ঢাকা ০২:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৫ অগাস্ট ২০২৫

আইডিআরএ চেয়ারম্যানের দুর্নীতি উদঘাটন

  • আপডেট সময় : ১২:২২:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ মে ২০২২
  • ৯০ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ সংবাদদাতা : বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের ৪০ কোটি ৮১ লাখ টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এই প্রমাণ পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) আদালতে এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিএফআইইউ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোশাররফ হোসেনের নিজের ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৫টি ব্যাংকে ৩০টি অ্যাকাউন্ট পরিচালনার তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৮টি অ্যাকাউন্টে এই টাকা জমা হয়েছে।এক্ষেত্রে আয় ও ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি নেই। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. এজারুল হক আকন্দের দ্বৈত বেঞ্চে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। বিএফআইইউ সন্দেহ করছে-দুর্নীতি, ঘুস এবং অবৈধ শেয়ার লেনদেন হতে পারে। এবিষয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে আরও তদন্ত করছে সংস্থাটি। আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে গেছে তার অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত অভিযোগ। একদিকে তিনি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) কোটা সুবিধা নিয়ে শেয়ার কিনেন; অন্যদিকে তিনি বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান হয়েও বিভিন্ন বীমা কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন। এমন কিছু কোম্পানির শেয়ারে তার বিনিয়োগ ছিল, যেগুলোর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল এবং এই দর বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি বেড়েছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। আইডিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদন বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে জমা দেওয়া বিএফআইইউর তথ্যে এসব প্রতিবেদনের সত্যতা মিলেছে। জানা গেছে, আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী নামের একজন বিনিয়োগকারী ড. মোশাররফের অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা করলে আদালত বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিএফআইইউকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে বিএফআইইউ দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই প্রতিবেদন দেয়। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়েরও প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। তবে মন্ত্রণালয় রিপোর্ট না দিয়ে আদালতে সময়ের আবেদন করে। আদালত তাদের ১৬ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে দেওয়া বিএফআইইউর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ থেকে ২০২১ সালের তথ্য তারা বিশ্লেষণ করেছে। এতে ৫টি ব্যাংকে ড. মোশাররফ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩০টি অ্যাকাউন্ট পাওয়া যায়। ব্যাংকগুলো হলো-ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক। এরমধ্যে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ড. মোশাররফ হোসেনের নিজের নামে ১০১১১০০০৪১১৯০ নম্বর চলতি হিসাবে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা জমা হয়। নিজ নামে একই ব্যাংকের আরেকটি অ্যাকাউন্ট ১০১১০৩০১৩৪৫৯৮ নম্বরে ১ কোটি ০২ লাখ টাকা জমা হয়েছে। ড. মোশাররফের নিজ নামে প্রাইম ব্যাংকের ২১৪৮৪১৫০০৮০৬৫ নম্বর অ্যাকাউন্টে ৩০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। তার স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়ার নামে প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৪টি অ্যাকাউন্টে ৮০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। একই ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে স্ত্রীর অনুকূলে মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ অ্যান্ড কোম্পানি নামে ৫০ লাখ টাকার এফডিআরের তথ্য মিলেছে। এছাড়াও মোশাররফ হোসেনের কোম্পানি গুলশান ভ্যালি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের নামে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ০০৫৩২০০০০৬৪ নম্বর অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে লাভস অ্যান্ড লাইভ কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের ১৩১০০০০২৭৭৭ নম্বর অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও লাভস অ্যান্ড লাইভের ১ কোটি ৮৭ লাখ, গুলশান ভ্যালি অ্যাগ্রোর আরও ৩টি অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ১৩ লাখ, ৪ কোটি ২৮ লাখ ও ৩ কোটি ৩৩ লাখ এবং কমার্স ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে কাশফুল ডেভেলপার্স লিমিটেডের নামে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ও ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকার তথ্য পেয়েছে। মোশাররফ হোসেন ও তার সম্পৃক্ত নামে মোট ৫টি কোম্পানির তথ্য পায় বিএফআইইউ। এগুলো হলো-লাভস অ্যান্ড লাইভ, গুলশান ভ্যালি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এবং কাশফুল ডেভেলপার্স বা (কেডিএল), কোয়ান্টাম প্লাস ফাউন্ডেশন, মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ অ্যান্ড কোম্পানি। এরমধ্যে প্রথম তিনটি কোম্পানিতে কর্মচারীদের কল্যাণের জন্য ৬টি গ্রাচ্যুইটি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করেন ড. মোশাররফ। ফান্ড পরিচালনার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেন। সেখানে চেয়ারম্যান তিনি নিজে, সেক্রেটারি স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া এবং আরও রয়েছেন তার শাশুড়ি লাভলি ইয়াসমিন। এই ৬টি ফান্ডে ৩২ কোটি ৯১ লাখ টাকা জমার তথ্য মিলেছে। যা প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এখানে ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা ইএফটি, ক্লিয়ারিং এবং পে অর্ডারের মাধ্যমে জমা হয়। অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করা হয়। আবার শেয়ার লেনদেনের জন্য পে-অর্ডারের মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে ১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই অর্থ ড. মোশাররফ হোসেনের পেশা, আয়ের উৎস এবং হিসাব খোলার উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। গত বছর দেশের পুঁজিবাজারে বীমা খাতের শেয়ারে যে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন হয়েছিল, তার সাথে ড. মোশাররফেরও যোগসাজশ ছিল বলে সংশ্লিষ্টদের সন্দেহ। তিনি বিভিন্ন সময়ে শেয়ারমূল্যকে প্রভাবিত করার মতো একাধিক নির্দেশনা জারি করেন। এছাড়া প্রকাশ্যে এমন সব বক্তব্য রাখেন, যেগুলো শেয়ারের দাম বৃদ্ধির ধারাকে উস্কে দিতে ভূমিকা রেখেছে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আইডিআরএ চেয়ারম্যানের দুর্নীতি উদঘাটন

আপডেট সময় : ১২:২২:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ মে ২০২২

বিশেষ সংবাদদাতা : বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের ৪০ কোটি ৮১ লাখ টাকার দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এই প্রমাণ পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) আদালতে এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিএফআইইউ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মোশাররফ হোসেনের নিজের ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে ৫টি ব্যাংকে ৩০টি অ্যাকাউন্ট পরিচালনার তথ্য পাওয়া গেছে। এরমধ্যে ২০১৭ থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৮টি অ্যাকাউন্টে এই টাকা জমা হয়েছে।এক্ষেত্রে আয় ও ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতি নেই। হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. এজারুল হক আকন্দের দ্বৈত বেঞ্চে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। বিএফআইইউ সন্দেহ করছে-দুর্নীতি, ঘুস এবং অবৈধ শেয়ার লেনদেন হতে পারে। এবিষয়ে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে আরও তদন্ত করছে সংস্থাটি। আইডিআরএ চেয়ারম্যান ড. মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে সব কিছু ছাপিয়ে গেছে তার অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত অভিযোগ। একদিকে তিনি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) কোটা সুবিধা নিয়ে শেয়ার কিনেন; অন্যদিকে তিনি বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধান হয়েও বিভিন্ন বীমা কোম্পানির শেয়ার কিনেছেন। এমন কিছু কোম্পানির শেয়ারে তার বিনিয়োগ ছিল, যেগুলোর দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছিল এবং এই দর বৃদ্ধির পেছনে কারসাজি বেড়েছিল বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। আইডিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেনের অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত একাধিক প্রতিবেদন বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার আদালতে জমা দেওয়া বিএফআইইউর তথ্যে এসব প্রতিবেদনের সত্যতা মিলেছে। জানা গেছে, আবু সালেহ মোহাম্মদ আমিন মেহেদী নামের একজন বিনিয়োগকারী ড. মোশাররফের অবৈধ শেয়ার ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা করলে আদালত বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং বিএফআইইউকে নির্দেশ দেন। এর প্রেক্ষিতে বিএফআইইউ দীর্ঘ তদন্ত শেষে এই প্রতিবেদন দেয়। অন্যদিকে বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়েরও প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। তবে মন্ত্রণালয় রিপোর্ট না দিয়ে আদালতে সময়ের আবেদন করে। আদালত তাদের ১৬ জুন পর্যন্ত সময় দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার আদালতে দেওয়া বিএফআইইউর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ থেকে ২০২১ সালের তথ্য তারা বিশ্লেষণ করেছে। এতে ৫টি ব্যাংকে ড. মোশাররফ ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট ৩০টি অ্যাকাউন্ট পাওয়া যায়। ব্যাংকগুলো হলো-ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, এবং প্রিমিয়ার ব্যাংক। এরমধ্যে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকে ড. মোশাররফ হোসেনের নিজের নামে ১০১১১০০০৪১১৯০ নম্বর চলতি হিসাবে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা জমা হয়। নিজ নামে একই ব্যাংকের আরেকটি অ্যাকাউন্ট ১০১১০৩০১৩৪৫৯৮ নম্বরে ১ কোটি ০২ লাখ টাকা জমা হয়েছে। ড. মোশাররফের নিজ নামে প্রাইম ব্যাংকের ২১৪৮৪১৫০০৮০৬৫ নম্বর অ্যাকাউন্টে ৩০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। তার স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়ার নামে প্রিমিয়ার ব্যাংকের ৪টি অ্যাকাউন্টে ৮০ লাখ টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। একই ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে স্ত্রীর অনুকূলে মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ অ্যান্ড কোম্পানি নামে ৫০ লাখ টাকার এফডিআরের তথ্য মিলেছে। এছাড়াও মোশাররফ হোসেনের কোম্পানি গুলশান ভ্যালি অ্যান্ড অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের নামে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ০০৫৩২০০০০৬৪ নম্বর অ্যাকাউন্টে ৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকে লাভস অ্যান্ড লাইভ কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের ১৩১০০০০২৭৭৭ নম্বর অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার তথ্য পাওয়া যায়। এছাড়াও লাভস অ্যান্ড লাইভের ১ কোটি ৮৭ লাখ, গুলশান ভ্যালি অ্যাগ্রোর আরও ৩টি অ্যাকাউন্টে ২ কোটি ১৩ লাখ, ৪ কোটি ২৮ লাখ ও ৩ কোটি ৩৩ লাখ এবং কমার্স ব্যাংকের দুটি অ্যাকাউন্টে কাশফুল ডেভেলপার্স লিমিটেডের নামে ৫ কোটি ৮৫ লাখ ও ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকার তথ্য পেয়েছে। মোশাররফ হোসেন ও তার সম্পৃক্ত নামে মোট ৫টি কোম্পানির তথ্য পায় বিএফআইইউ। এগুলো হলো-লাভস অ্যান্ড লাইভ, গুলশান ভ্যালি অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ এবং কাশফুল ডেভেলপার্স বা (কেডিএল), কোয়ান্টাম প্লাস ফাউন্ডেশন, মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ অ্যান্ড কোম্পানি। এরমধ্যে প্রথম তিনটি কোম্পানিতে কর্মচারীদের কল্যাণের জন্য ৬টি গ্রাচ্যুইটি এবং প্রভিডেন্ট ফান্ড গঠন করেন ড. মোশাররফ। ফান্ড পরিচালনার জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করেন। সেখানে চেয়ারম্যান তিনি নিজে, সেক্রেটারি স্ত্রী জান্নাতুল মাওয়া এবং আরও রয়েছেন তার শাশুড়ি লাভলি ইয়াসমিন। এই ৬টি ফান্ডে ৩২ কোটি ৯১ লাখ টাকা জমার তথ্য মিলেছে। যা প্রতিষ্ঠানের আয়-ব্যয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এখানে ৩ কোটি ২৩ লাখ টাকা ইএফটি, ক্লিয়ারিং এবং পে অর্ডারের মাধ্যমে জমা হয়। অ্যাকাউন্ট থেকে ৮ কোটি ৭৫ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করা হয়। আবার শেয়ার লেনদেনের জন্য পে-অর্ডারের মাধ্যমে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে ১৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা দেওয়া হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই অর্থ ড. মোশাররফ হোসেনের পেশা, আয়ের উৎস এবং হিসাব খোলার উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। গত বছর দেশের পুঁজিবাজারে বীমা খাতের শেয়ারে যে অস্বাভাবিক উল্লম্ফন হয়েছিল, তার সাথে ড. মোশাররফেরও যোগসাজশ ছিল বলে সংশ্লিষ্টদের সন্দেহ। তিনি বিভিন্ন সময়ে শেয়ারমূল্যকে প্রভাবিত করার মতো একাধিক নির্দেশনা জারি করেন। এছাড়া প্রকাশ্যে এমন সব বক্তব্য রাখেন, যেগুলো শেয়ারের দাম বৃদ্ধির ধারাকে উস্কে দিতে ভূমিকা রেখেছে।