখানে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে ময়দানের আশপাশ। মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ মোনাজাত পরিচালনা করেছেন। মোনাজাত শেষে ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে টঙ্গীর তুরাগ তীর ও ইজতেমা ময়দানের আশপাশ। মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর হেদায়েত, ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধি, ইহকাল ও পরকালের নাজাত এবং ইসলামের দাওয়াত সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার জন্য দোয়া করা হয়। এ ছাড়া সব ধরনের গুনাহ থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়।
বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মিডিয়া সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সায়েম জানান, রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সোয়া ১১টায় মোনাজাত শুরু হয়ে পৌনে বারোটার দিকে শেষ হয়। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ৫৭তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
আখেরি মোনাজাতে নিজের আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য দুই হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে সন্তুষ্টি অর্জনের আশায় উপস্থিত লাখ লাখ মুসল্লি প্রার্থনা করেন। ২৬ মিনিটের মোনাজাতে দুই হাত ওপরে তুলে লাখ লাখ মুসল্লি বারবার বলছিলেন, ‘আমিন আমিন।’ মোনাজাতের সময় পুরো টঙ্গী এলাকা ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
গতকাল রোববার ফজরের পরে বয়ানে ছিলেন মুফতি মাকসুদ (ভারত)। বাংলা তরজমা করেছেন মাওলানা আব্দুল্লাহ। বয়ানের পরেই হেদায়েতের কথা বলেছেন এবং ও দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ (ভারত)। বাংলা তরজমা করেন মাওলানা মনির বিন ইউসুফ।
১ম পর্বের ইজতেমায় ২০ মুসল্লি ২য় পর্বের ইজতেমা ৭ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। ১ম পর্বে ৭২টি দেশ থেকে ৮ হাজার এবং ২য় পর্বে ৬৫ দেশের ৯ হাজার ২৩১ জন বিদেশি মেহমান অংশগ্রহণ করেছেন।
মহাসড়কে বসে মোনাজাতে অংশ নেওয়া মুসল্লি রেজাউল করিম বলেন, ‘মোনাজাতের আগে বয়ান শুনেছি। হুজুর ফজিলত ও ইমান-আমলের কথা বলেছেন। তিনি চিল্লায় সাথী ভাইদের উদ্দেশে ইমান-আমল পালন করা বিষয়ে কথা বলেছেন। যারা সূরা ফাতেহা ভালোভাবে জানেন না, তাদের সূরা ফাতেহা শিখিয়েছেন।’
তিনি আরও জানান, অজু করার সময় তার স্মার্ট ফোন চুরি হয়ে গিয়েছে। তাই বাড়িতে যোগাযোগ সমস্যা হয়ে গেছে। দ্বিতীয় পর্বে ১৪ যুগলের যৌতুকবিহীন বিয়ের মধ্যে একজন শ্রীলংকান নাগরিক রয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের বাংলাদেশি মেয়ে শারমিন আক্তারকে যৌতুকবিহীন বিয়ে করেন। ভারতের দিল্লি মারকাজের মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বড় ছেলে মাওলানা ইউসুফ বিন সাদ ময়দানে মাশোয়ারার কামরায় যৌতুকবিহীন বিয়ে পড়ান। বিয়েতে মোহরানা ধার্য করা হয় ‘মোহর ফাতেমি’র নিয়মানুযায়ী। এ নিয়ম অনুযায়ী মোহরানা ধরা হয় দেড়শ তোলা রূপা বা এর সমমূল্যের অর্থ। মেহমানদের মধ্যে আরবি ভাষাভাষীর ৭৩২ জন, ইংরেজি ভাষাভাষীর রয়েছেন ২ হাজার ৬১৫ জন, উর্দু ভাষাভাষীর ২ হাজার ৬৬২ জন। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের ২ হাজার ৭৫৯ জন এবং অন্যান্য ভাষাভাষীর ২৭৩ জন ইজতেমায় অংশ নেন। এ ছাড়া ১৯০ জন বিদেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। ভারত থেকে এবারের ইজতেমায় সর্বাধিক মেহমান এসেছেন। এ বছর ভারত থেকে ৪ হাজার ৬০১ জন বিদেশি মেহমান অংশ নিয়েছেন। ইন্দোনেশিয়া থেকে ৭৭৯ জন, মালয়েশিয়া থেকে ৫৮২ জন, নেপাল থেকে ৪৯০ জন, শ্রীলঙ্কা থেকে ৪৭৪ জন, থাইল্যান্ড থেকে ২৫৫ জন, আমেরিকা থেকে ৮৫ জনসহ বিশ্বের ৬৫টি দেশের মোট ৯২৩১ জন বিদেশি মেহমান অংশ নেন।
টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার রাকিবুল ইসলাম বলেন, শিডিউল অনযায়ী ট্রেন চলবে। কুমিল্লা, আখাউড়া ও ময়মনসিংহসহ বিভিন্ন রুটে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা রয়েছে। মোনাজাতের আগে ও পরে সব ট্রেন টঙ্গী স্টেশনে ৫ মিনিট যাত্রাবিরতি করবে। মোনাজাত উপলক্ষে ইজতেমার আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও কলকারখানাসহ অফিস ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাতে মন্ত্রিপরিষদের একাধিক সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিভাগের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেছেন। গত ২ থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ইজতেমার (যোবায়ের আহমদ) প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।