ঢাকা ০৬:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫

অস্ত্র প্রতিযোগিতার টাকা শিশুদের কল্যাণে দিন : বিশ্বকে শেখ হাসিনা

  • আপডেট সময় : ০২:০৪:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২
  • ৯৫ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : পৃথিবীতে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে অর্থ ব্যয় হয়, সেটা সারা বিশ্বের শিশুদের জন্য ব্যয় করতে ক্ষমতাধর দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সোমবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “করোনা ভাইরাস মহামারির ধাক্কা এবং ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ আমাদের উন্নয়নের গতিকে অনেকটা স্লথ করে দিয়েছে। শুধু আমরা না, বিশ্বব্যাপীই মানুষ এই কষ্ট ভোগ করছে।
“সেজন্য আমার সব সময় আবেদন থাকবে, আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তি চাই। এবং এই যুদ্ধ, অস্ত্র বিক্রি করতে গিয়ে যে সমস্ত প্রতিযোগিতায় অর্থ ব্যয় হয়, সেই অর্থ সারা বিশ্বের শিশুদের জন্য ব্যয় করা হোক। তাদের চিকিৎসা, তাদের শিক্ষা, তাদের ভালো জীবনের জন্য ব্যয় করা হোক। আজ বিশ্ববাসীর কাছে সেটাই আহ্বান জানাই।”
গত ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনেও একই আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন তিনি বলেছিলেন, “আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী, শিশুসহ ও গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেওয়া হয়। এর প্রভাব কেবল একটি দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না বরং সকল মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসঙ্কটে পতিত হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়।
“খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। বিশেষ করে, শিশুরাই বেশি কষ্ট ভোগ করে। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যায়।”
করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই এ বছরের শুরুতে ইউক্রেনে যুদ্ধ বাধিয়ে বসে প্রতিবেশী রাশিয়া, যার জেরে পুরো বিশ্ব এখন টালমাটাল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম আর খাদ্যের দাম বেড়ে গিয়ে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন করে তুলেছে। বিশ্বকে ফেলে দিয়েছে নতুন এক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কায়। সেই বিপদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা জাতিসংঘে তার ভাষণে বলেন, “বিশ্ব বিবেকের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, স্যাংশন বন্ধ করুন। শিশুকে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা দিন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।”
এই বৈশ্বিক সংকট যে বাংলাদেশকেও ভোগাচ্ছে, সে কথা তুলে ধরে সোমবারের অনুষ্ঠানে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী ফেলে না রেখে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা জোরদার করতে হবে। সরকার প্রধান বলেন, “বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আমরা সকলে মিলে নিরলস পরিশ্রম করে যাব, এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।” এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নড়াইলে মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেইন মধুমতি সেতু এবং নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমান সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সেতুগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুহাইলান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

অস্ত্র প্রতিযোগিতার টাকা শিশুদের কল্যাণে দিন : বিশ্বকে শেখ হাসিনা

আপডেট সময় : ০২:০৪:১৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ অক্টোবর ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : পৃথিবীতে অস্ত্র প্রতিযোগিতায় যে অর্থ ব্যয় হয়, সেটা সারা বিশ্বের শিশুদের জন্য ব্যয় করতে ক্ষমতাধর দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল সোমবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “করোনা ভাইরাস মহামারির ধাক্কা এবং ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ আমাদের উন্নয়নের গতিকে অনেকটা স্লথ করে দিয়েছে। শুধু আমরা না, বিশ্বব্যাপীই মানুষ এই কষ্ট ভোগ করছে।
“সেজন্য আমার সব সময় আবেদন থাকবে, আমরা যুদ্ধ চাই না। আমরা শান্তি চাই। এবং এই যুদ্ধ, অস্ত্র বিক্রি করতে গিয়ে যে সমস্ত প্রতিযোগিতায় অর্থ ব্যয় হয়, সেই অর্থ সারা বিশ্বের শিশুদের জন্য ব্যয় করা হোক। তাদের চিকিৎসা, তাদের শিক্ষা, তাদের ভালো জীবনের জন্য ব্যয় করা হোক। আজ বিশ্ববাসীর কাছে সেটাই আহ্বান জানাই।”
গত ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনেও একই আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন তিনি বলেছিলেন, “আমরা ইউক্রেন ও রাশিয়ার সংঘাতের অবসান চাই। নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে একটি দেশকে শাস্তি দিতে গিয়ে নারী, শিশুসহ ও গোটা মানবজাতিকেই শাস্তি দেওয়া হয়। এর প্রভাব কেবল একটি দেশেই সীমাবদ্ধ থাকে না বরং সকল মানুষের জীবন-জীবিকা মহাসঙ্কটে পতিত হয়। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়।
“খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। বিশেষ করে, শিশুরাই বেশি কষ্ট ভোগ করে। তাদের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যায়।”
করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই এ বছরের শুরুতে ইউক্রেনে যুদ্ধ বাধিয়ে বসে প্রতিবেশী রাশিয়া, যার জেরে পুরো বিশ্ব এখন টালমাটাল। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জ্বালানি তেলের দাম আর খাদ্যের দাম বেড়ে গিয়ে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে মানুষের জীবনযাত্রা কঠিন করে তুলেছে। বিশ্বকে ফেলে দিয়েছে নতুন এক অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কায়। সেই বিপদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে শেখ হাসিনা জাতিসংঘে তার ভাষণে বলেন, “বিশ্ব বিবেকের কাছে আমার আবেদন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা, যুদ্ধ, স্যাংশন বন্ধ করুন। শিশুকে খাদ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও নিরাপত্তা দিন। শান্তি প্রতিষ্ঠা করুন।”
এই বৈশ্বিক সংকট যে বাংলাদেশকেও ভোগাচ্ছে, সে কথা তুলে ধরে সোমবারের অনুষ্ঠানে সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দেশে এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদী ফেলে না রেখে উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টা জোরদার করতে হবে। সরকার প্রধান বলেন, “বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে আমরা সকলে মিলে নিরলস পরিশ্রম করে যাব, এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।” এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নড়াইলে মধুমতি নদীর ওপর নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেইন মধুমতি সেতু এবং নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম নাসিম ওসমান সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে সেতুগুলোর সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ভিডিও কনফারেন্স সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি এবং সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসেফ ঈসা আল দুহাইলান অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।