ঢাকা ০২:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৪ অগাস্ট ২০২৫

‘অ্যাকশন’ সিনেমাই আমাকে এগিয়ে নিয়েছে : মিঠুন

  • আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২
  • ৯৬ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক :তার নামের সঙ্গে জুড়ে আছে ডিস্কো ডান্সার, সেই মিঠুন চক্রবর্তী এগিয়ে রাখছেন নিজের মারদাঙ্গা সিনেমাগুলোকেই। বাংলা সিনেমা ‘প্রজাপতি’তে প্রত্যাবর্তন করা এই বলিউড তারকা মনে করেন, অনেক সিনেমার মধ্যে ‘অ্যাকশনধর্মী’ কাজই তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, এগিয়ে নিয়েছে। গতানুগতিক ধারার বাইরের নাচে ৮০ এবং ৯০ এর দশকে বাংলাদেশ-ভারত দুই বাংলার দর্শকের রুচির পরিবর্তন আনতে ভূমিকা ছিল মিঠুনের। সাড়ে চার দশক ধরে ৩৭০টির বেশি সিনেমায় কাজ করে আসা মিঠুন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এখনও কোনো সিনেমার শুটিংয়ের প্রথম দিনে তিনি কিছুটা ‘নার্ভাস’ হয়ে যান। এমনকি ক্যারিয়ারে তার হতাশাও কম ছিল না। সেই হতাশা থেকে আত্মহননের কথাও ভাবতে হয়েছিল তাকে। মিঠুন চক্রবর্তীকে চলচ্চিত্রে আনেন মৃণাল সেন, ‘মৃগয়া’ দিয়ে শুরু। প্রথম সিনেমাতেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন তিনি। এরপরে বলিউডে নির্মাতারাও তাকে নিয়ে কাজ করেন। হিন্দি সিনেমায় যশ-খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে করেছেন বাংলা সিনেমাও। ‘প্রজাপতি’ সিনেমায় মমতা শঙ্করের সঙ্গে ৪৬ পর জুটি বাঁধছেন তিনি। বাংলা সিনেমায় কাজ নিয়ে মিঠুনের বক্তব্য, “কলকাতার শুটিং তাকে স্মৃতিকাতর করে তোলে।”
বরিশালে জন্ম নেওয়া মিঠুনের পর্দার বাইরের নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্ত্।ী ১৯৫০ সালে তার জন্ম। তরুণ বয়সে জড়িয়ে ছিলেন নকশাল আন্দোলনে। ছিলেন কুস্তিগীর এবং মার্শাল আর্টসেও ব্ল্যাক বেল্ট। অ্যাকশন, কমেডি, রোমান্টিক সব ঘরানার সিনেমাই মিঠুন পছন্দ করতেন। তবে তিনি বলেন, “সবকিছুর মধ্যে দর্শকেরা এখনও আমার অ্যাকশন সিনেমা দেখে এবং বিখ্যাত সংলাপগুলো আউড়ে যায়, আমি তখন গর্ব বোধ করি। আমি মনে করি, ওই সিনেমাগুলোই (আ্যাকশনধর্মী) আমাকে এগিয়ে দিয়েছে।” অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মুম্বাইয়ের রুপালি জগতে স্থান করে নেওয়া মিঠুনের শুরুর দিকে ধারণা ছিল, প্রতি ক্ষেত্রেই বোধাহয় ‘হ্যাঁ’ বলাটাই সমীচীন হবে। কাজের বাছ-বিচার করে কিছুটা ধীরগতিতে চলা উচিৎ ছিল কি না- প্রশ্নে মিঠুন বলেন, “কম সিনেমা করলে কি আজ এই অবস্থানে পৌঁছতে পারতাম? আমি আসলে এটা নিয়ে খুব বেশি ভাবি না।“ ভক্তদের ভালোবাসা এবং প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচকদের কাছে ডিসকো ড্যান্সারের আরেকটু প্রশংসা পাওয়া উচিৎ ছিল কি না- প্রশ্নে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি মৃণাল সেনের মাস্টার পিস মৃগয়া দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলাম। তারপর আমি ‘তিতলী’, ‘তাহাদের কথা’, ‘শুকনো লঙ্কা’ ও ‘কালপুরুষ’ করেছি। এই সিনেমগুলো সমালোচকদের নজর কেড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তবে এটা সত্যি এই প্রশংসা বাণিজ্যিক সিনেমার তুলনায় কম।” মিঠুন তার সিনেমায় অভিনয় জীবনের শুরুর সংগ্রামের দিনগুলোর কথা বেশি বলতে নারাজ। কারণ তার ধারণা, সেসব কথা উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিল্পীদের হতাশ করতে পারে। তবুও মিঠুন সে সময়ের কিছু হতাশার কথা বলেন।
“সবই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যায়, আমি গেছি। মাঝেমধ্যে ভাবতে আমি বোধহয় লক্ষ্য ছুতে পারব না। এমনকি আত্মহত্যার কথাও ভাবতাম।” ভক্ত-অনুরাগীদের উদ্দেশে মিঠুনের উপদেশ, “কখনই যুদ্ধ শেষ করার কথা ভাবেন না। আমি একজন জন্মগত যোদ্ধা এবং আমি জানতাম না কীভাবে হারতে হয়। দেখুন, আমি এখন কোথায় আছি।” মিঠুন মনে করেন, সময় এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে মানবিক মূল্যবোধ হ্রাস পাচ্ছে। এ জন্য সোশাল মিডিয়াকে দায়ী করে এই অভিনেতা বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাল কিছু যুক্ত থাকলেও মানুষ এই মাধ্যমকে নেতিবাচক বিষয়গুলো উপস্থাপনের জন্য ব্যবহার করছে। আগে আমরা একে অপরের সঙ্গে ব্সে খেতাম। এখন দুজন মানুষও পাশপাশি থাকলে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে।”
বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ও জ্যাকি স্রফের সঙ্গে অভিনীত ‘বাপ’ সিনেমা প্রসঙ্গে মিঠুতের ভাষ্য, “সিনেমাটি নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না। শুধু এটুকুই বলতে পারি যে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ এর মতোই ল্যান্ডমার্ক হবে, এমন সিনেমা করতে আমি বেশি আগ্রহী। তবে এটুকু বলা যায় সিনেমাটি উত্তেজনাপূর্ণ হবে।” বলিউড বনাম দক্ষিণ বিতর্ক সম্পর্কে ‘আরআরআর’ , ‘পুষ্পা’ সিনেমার উদাহরণ টেনে মিঠুন বলেন, “এই সিনেমাগুলোর কথাই ধরুন, কেন এত হিট হয়? কারণ দর্শকরা গল্পের সঙ্গে একাত্ম হতে পারে।” ভালো বিষয় আর সময়ের দাবি, এ দুটো পূরণ করতে পারলে সিনেমার সাফল্য নিশ্চিত বলে মনে করেন তিনি। রাজনীতি ও চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার একইসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব কি না- এ প্রশ্নে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দেওয়া মিঠুন বলেন, “মানুষের জন্য কাজ করে যাব। গত এক বছর ব্যক্তিগতভাবে আমি ভালো ছিলাম না। তাই রাজনৈতিক কর্মকা-ে মনোযোগ দিতে পারিনি। তবে ভাববেন না, আমি আমার চলচ্চিত্র এবং রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি উভয়ই রক্ষা করব। শেষ পর্যন্ত আমরা পেশাদার।” ইতোমধ্যে একটি ওয়েব সিরিজ শুরু করেছেন মিঠুন। তা উপভোগও করছেন বলে জানান।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্যাংক কর্মকর্তাদের তারুণ্যের উৎসবে যোগ দিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশ

‘অ্যাকশন’ সিনেমাই আমাকে এগিয়ে নিয়েছে : মিঠুন

আপডেট সময় : ১০:৪৫:০৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ জুলাই ২০২২

বিনোদন ডেস্ক :তার নামের সঙ্গে জুড়ে আছে ডিস্কো ডান্সার, সেই মিঠুন চক্রবর্তী এগিয়ে রাখছেন নিজের মারদাঙ্গা সিনেমাগুলোকেই। বাংলা সিনেমা ‘প্রজাপতি’তে প্রত্যাবর্তন করা এই বলিউড তারকা মনে করেন, অনেক সিনেমার মধ্যে ‘অ্যাকশনধর্মী’ কাজই তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে, এগিয়ে নিয়েছে। গতানুগতিক ধারার বাইরের নাচে ৮০ এবং ৯০ এর দশকে বাংলাদেশ-ভারত দুই বাংলার দর্শকের রুচির পরিবর্তন আনতে ভূমিকা ছিল মিঠুনের। সাড়ে চার দশক ধরে ৩৭০টির বেশি সিনেমায় কাজ করে আসা মিঠুন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, এখনও কোনো সিনেমার শুটিংয়ের প্রথম দিনে তিনি কিছুটা ‘নার্ভাস’ হয়ে যান। এমনকি ক্যারিয়ারে তার হতাশাও কম ছিল না। সেই হতাশা থেকে আত্মহননের কথাও ভাবতে হয়েছিল তাকে। মিঠুন চক্রবর্তীকে চলচ্চিত্রে আনেন মৃণাল সেন, ‘মৃগয়া’ দিয়ে শুরু। প্রথম সিনেমাতেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার জিতে নেন তিনি। এরপরে বলিউডে নির্মাতারাও তাকে নিয়ে কাজ করেন। হিন্দি সিনেমায় যশ-খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে করেছেন বাংলা সিনেমাও। ‘প্রজাপতি’ সিনেমায় মমতা শঙ্করের সঙ্গে ৪৬ পর জুটি বাঁধছেন তিনি। বাংলা সিনেমায় কাজ নিয়ে মিঠুনের বক্তব্য, “কলকাতার শুটিং তাকে স্মৃতিকাতর করে তোলে।”
বরিশালে জন্ম নেওয়া মিঠুনের পর্দার বাইরের নাম গৌরাঙ্গ চক্রবর্ত্।ী ১৯৫০ সালে তার জন্ম। তরুণ বয়সে জড়িয়ে ছিলেন নকশাল আন্দোলনে। ছিলেন কুস্তিগীর এবং মার্শাল আর্টসেও ব্ল্যাক বেল্ট। অ্যাকশন, কমেডি, রোমান্টিক সব ঘরানার সিনেমাই মিঠুন পছন্দ করতেন। তবে তিনি বলেন, “সবকিছুর মধ্যে দর্শকেরা এখনও আমার অ্যাকশন সিনেমা দেখে এবং বিখ্যাত সংলাপগুলো আউড়ে যায়, আমি তখন গর্ব বোধ করি। আমি মনে করি, ওই সিনেমাগুলোই (আ্যাকশনধর্মী) আমাকে এগিয়ে দিয়েছে।” অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মুম্বাইয়ের রুপালি জগতে স্থান করে নেওয়া মিঠুনের শুরুর দিকে ধারণা ছিল, প্রতি ক্ষেত্রেই বোধাহয় ‘হ্যাঁ’ বলাটাই সমীচীন হবে। কাজের বাছ-বিচার করে কিছুটা ধীরগতিতে চলা উচিৎ ছিল কি না- প্রশ্নে মিঠুন বলেন, “কম সিনেমা করলে কি আজ এই অবস্থানে পৌঁছতে পারতাম? আমি আসলে এটা নিয়ে খুব বেশি ভাবি না।“ ভক্তদের ভালোবাসা এবং প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচকদের কাছে ডিসকো ড্যান্সারের আরেকটু প্রশংসা পাওয়া উচিৎ ছিল কি না- প্রশ্নে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি মৃণাল সেনের মাস্টার পিস মৃগয়া দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করে জাতীয় পুরস্কার জিতেছিলাম। তারপর আমি ‘তিতলী’, ‘তাহাদের কথা’, ‘শুকনো লঙ্কা’ ও ‘কালপুরুষ’ করেছি। এই সিনেমগুলো সমালোচকদের নজর কেড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছিল। তবে এটা সত্যি এই প্রশংসা বাণিজ্যিক সিনেমার তুলনায় কম।” মিঠুন তার সিনেমায় অভিনয় জীবনের শুরুর সংগ্রামের দিনগুলোর কথা বেশি বলতে নারাজ। কারণ তার ধারণা, সেসব কথা উচ্চাকাঙ্ক্ষী শিল্পীদের হতাশ করতে পারে। তবুও মিঠুন সে সময়ের কিছু হতাশার কথা বলেন।
“সবই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যায়, আমি গেছি। মাঝেমধ্যে ভাবতে আমি বোধহয় লক্ষ্য ছুতে পারব না। এমনকি আত্মহত্যার কথাও ভাবতাম।” ভক্ত-অনুরাগীদের উদ্দেশে মিঠুনের উপদেশ, “কখনই যুদ্ধ শেষ করার কথা ভাবেন না। আমি একজন জন্মগত যোদ্ধা এবং আমি জানতাম না কীভাবে হারতে হয়। দেখুন, আমি এখন কোথায় আছি।” মিঠুন মনে করেন, সময় এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে মানবিক মূল্যবোধ হ্রাস পাচ্ছে। এ জন্য সোশাল মিডিয়াকে দায়ী করে এই অভিনেতা বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাল কিছু যুক্ত থাকলেও মানুষ এই মাধ্যমকে নেতিবাচক বিষয়গুলো উপস্থাপনের জন্য ব্যবহার করছে। আগে আমরা একে অপরের সঙ্গে ব্সে খেতাম। এখন দুজন মানুষও পাশপাশি থাকলে মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে।”
বলিউড অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ও জ্যাকি স্রফের সঙ্গে অভিনীত ‘বাপ’ সিনেমা প্রসঙ্গে মিঠুতের ভাষ্য, “সিনেমাটি নিয়ে এখনই কিছু বলতে পারছি না। শুধু এটুকুই বলতে পারি যে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ এর মতোই ল্যান্ডমার্ক হবে, এমন সিনেমা করতে আমি বেশি আগ্রহী। তবে এটুকু বলা যায় সিনেমাটি উত্তেজনাপূর্ণ হবে।” বলিউড বনাম দক্ষিণ বিতর্ক সম্পর্কে ‘আরআরআর’ , ‘পুষ্পা’ সিনেমার উদাহরণ টেনে মিঠুন বলেন, “এই সিনেমাগুলোর কথাই ধরুন, কেন এত হিট হয়? কারণ দর্শকরা গল্পের সঙ্গে একাত্ম হতে পারে।” ভালো বিষয় আর সময়ের দাবি, এ দুটো পূরণ করতে পারলে সিনেমার সাফল্য নিশ্চিত বলে মনে করেন তিনি। রাজনীতি ও চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার একইসঙ্গে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব কি না- এ প্রশ্নে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দেওয়া মিঠুন বলেন, “মানুষের জন্য কাজ করে যাব। গত এক বছর ব্যক্তিগতভাবে আমি ভালো ছিলাম না। তাই রাজনৈতিক কর্মকা-ে মনোযোগ দিতে পারিনি। তবে ভাববেন না, আমি আমার চলচ্চিত্র এবং রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি উভয়ই রক্ষা করব। শেষ পর্যন্ত আমরা পেশাদার।” ইতোমধ্যে একটি ওয়েব সিরিজ শুরু করেছেন মিঠুন। তা উপভোগও করছেন বলে জানান।