ঢাকা ০১:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

আইএমএফের শর্ত মেনে বাজেট নয় : অর্থমন্ত্রী

  • আপডেট সময় : ০৮:৫০:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩
  • ৯৪ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের শর্ত বা পরামর্শের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব তোলার পরদিন গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন। আইএমএফের শর্ত মেনে বাজেট হয়েছে কি না- এই প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি তাদের শর্ত বা পরামর্শ মোতাবেক আমরা আমাদের বাজেট করি নাই।” আগের দিন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে বক্তৃতায় আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে যেসব শর্ত দিয়েছে, তার মধ্যে আছে এই সংস্কার।
এরই মধ্যে সরকার আইএমএফের ঋণের একটি কিস্তি পেয়েছে। পরের কিস্তি পেতে বাজেট প্রণয়নের পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটির দেওয়া পরামর্শের ছাপ দেখা গিয়েছিল। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, “আর্থিক খাতে সুশাসন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।”
তবে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “তাদের (আইএমএফ) যে পরামর্শ আছে সেটা আমরা পুরোপুরি দেখি না। তাদের সার্বিক পরামর্শ যা আছে, যা তারা বলে, সেখান থেকে যেটুকু গ্রহণ করা উচিত বলে আমরা মনে করি সেটুকু আমরা গ্রহণ করব, বাকিটা আমরা নিজেদের মত করে নেব। সেখানে তাদের কোনো আপত্তি নাই।”
আইএমএফের সঙ্গে কাজ করাকে ভালো হিসেবেই দেখছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “কেবল আইএমএফ না, সবাই দেখে ব্যালেন্স শিট ঠিক আছে কি না, রেভিনিউ অ্যাকাউন্ট ঠিক আছে কি না, ট্রায়াল ব্যালান্স ঠিক আছে কি না, আয়-ব্যয়ের পার্থক্য ঠিক আছে কি না।
“শুধু আমাদেরটা না, সবারটাই দেখে, আর এই দেখাটা ভালো। আইএমএফের সঙ্গে যারা কাজ করে, আমি মনে করি এটা ভালো দিক এজন্য যে, তারা শুধু অর্থ দিয়ে মানে লোন দিয়ে সাহায্য করে না, পাশাপাশি কিছু প্রকল্পের পরামর্শ দেয়। সেগুলো কীভাবে কম সময়ে বাস্তবায়ন করা যাবে, এগুলোও তারা পরমার্শ দেয়। তাই আমি মনে করি, এসব থেকে শেখার অনেক কিছু থাকে এবং আমরা সমৃদ্ধ হই।”
অন্য এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা এখন পৃথিবীতে সবাই সবার সঙ্গে সম্পর্কিত, একই রেখায় যুক্ত। কেউ আলাদাভাবে বসবাস করার কোনো সুযোগ নেই। আপনি আমদানি করলেও কাউকে না কাউকে লাগবে, রপ্তানি করলেও লাগবে। আর এখন ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ হচ্ছে, অন্য দেশ থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে কোন দেশ থেকে পণ্য পাওয়া যাবে, কোথায় থেকে আমরা তা পেতে পারি।
“আমাদের সাধ বা সাধ্য এখন এককভাবে পরিচালন করা সম্ভব না, মাঝে মাঝে সমস্যা দেখা দিলে আমরা তা ফ্লেক্সিবলভাবে সমাধানের চেষ্টা করি।”
আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জিজ্ঞাসার জবাব দিতে ছয়জন মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অর্থমন্ত্রী। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুক্রবার বিকাল সোয়া ৩টায় এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
নিজের ডান পাশে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খানকে বসিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
নিজের বাম পাশে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এবং পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকারকে রেখে সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
বৈশ্বিক বাস্তবতা আর নানামুখী চাপের মধ্যে দাঁড়িয়েও ‘স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে’ যাত্রার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বৃহস্পতিবার নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
ফেইল করিনি, এবারও করব না: অর্থনীতিবিদদের চোখে এবারের বাজেটের বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জন কঠিন ঠেকলেও ‘অতীতের ধারাবাহিকতায়’ সফলতা অর্জনে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “গত পাঁচ বছরের বাজেটে আমাদের প্রজেকশন কী ছিল, আমরা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, তা অ্যানেক্স (সংযুক্তি) হিসাবে দিয়েছি।
“আমরা ফেইল করি নাই। ইনশাআল্লাহ এবারও ফেইল করব না, আগামীতেও আমরা ফেইল করব না। এটা আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।”
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুক্রবার বিকালে ছয়জন মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেখানে সংবাদকর্মীদের জিজ্ঞাসার জবাব দেন তিনি।
মানুষের কর্মদক্ষতা ও দায়বদ্ধতার উপর ভর করেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “সবকিছুর মূলে হচ্ছে এ দেশের মানুষ, জনগোষ্ঠী- তাদের কর্মদক্ষতা, দেশের প্রতি তাদের মায়ামমতা, মানুষের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, এটা অসাধারণ এক উদাহরণ আমি মনে করি। “এবং সেজন্য আমার বড় বিশ্বাস, আপনার মত করে আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের পরাজয় নেই। ইনশাল্লাহ আমরা বিজয়ী হবই হব।”
৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেটে এবার রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন কামাল। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ১৬ শতাংশের বেশি। টাকার ওই অংক মোট বাজেটের ৫৬.৪৪ শতাংশের মত। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকার যখন প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন এনবিআর রাজস্ব ছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এখন সেটা ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। “যদি ৫৯ হাজার কোটি টাকা থেকে এখন যদি তিন লক্ষ কোটি টাকাতে যায়, যেটুকুন বাড়তি বলছেন, এটা আমরা অর্জন করতে পারব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রজেকশন যেগুলো আছে, আমরা ফুলফিল করতে পারব।”

 

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

আইএমএফের শর্ত মেনে বাজেট নয় : অর্থমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৮:৫০:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৩ জুন ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফের শর্ত বা পরামর্শের কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জাতীয় সংসদে বাজেট প্রস্তাব তোলার পরদিন গতকাল শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন। আইএমএফের শর্ত মেনে বাজেট হয়েছে কি না- এই প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, “আমি আপনাদের নিশ্চিত করে বলতে পারি তাদের শর্ত বা পরামর্শ মোতাবেক আমরা আমাদের বাজেট করি নাই।” আগের দিন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার আগে বক্তৃতায় আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে যেসব শর্ত দিয়েছে, তার মধ্যে আছে এই সংস্কার।
এরই মধ্যে সরকার আইএমএফের ঋণের একটি কিস্তি পেয়েছে। পরের কিস্তি পেতে বাজেট প্রণয়নের পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক অর্থায়নকারী সংস্থাটির দেওয়া পরামর্শের ছাপ দেখা গিয়েছিল। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, “আর্থিক খাতে সুশাসন ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।”
তবে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “তাদের (আইএমএফ) যে পরামর্শ আছে সেটা আমরা পুরোপুরি দেখি না। তাদের সার্বিক পরামর্শ যা আছে, যা তারা বলে, সেখান থেকে যেটুকু গ্রহণ করা উচিত বলে আমরা মনে করি সেটুকু আমরা গ্রহণ করব, বাকিটা আমরা নিজেদের মত করে নেব। সেখানে তাদের কোনো আপত্তি নাই।”
আইএমএফের সঙ্গে কাজ করাকে ভালো হিসেবেই দেখছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “কেবল আইএমএফ না, সবাই দেখে ব্যালেন্স শিট ঠিক আছে কি না, রেভিনিউ অ্যাকাউন্ট ঠিক আছে কি না, ট্রায়াল ব্যালান্স ঠিক আছে কি না, আয়-ব্যয়ের পার্থক্য ঠিক আছে কি না।
“শুধু আমাদেরটা না, সবারটাই দেখে, আর এই দেখাটা ভালো। আইএমএফের সঙ্গে যারা কাজ করে, আমি মনে করি এটা ভালো দিক এজন্য যে, তারা শুধু অর্থ দিয়ে মানে লোন দিয়ে সাহায্য করে না, পাশাপাশি কিছু প্রকল্পের পরামর্শ দেয়। সেগুলো কীভাবে কম সময়ে বাস্তবায়ন করা যাবে, এগুলোও তারা পরমার্শ দেয়। তাই আমি মনে করি, এসব থেকে শেখার অনেক কিছু থাকে এবং আমরা সমৃদ্ধ হই।”
অন্য এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা এখন পৃথিবীতে সবাই সবার সঙ্গে সম্পর্কিত, একই রেখায় যুক্ত। কেউ আলাদাভাবে বসবাস করার কোনো সুযোগ নেই। আপনি আমদানি করলেও কাউকে না কাউকে লাগবে, রপ্তানি করলেও লাগবে। আর এখন ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ হচ্ছে, অন্য দেশ থেকে বলে দেওয়া হচ্ছে কোন দেশ থেকে পণ্য পাওয়া যাবে, কোথায় থেকে আমরা তা পেতে পারি।
“আমাদের সাধ বা সাধ্য এখন এককভাবে পরিচালন করা সম্ভব না, মাঝে মাঝে সমস্যা দেখা দিলে আমরা তা ফ্লেক্সিবলভাবে সমাধানের চেষ্টা করি।”
আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জিজ্ঞাসার জবাব দিতে ছয়জন মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অর্থমন্ত্রী। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুক্রবার বিকাল সোয়া ৩টায় এই সংবাদ সম্মেলন শুরু হয়।
নিজের ডান পাশে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, অর্থ বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খানকে বসিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
নিজের বাম পাশে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম এবং পরিকল্পনা বিভাগের সচিব সত্যজিত কর্মকারকে রেখে সংবাদ সম্মেলন শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
বৈশ্বিক বাস্তবতা আর নানামুখী চাপের মধ্যে দাঁড়িয়েও ‘স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে’ যাত্রার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বৃহস্পতিবার নতুন অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
ফেইল করিনি, এবারও করব না: অর্থনীতিবিদদের চোখে এবারের বাজেটের বিভিন্ন লক্ষ্য অর্জন কঠিন ঠেকলেও ‘অতীতের ধারাবাহিকতায়’ সফলতা অর্জনে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। শুক্রবার বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, “গত পাঁচ বছরের বাজেটে আমাদের প্রজেকশন কী ছিল, আমরা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি, তা অ্যানেক্স (সংযুক্তি) হিসাবে দিয়েছি।
“আমরা ফেইল করি নাই। ইনশাআল্লাহ এবারও ফেইল করব না, আগামীতেও আমরা ফেইল করব না। এটা আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস।”
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুক্রবার বিকালে ছয়জন মন্ত্রী এবং সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সেখানে সংবাদকর্মীদের জিজ্ঞাসার জবাব দেন তিনি।
মানুষের কর্মদক্ষতা ও দায়বদ্ধতার উপর ভর করেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে চান জানিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “সবকিছুর মূলে হচ্ছে এ দেশের মানুষ, জনগোষ্ঠী- তাদের কর্মদক্ষতা, দেশের প্রতি তাদের মায়ামমতা, মানুষের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, এটা অসাধারণ এক উদাহরণ আমি মনে করি। “এবং সেজন্য আমার বড় বিশ্বাস, আপনার মত করে আমি বিশ্বাস করি যে, আমাদের পরাজয় নেই। ইনশাল্লাহ আমরা বিজয়ী হবই হব।”
৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেটে এবার রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন কামাল। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ১৬ শতাংশের বেশি। টাকার ওই অংক মোট বাজেটের ৫৬.৪৪ শতাংশের মত। রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “সরকার যখন প্রথম দায়িত্ব গ্রহণ করে তখন এনবিআর রাজস্ব ছিল ৫৯ হাজার কোটি টাকা। এখন সেটা ২ লাখ ৯৫ হাজার কোটি টাকায় উত্তীর্ণ হয়েছে। “যদি ৫৯ হাজার কোটি টাকা থেকে এখন যদি তিন লক্ষ কোটি টাকাতে যায়, যেটুকুন বাড়তি বলছেন, এটা আমরা অর্জন করতে পারব ইনশাআল্লাহ। আমাদের প্রজেকশন যেগুলো আছে, আমরা ফুলফিল করতে পারব।”