ক্যাম্পাস ও ক্যারিয়ার ডেস্ক : আমাদের দেশে আইটি সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান অনেকে। কিন্তু ঠিক কীভাবে এর প্রস্তুতি নিতে হবে, তা নির্ধারণ করা সহজ নয়। কারণ হলো, এ সেক্টরে কাজের পরিসর বিশাল। তাছাড়া, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটভিত্তিক কাজ নির্দিষ্ট কোন খাতে সীমাবদ্ধ নয়। তাই কাজের ক্ষেত্র অনুযায়ী প্রয়োজনীয় দক্ষতা আর যোগ্যতার তালিকাও আলাদা। তবে শুধু সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কাজ বিবেচনায় আনা হলে একটা প্রাথমিক ধারণা পাওয়া সম্ভব। সাধারণত ইঞ্জিনিয়ার বা ডেভেলপার নিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব স্কিল নিয়োগদাতারা চান, তা নিয়ে এবারের লেখা।
আইটি সেক্টরে ক্যারিয়ার যে ধরনের হয়
একটা সিস্টেম দাঁড় করানোর সময় মূলত তিন ধরনের ইঞ্জিনিয়ারের প্রয়োজন হয়:
ব্যাকএন্ড (ইধপশবহফ)
ফ্রন্ট-এন্ড (ঋৎড়হঃ-বহফ)
ডেভঅপ্স (উবাঙঢ়ং)
এগুলোর বাইরে সিস্টেম অ্যাডমিন, কোয়ালিটি অ্যাশিউরেন্স (ছঅ) ইঞ্জিনিয়ার আর ডাটা অ্যানালিস্টের কাজও রয়েছে।
ইদানিং প্রোডাক্ট আর প্রজেক্ট ম্যানেজার নিয়োগের ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারদের প্রাধান্য দেয়া হয়। কারণ, কীভাবে জটিল একটা সিস্টেমকে ঠিকভাবে তৈরি করা যায়, সে ব্যাপারে নন-টেকনিক্যাল কোন ব্যক্তির চেয়ে একজন ভালো ইঞ্জিনিয়ার আরো পরিষ্কার ধারণা রাখেন।
আইটি সেক্টরে প্রয়োজনীয় স্কিলের ধরন
ব্যাকএন্ড ডেভেলপমেন্ট: কোন সিস্টেম বা অ্যাপ্লিকেশনের কার্যকারিতা নিশ্চিত করার জন্য ব্যাকএন্ড ডেভেলপমেন্ট প্রয়োজন হয়। এ কাজে চুঃযড়হ (ফঔধহমড়), ঘড়ফব.লং, ঔধাধ আর অঝচ.ঘঊঞ-এর বেশ চাহিদা রয়েছে।
বর্তমানে সিস্টেমের সার্চ ইঞ্জিন তৈরিতে ‘ঊষধংঃরপংবধৎপয’ অনেক জনপ্রিয়। এছাড়া, ‘অষমড়ষরধ’-র ব্যবহারও বাড়ছে দিনদিন।
সিস্টেমের ডাটাবেইজ তৈরি ও মেইন্টেন্যান্সের জন্য মাইএসকিউএল/মাইসিক্যুয়েল (গুঝছখ), পোস্টগ্রেএসকিউএল/পোস্টগ্রেসিক্যুয়েল (চড়ংঃমৎবঝছখ) আর মঙ্গোডিবিতে (গড়হমড়উই) দক্ষতা চান নিয়োগদাতারা।
ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্ট: কোন সিস্টেম বা অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সময় আমরা স্ক্রীনে যে ইন্টারফেস দেখতে পাই, সেটা ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্টের কাজ। এ কাজে রিঅ্যাক্ট (জবধপঃ), অ্যাঙ্গুলার (অহমঁষধৎ) আর ভিউ (ঠঁব) ব্যবহার করা হয়।
মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড (অহফৎড়রফ), আইওএস (রঙঝ) আর আইওনিক (ওড়হরপ) সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিটের (ঝউক) ব্যবহার রয়েছে।
ডেভ-অপ্স সফটওয়্যার: ডেভেলপমেন্ট আর আইটি অপারেশনসের মধ্যে সমন্বয় করেন ডেভঅপ্স ইঞ্জিনিয়াররা। এ কাজে আমাজন ওয়েব সার্ভিসেস (অডঝ), গুগল ক্লাউড (এড়ড়মষব ঈষড়ঁফ) আর ডকার (উড়পশবৎ) কম্পিউটিং প্লাটফর্মে অভিজ্ঞতা থাকা দরকার।
সিস্টেম অ্যাডমিন আর ডাটা অ্যানালিস্টদের ক্ষেত্রে অ্যানালিটিক্স টুল – যেমন: ফায়ারবেইজ (ঋরৎবনধংব), ফেসবুক অ্যানালিটিক্স (ঋধপবনড়ড়শ অহধষুঃরপং) আর গুগল অ্যানালিটিক্স (এড়ড়মষব অহধষুঃরপং) – ব্যবহারের দক্ষতা চাওয়া হয়। এছাড়া, বিগক্যুয়েরির (ইরমছঁবৎু) মতো ক্লাউড প্লাটফর্মে ডাটা অ্যানালিসিসের কাজ জানা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য যে, চাহিদা থাকা সত্ত্বেও স্টার্টআপগুলোতে সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার বা ডেভঅপ্স ইঞ্জিনিয়ার পাওয়া যায় না। এর কারণ হলো, এ কাজে যে ধরনের অভিজ্ঞ লোক প্রয়োজন, তাদেরকে স্টার্টআপ কোম্পানিগুলো আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে নিয়োগ দিতে পারেনা।
অভিজ্ঞতা আর দক্ষতার ভিত্তিতে আয়
সাধারণত অভিজ্ঞতা ছাড়া মাসিক ৳৩০,০০০ – ৳৩৫,০০০ বেতন দিয়ে এন্ট্রি লেভেলে যোগ দেয়া সম্ভব। ১ – ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলে আয়ের সীমা গড়ে ৳৫৫,০০০ – ৳৮৫,০০০ হয়। ৩ – ৫ বছরের দক্ষ ও অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়াররা ১ লক্ষের বেশি আয় করতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, অভিজ্ঞতা কিংবা দক্ষতা বাড়ার সাথে আয় বাড়ার সুযোগ অধিকাংশ দেশী কোম্পানিগুলোতে এখনো সীমিত।
আইটি সেক্টরে চাকরি পাবার ক্ষেত্রে ডিগ্রি ও সার্টিফিকেশনের গুরুত্ব
সিস্টেম বা অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্টের জন্য ডিগ্রি ও সার্টিফিকেশনের চেয়ে অভিজ্ঞতা আর দক্ষতা থাকা বেশি জরুরি। এজন্য আপনার নিজের কোন প্রজেক্ট বা গিটহাব রেপো (এরঃঐঁন জবঢ়ড়ংরঃড়ৎু) থাকলে চাকরি পাবার বেলায় কাজে আসবে।
বাংলাদেশে বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার সায়েন্স/ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর ডিগ্রি ও সার্টিফিকেশন নেবার ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেগুলোর মান ভালো হয় না। এ কারণে চাহিদা থাকা সত্ত্বেও আইসিটি খাতে দক্ষ কর্মীর অভাব ৪০% (মুরশিদ, ২০১৬)।
আইটি সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে আপনার করণীয়
আপনি যদি আইটি সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান, তাহলে আগে ঠিক করুন কোন ধরনের ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করবেন। সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রোগ্রামিং স্কিল বাড়ান। এর জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি যেমন নিতে পারেন, তেমনি পারেন অনলাইনের বিভিন্ন রিসোর্স থেকে নিজেকে আপডেটেড রাখতে।
আইটি সেক্টরে ক্যারিয়ার: কেমন দক্ষতা প্রয়োজন আপনার?
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ