নিজস্ব প্রতিবেদক : আইনি ফি হিসেবে সম্প্রতি বিপুল টাকা নেওয়া–সম্পর্কিত বিতর্কসহ অন্যান্য বিতর্কিত বিষয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ অনুসন্ধান করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ও বার কাউন্সিলের সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. জাকির হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন। এক আইনজীবীর আইনি ফি হিসেবে বিপুল টাকা নেওয়া–সম্পর্কিত বিতর্কসহ অন্যান্য বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম আশরাফুল ইসলাম ওই রিট করেন। আর যে আইনজীবীকে নিয়ে অভিযোগ, তাঁর নাম মো. ইউসুফ আলী। আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী এম আশরাফুল ইসলাম নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ রেজাউল হক। গ্রামীণ টেলিকম ও এর প্রতিষ্ঠাতা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে লভ্যাংশের বকেয়া পাওনার দাবিকে কেন্দ্র করে গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন ও চাকরিচ্যুত শ্রমিক কর্মচারীরা মামলা করেন। শ্রমিক কর্মচারীদের আইনজীবী মো. ইউসুফ আলী। লভ্যাংশের বকেয়া পাওনার দাবি ও পরিশোধ নিয়ে পরে দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। এ নিয়ে আইনজীবী ইউসুফ আলী শ্রমিক কর্মচারীদের কাছ থেকে ১২ কোটি টাকা ফি নিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। আদালত থেকে বেরিয়ে আইনজীবী এম আশরাফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আইনজীবী ইউসুফ আলী গ্রামীণ ফোনের আইনজীবী হওয়া সত্ত্বেও কোম্পানিটির স্বার্থের বিরুদ্ধে গিয়ে শ্রমিক কর্মচারীদের পক্ষে মামলা লড়েছেন, যা বার কাউন্সিল আইনের লঙ্ঘন। ইউসুফ আলীর ১২ কোটি টাকা ফি নেওয়া ও প্রেস ব্রিফিংয়ে বিরূপ মন্তব্য করার বিষয়টির অনুসন্ধান চেয়েছি। কেননা, বার কাউন্সিল আইন অনুসারে ভুক্তভোগী বিচারপ্রার্থীদের কাছ থেকে তাঁদের সম্পত্তি বা মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো সুবিধা, এমনকি যেকোনো পরিমাণ ফি আইনজীবীরা নিতে পারেন না। শুনানি নিয়ে আদালত ওই রুল দিয়েছেন। বার কাউন্সিল ও বার কাউন্সিলের সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।’ এর আগে ৩ জুলাই এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ইউসুফ আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ ১২ কোটি টাকার কথা যে বলা হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ কাল্পনিক পরিমাণ। তবে আমি বড় অঙ্কের ফি পেয়েছি।’ তাঁর চেম্বার এবং নিজের কয়েকটি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে বলে সেদিন জানান তিনি। এ অবস্থায় মো. ইউসুফ আলীর বিপুল টাকা ফি নেওয়া সম্পর্কিত বিতর্কসহ অন্যান্য বিষয়ে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে গতকাল রিট করেন আইনজীবী এম আশরাফুল ইসলাম।
আইনজীবীর ‘১২ কোটি টাকা ফি’, অনুসন্ধানের নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
ট্যাগস :
আইনজীবীর ‘১২ কোটি টাকা ফি’
জনপ্রিয় সংবাদ