প্রত্যাশা ডেস্ক: স্বর্ণের দাম প্রথমবারের মতো বুধবার (৮ অক্টোবর) আউন্সপ্রতি চার হাজার ডলার ছাড়িয়ে গেছে। লন্ডন সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে স্পট গোল্ডের দাম বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৩৯ দশমিক ১০ ডলারে, যা আগের দিনের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেশি।
ডিসেম্বর সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচারস স্বর্ণের দামও ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে হয় চার হাজার ৬১ দশমিক ৮০ ডলার। স্বর্ণের পাশাপাশি রুপার দামও ২ শতাংশ বেড়ে ৪৮ দশমিক ৭৬ ডলার হয়, যা এর সর্বোচ্চ রেকর্ড ৪৯ দশমিক ৫১ ডলারের কাছাকাছি।
বিশ্বব্যাপী অস্থিতিশীল সময়ে স্বর্ণ ঐতিহ্যগতভাবে ‘মূল্য সংরক্ষণের’ মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৫৪ শতাংশ, ২০২৪ সালে যা ছিল ২৭ শতাংশ। এটি চলতি বছরের সবচেয়ে ভালো পারফর্ম করা সম্পদের মধ্যে অন্যতম, যা শেয়ারবাজার, বিটকয়েন ও তেলের চেয়ে এগিয়ে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সুদহার কমানোর প্রত্যাশা, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বর্ণ কেনা, স্বর্ণ-ভিত্তিক ইটিএফে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং দুর্বল ডলার-এই সব মিলেই এই প্রবণতা তৈরি করেছে।
স্টোনএক্সের বিশ্লেষক রোনা ও’কনেল বলেন, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি চলমান শাটডাউন পরিস্থিতি বাজারে ঝুঁকি এড়াতে স্বর্ণের দিকে মনোযোগ বাড়িয়েছে। মার্কিন সরকারে অচলাবস্থার অষ্টম দিনে পৌঁছেছে বুধবারে, ফলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীরা বিকল্প সূত্রের ওপর নির্ভর করছেন-ফেডের পরবর্তী ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহার কমানোর সম্ভাবনা যাচাইয়ের জন্য।
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ, ইউক্রেন সংঘাত, ফ্রান্স ও জাপানের রাজনৈতিক অস্থিরতা-সবই নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বাড়াচ্ছে। পাঁচ বছর পর আবারও উন্নত দেশগুলোর স্বর্ণ-ভিত্তিক ইটিএফে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা এই উত্থানের অন্যতম কারণ বলে জানিয়েছে ডয়েচে ব্যাংকের বিশ্লেষক মাইকেল হসুয়ে।
গোল্ডম্যান স্যাকস ও ইউবিএস উভয়ই ২০২৬ সাল পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে, কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্রয়, ইটিএফ বিনিয়োগ ও কম সুদহার অব্যাহত থাকতে পারে।
উইজডমট্রির বিশ্লেষক নিতেশ শাহ বলেন, আমরা ভেবেছিলাম স্বর্ণ চার হাজার ডলারে পৌঁছাবে বছরের শেষে। আমরা ধারণা করছি, ২০২৬ সালের তৃতীয় প্রান্তিকের শেষে এটি চার হাজার ৫৩০ ডলার প্রতি আউন্সে পৌঁছাবে।
ইউবিএসের বিশ্লেষক জিওভানি স্টাউনোভো বলেন, বর্তমানে ট্রাম্প প্রশাসন নিম্ন সুদহার চায়, যা স্বর্ণের প্রতি আকর্ষণ বাড়িয়ে তুলবে। ফেড যদি কঠোর অবস্থান না নেয়, তাহলে এই গতি অব্যাহত থাকবে।
একই প্রবণতা অন্য মূল্যবান ধাতুতেও দেখা গেছে-প্লাটিনাম বেড়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ (এক হাজার ৬৪৬ দশমিক ১৯ ডলার), আর প্যালাডিয়ামের দাম বেড়েছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ (এক হাজার ৩৯৩ দশমিক ০৬ ডলার)। তথ্যসূত্র: রয়টার্স
সানা/আপ্র/০৮/১০/২০২৫