ঢাকা ০৪:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে উইন্ডিজের নাটকীয় জয়

  • আপডেট সময় : ০৯:২২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১
  • ৮১ বার পড়া হয়েছে

ক্রীড়া ডেস্ক : ১৪৬ রান তাড়া করে ১০ ওভারে ১০৫, ম্যাচের উত্তেজনার কিছু আর বাকি থাকে? কিন্তু ক্রিকেটে যে শেষ কথা বলে কিছু নেই, সেটিই আরেকবার প্রমাণ হলো সেন্ট লুসিয়ায়। হঠাৎ ধসে এলোমেলো হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। তাদের মুঠো থেকে বের করে আনা রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ১৮ রানে। ড্যারেন স্যামি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালের ম্যাচটিতে চোটের কারণে খেলতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। নিকোলাস পুরানের নেতৃত্বের অভিষেকে ২০ ওভারে ক্যারিবিয়ানরা তোলে ১৪৫ রান। বাজে শুরুর পর ২৮ বলে ৫১ রানের ইনিংসে দলকে উদ্ধার করে আন্দ্রে রাসেল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, টি-টোয়েন্টির ‘পোস্টার বয়’ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টতে ফিফটির স্বাদ পেলেন প্রথমবার! রান তাড়ায় সহজ জয়ের পথে থাকা অস্ট্রেলিয়া ভজকট পাকায় ইনিংসের পরের ভাগে। ১৯ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে তারা গুটিয়ে যায় ২৪ বল বাকি থাকতেই! দারুণ বোলিংয়ে দুই উইকেটের পর ৩১ বলে ৫১ রানের ইনিংস, মিচেল মার্শের এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সও যায় বিফলে।
ক্যারিবিয়ানদের দুই বোলিং নায়ক ওবেড ম্যাককয় ও হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বাঁহাতি পেসার ম্যাককয়। তবে তার তিন উইকেটই লোয়ার অর্ডারের। প্রায় সাত মাস পর খেলতে নেমে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট নেন লেগ স্পিনার ওয়ালশ। টস জিতে বোলিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন জশ হেইজেলউড। বিপজ্জনক দ্ইু বাঁহাতি এভিন লুইস ও ক্রিস গেইলকে দাঁড়াতেই দেননি তিনি। পাওয়ার প্লেতে ১৬টি ডট বল করে এই পেসারের বোলিং বিশ্লেষণ ৩-১-৩-২! লেন্ডন সিমন্স (২৮ বলে ২৭) ও শিমরন হেটমায়ার (২৫ বলে ২০) জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও আউট হন রানের গতি বাড়াতে না পেরে। অধিনায়ক পুরান রান আউটে বিদায় নেন ১৬ বলে ১৭ করে। ১২ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান মোটে ৬৬।
সেখান থেকে দলকে দেড়শন কাছে নিয়ে যান রাসেল। শুরুতে ৯ বলে করেন ৬ রান, এর মধ্যে মার্শের বলে জীবনও পান মোইজেস হেনরিকেসের হাতে। সেটির খেসারত দিতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে। অ্যাশটন অ্যাগারকে টানা দুই বলে ছক্কা মারেন রাসেল, মিচেল স্টার্ককেও টানা দুই বলে। ৫ ছক্কায় ২৬ বলে করে ফেলেন ফিফটি। শেষ ওভারে ফিরে আবার দারুণ বোলিংয়ে রাসেলকে থামান হেইজেলউড। তবে ইনিংসের শেষ বলে তাকে ছক্কা মারেন ডোয়াইন ব্রাভো। তার পরও হেইজেলউডের বোলিং ফিগার ৪-১-১২-৩! রান তাড়ায় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে দ্রুত হারালেও ঝড় তোলেন আরেক ওপেনার ম্যাথু ওয়েড। তিনে নেমে মার্শও খেলতে থাকেন সাবলীলভাবে। ১৪ বলে ৩৩ রান করা ওয়েডকে থামান রাসেল। তবু পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান আসে ৭০। হেনরিকেস উইকেটে গিয়ে প্রথম দুই বলেই ছক্কায় ওড়ান ম্যাককয়কে। অষ্টম ওভারে হেনরিকেসের বিদায়েই অস্ট্রেলিয়ার পথ হারানোর শুরু। ওয়ালশ ও ম্যাককয়ের বোলিং, দারুণ কিছু ফিল্ডিংয়ের প্রদর্শনীতে ২১ বলের মধ্যে মাত্র ১০ রানে অস্ট্রেলিয়া হারায় শেষ ৫ উইকেট। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ পরদিনই, বাংলাদেশ সময় রোববার ভোরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২০ ওভারে ১৪৫/৬ (সিমন্স ২৭, লুইস ০, গেইল ৪, হেটমায়ার ২০, পুরান ১৭, রাসেল ৫১, অ্যালেন ৮, ব্রাভো ৭; স্টার্ক ৪-০-৪০-০, হেইজেলউড ৪-১-১২-৩, অ্যাগার ৩-০-২৮-০, জ্যাম্পা ৩-০-২৩-০, মিচেল মার্শ ৪-০-২৬-২, ক্রিস্টিয়ান ২-০-১০-০)।
অস্ট্রেলিয়া : ১৬ ওভারে ১২৭ (ওয়েড ৩৩, ফিঞ্চ ৪, মার্শ ৫১, ফিলিপি ১, হেনরিকেস ১৬, ম্যাকডারমট ২, ক্রিস্টিয়ান ১০, অ্যাগার ১, স্টার্ক ৩, জ্যাম্পা ১*, হেইজেলউড ০; এডওয়ার্ডস ২-০-২৪-০, অ্যালেন ৩-০-২৪-২, রাসেল ১-০-১৪-১, ব্রাভো ২-০-১৬-০, ম্যাককয় ৪-০-২৬-৪, ওয়ালশ ৪-০-২৩-৩)।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৫ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ওবেড ম্যাককয়।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে উইন্ডিজের নাটকীয় জয়

আপডেট সময় : ০৯:২২:৪৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ জুলাই ২০২১

ক্রীড়া ডেস্ক : ১৪৬ রান তাড়া করে ১০ ওভারে ১০৫, ম্যাচের উত্তেজনার কিছু আর বাকি থাকে? কিন্তু ক্রিকেটে যে শেষ কথা বলে কিছু নেই, সেটিই আরেকবার প্রমাণ হলো সেন্ট লুসিয়ায়। হঠাৎ ধসে এলোমেলো হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। তাদের মুঠো থেকে বের করে আনা রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় ১৮ রানে। ড্যারেন স্যামি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালের ম্যাচটিতে চোটের কারণে খেলতে পারেননি ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক কাইরন পোলার্ড। নিকোলাস পুরানের নেতৃত্বের অভিষেকে ২০ ওভারে ক্যারিবিয়ানরা তোলে ১৪৫ রান। বাজে শুরুর পর ২৮ বলে ৫১ রানের ইনিংসে দলকে উদ্ধার করে আন্দ্রে রাসেল। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, টি-টোয়েন্টির ‘পোস্টার বয়’ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টতে ফিফটির স্বাদ পেলেন প্রথমবার! রান তাড়ায় সহজ জয়ের পথে থাকা অস্ট্রেলিয়া ভজকট পাকায় ইনিংসের পরের ভাগে। ১৯ রানের মধ্যে শেষ ৬ উইকেট হারিয়ে তারা গুটিয়ে যায় ২৪ বল বাকি থাকতেই! দারুণ বোলিংয়ে দুই উইকেটের পর ৩১ বলে ৫১ রানের ইনিংস, মিচেল মার্শের এমন অলরাউন্ড পারফরম্যান্সও যায় বিফলে।
ক্যারিবিয়ানদের দুই বোলিং নায়ক ওবেড ম্যাককয় ও হেইডেন ওয়ালশ জুনিয়র। ২৬ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা বাঁহাতি পেসার ম্যাককয়। তবে তার তিন উইকেটই লোয়ার অর্ডারের। প্রায় সাত মাস পর খেলতে নেমে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট নেন লেগ স্পিনার ওয়ালশ। টস জিতে বোলিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন জশ হেইজেলউড। বিপজ্জনক দ্ইু বাঁহাতি এভিন লুইস ও ক্রিস গেইলকে দাঁড়াতেই দেননি তিনি। পাওয়ার প্লেতে ১৬টি ডট বল করে এই পেসারের বোলিং বিশ্লেষণ ৩-১-৩-২! লেন্ডন সিমন্স (২৮ বলে ২৭) ও শিমরন হেটমায়ার (২৫ বলে ২০) জুটি গড়ার চেষ্টা করলেও আউট হন রানের গতি বাড়াতে না পেরে। অধিনায়ক পুরান রান আউটে বিদায় নেন ১৬ বলে ১৭ করে। ১২ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান মোটে ৬৬।
সেখান থেকে দলকে দেড়শন কাছে নিয়ে যান রাসেল। শুরুতে ৯ বলে করেন ৬ রান, এর মধ্যে মার্শের বলে জীবনও পান মোইজেস হেনরিকেসের হাতে। সেটির খেসারত দিতে হয় অস্ট্রেলিয়াকে। অ্যাশটন অ্যাগারকে টানা দুই বলে ছক্কা মারেন রাসেল, মিচেল স্টার্ককেও টানা দুই বলে। ৫ ছক্কায় ২৬ বলে করে ফেলেন ফিফটি। শেষ ওভারে ফিরে আবার দারুণ বোলিংয়ে রাসেলকে থামান হেইজেলউড। তবে ইনিংসের শেষ বলে তাকে ছক্কা মারেন ডোয়াইন ব্রাভো। তার পরও হেইজেলউডের বোলিং ফিগার ৪-১-১২-৩! রান তাড়ায় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চকে দ্রুত হারালেও ঝড় তোলেন আরেক ওপেনার ম্যাথু ওয়েড। তিনে নেমে মার্শও খেলতে থাকেন সাবলীলভাবে। ১৪ বলে ৩৩ রান করা ওয়েডকে থামান রাসেল। তবু পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে রান আসে ৭০। হেনরিকেস উইকেটে গিয়ে প্রথম দুই বলেই ছক্কায় ওড়ান ম্যাককয়কে। অষ্টম ওভারে হেনরিকেসের বিদায়েই অস্ট্রেলিয়ার পথ হারানোর শুরু। ওয়ালশ ও ম্যাককয়ের বোলিং, দারুণ কিছু ফিল্ডিংয়ের প্রদর্শনীতে ২১ বলের মধ্যে মাত্র ১০ রানে অস্ট্রেলিয়া হারায় শেষ ৫ উইকেট। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ পরদিনই, বাংলাদেশ সময় রোববার ভোরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২০ ওভারে ১৪৫/৬ (সিমন্স ২৭, লুইস ০, গেইল ৪, হেটমায়ার ২০, পুরান ১৭, রাসেল ৫১, অ্যালেন ৮, ব্রাভো ৭; স্টার্ক ৪-০-৪০-০, হেইজেলউড ৪-১-১২-৩, অ্যাগার ৩-০-২৮-০, জ্যাম্পা ৩-০-২৩-০, মিচেল মার্শ ৪-০-২৬-২, ক্রিস্টিয়ান ২-০-১০-০)।
অস্ট্রেলিয়া : ১৬ ওভারে ১২৭ (ওয়েড ৩৩, ফিঞ্চ ৪, মার্শ ৫১, ফিলিপি ১, হেনরিকেস ১৬, ম্যাকডারমট ২, ক্রিস্টিয়ান ১০, অ্যাগার ১, স্টার্ক ৩, জ্যাম্পা ১*, হেইজেলউড ০; এডওয়ার্ডস ২-০-২৪-০, অ্যালেন ৩-০-২৪-২, রাসেল ১-০-১৪-১, ব্রাভো ২-০-১৬-০, ম্যাককয় ৪-০-২৬-৪, ওয়ালশ ৪-০-২৩-৩)।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৮ রানে জয়ী।
সিরিজ : ৫ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-০তে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: ওবেড ম্যাককয়।