ঢাকা ০৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ

  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
  • ৫ বার পড়া হয়েছে

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠে রাজধানীর শাহবাগ মোড় -ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ মোড়।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী সড়ক থেকে সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই অবরোধে যেন ফিরে এসেছে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের উত্তাল দিনগুলো, যা ‘জুলাই আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

এ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা জানান, যতক্ষণ ঘোষণা আসবে না ততক্ষণ শাহবাগ ছেড়ে কেউ যাবে না।

এদিন বিকেল সাড়ে চারটার পর থেকেই জামায়াত-শিবির, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাদের কণ্ঠে ছিল আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান।

তার মধ্যে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ ‘নাহিদ, আক্তার আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘একটা একটা ছাত্রলীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও ঘুরিয়ে দাও’, ‘২৪ বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের হাতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন।

এদিকে অবরোধের ফলে শাহবাগের চারপাশের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। সায়েন্সল্যাব, টিএসসি এবং বাংলামোটরের দিকে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পার্শ্ববর্তী সড়কে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশ শেষে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ থেকে জন্ম নেওয়া ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজনৈতিক পালাবদলের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। তবে সময় গড়াতেই আবারও সরব হয়ে ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠন।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ব্যবস্থাপনা চললেও, আওয়ামী লীগের ‘সাংগঠনিক অপরাধ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগ তুলে এবার দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজপথে নেমেছে এনসিপিসহ বিভিন্ন সংগঠন। ৯ মাস আগের আন্দোলনের সূত্র ধরে নতুন করে গতি পেয়েছে এই প্রতিবাদ, যা রাজধানীর রাজপথে ফের চাঙ্গা করেছে রাজনৈতিক উত্তাপ।

খুলনায় ব্লকেড: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে খুলনার শিববাড়ি মোড় ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র ও যুব আন্দোলন, রেড জুলাইসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

ব্লকেড ও অবস্থান কর্মসূচিতে বলা হয়, ‘এই বাংলায় আওয়ামী লীগের ঠিকানা হবে না। আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন সন্ত্রাসী সংগঠন। এই সন্ত্রাসী সংগঠন দীর্ঘ ১৬ বছর ছাত্র-জনতার উপরে অন্যায়-অত্যাচার করেছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের এই বাংলায় থাকার অধিকার শেষ হয়ে গেছে। অতি দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’ এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আওয়ামী লীগ, ব্যান্ড ব্যান্ড’সহ নানা স্লোগান দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা।

উত্তরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে ‘ব্লকেড’: রাজনীতির মাঠ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করেছে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরা। শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উত্তরা বিএসএ সেন্টারের সামনের সড়কে তারা এ বিক্ষোভ শুরু করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, বিক্ষোভের কারণে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ‘জুলাই রেভুলোশনারি এলায়েন্স’ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে উত্তরা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। জানা গেছে, বিগত ১৬ বছর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে- এমন অভিযোগ তুলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী, শিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। সন্ধ্যার দিকে উত্তরা বিএনএ সেন্টারের সামনে জড়ো হতে শুরু করে আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রথমে উত্তরা পশ্চিম পাশের সড়ক, পরে পূর্ব পাশের সড়ক অবরোধ করে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। আজকের উত্তরা ব্লকেড একদিনের ঘটনা নয়- এটি একটি দীর্ঘ সংগ্রামের অংশ। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে দেশে কোনোদিন সুশাসন ফিরবে না।’

আরেক শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী কণ্ঠ দমন এবং রাজনৈতিক বৈষম্যের প্রতিবাদে আমরা রাজপথে নেমেছি। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।’

এদিকে ব্লকেডকে ঘিরে উত্তরায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, যেকোনও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে তারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে উত্তাল শাহবাগ

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ মোড়।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের পার্শ্ববর্তী সড়ক থেকে সমাবেশ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করলে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এই অবরোধে যেন ফিরে এসেছে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়ের উত্তাল দিনগুলো, যা ‘জুলাই আন্দোলন’ নামে পরিচিত।

এ সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক তালাত মাহমুদ রাফিসহ এনসিপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত রাজধানীর শাহবাগ মোড় ছাড়বেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা জানান, যতক্ষণ ঘোষণা আসবে না ততক্ষণ শাহবাগ ছেড়ে কেউ যাবে না।

এদিন বিকেল সাড়ে চারটার পর থেকেই জামায়াত-শিবির, হেফাজতে ইসলাম, গণঅধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ ছাত্র-জনতা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নিতে শুরু করেন। তাদের কণ্ঠে ছিল আওয়ামী লীগ বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান।

তার মধ্যে ‘ব্যান করো ব্যান করো, আওয়ামী লীগ ব্যান করো’, ‘দিল্লি না, ঢাকা, ঢাকা-ঢাকা’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘গোলামি না আজাদী, আজাদী আজাদী’ ‘নাহিদ, আক্তার আসছে, রাজপথ কাঁপছে’, ‘একটা একটা ছাত্রলীগ ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর’, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা, ভেঙে দাও ঘুরিয়ে দাও’, ‘২৪ বাংলায়, আওয়ামী লীগের ঠাঁই নাই’, ‘লীগ ধর, জেলে ভর’, প্রভৃতি বলে স্লোগান দেওয়া হচ্ছে।
আন্দোলনকারীদের হাতে দেখা যায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে লেখা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন।

এদিকে অবরোধের ফলে শাহবাগের চারপাশের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। সায়েন্সল্যাব, টিএসসি এবং বাংলামোটরের দিকে যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে।

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্যোগে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের পার্শ্ববর্তী সড়কে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেই সমাবেশ শেষে এই অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে আন্দোলনকারীরা।

প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ থেকে জন্ম নেওয়া ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর রাজনৈতিক পালাবদলের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। তবে সময় গড়াতেই আবারও সরব হয়ে ওঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠন।

অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে ব্যবস্থাপনা চললেও, আওয়ামী লীগের ‘সাংগঠনিক অপরাধ ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের’ অভিযোগ তুলে এবার দলটিকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজপথে নেমেছে এনসিপিসহ বিভিন্ন সংগঠন। ৯ মাস আগের আন্দোলনের সূত্র ধরে নতুন করে গতি পেয়েছে এই প্রতিবাদ, যা রাজধানীর রাজপথে ফের চাঙ্গা করেছে রাজনৈতিক উত্তাপ।

খুলনায় ব্লকেড: আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে খুলনার শিববাড়ি মোড় ব্লকেড কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার (৯ মে) দুপুরে এ কর্মসূচি শুরু হয়। এতে এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী ছাত্র ও যুব আন্দোলন, রেড জুলাইসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

ব্লকেড ও অবস্থান কর্মসূচিতে বলা হয়, ‘এই বাংলায় আওয়ামী লীগের ঠিকানা হবে না। আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন সন্ত্রাসী সংগঠন। এই সন্ত্রাসী সংগঠন দীর্ঘ ১৬ বছর ছাত্র-জনতার উপরে অন্যায়-অত্যাচার করেছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের এই বাংলায় থাকার অধিকার শেষ হয়ে গেছে। অতি দ্রুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।’ এ সময় ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘আওয়ামী লীগ, ব্যান্ড ব্যান্ড’সহ নানা স্লোগান দেন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা।

উত্তরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে ‘ব্লকেড’: রাজনীতির মাঠ থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়ক অবরোধ করেছে জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সঙ্গে যুক্তরা। শুক্রবার (৯ মে) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উত্তরা বিএসএ সেন্টারের সামনের সড়কে তারা এ বিক্ষোভ শুরু করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, বিক্ষোভের কারণে সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ‘জুলাই রেভুলোশনারি এলায়েন্স’ নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে উত্তরা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়। জানা গেছে, বিগত ১৬ বছর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে- এমন অভিযোগ তুলে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামী, শিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। সন্ধ্যার দিকে উত্তরা বিএনএ সেন্টারের সামনে জড়ো হতে শুরু করে আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রথমে উত্তরা পশ্চিম পাশের সড়ক, পরে পূর্ব পাশের সড়ক অবরোধ করে ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর ধরে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে একটি ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। আজকের উত্তরা ব্লকেড একদিনের ঘটনা নয়- এটি একটি দীর্ঘ সংগ্রামের অংশ। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করলে দেশে কোনোদিন সুশাসন ফিরবে না।’

আরেক শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধী কণ্ঠ দমন এবং রাজনৈতিক বৈষম্যের প্রতিবাদে আমরা রাজপথে নেমেছি। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।’

এদিকে ব্লকেডকে ঘিরে উত্তরায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, যেকোনও অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি এড়াতে তারা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করছে।