ঢাকা ০২:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ার পথে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রাণ গেল চিকিৎসকের

  • আপডেট সময় : ০১:৫৮:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২
  • ৬৩ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : অসুস্থ মাকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার পথে ফেরিতে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন বারডেম হাসপাতালের এক চিকিৎসকসহ বাকিরাও।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে কাশিয়ারী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা মিল্টন বাজার এলাকার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় পড়ে হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বাসুদেব সাহার গাড়ি।

মাওয়া হয়ে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট দিয়ে পদ্মা পার হলে ওই দুর্ঘটনাস্থলের দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার। সেখান থেকে আর ২০ কিলোমিটার পেরুলেই গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডে বাসুদেব সাহার বাড়ি। তার বাবা প্রফুল্ল কুমার সাহা। খুলনা থেকে ঢাকাগামী রাজীব পরিবহনের বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান বাসুদেব সাহা, তার স্ত্রী শিবানী সাহা এবং ছেলে স্বপ্নিল সাহা এবং গাড়ির চালক। ওই ঘটনায় দুজন মোটসাইকেল আরোহীসহ আরও চারজন নিহত হন। মেডিকেল কলেজে পড়ুয়া একমাত্র মেয়ে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বাসায় থাকায় তিনি বেঁচে যান। দুর্ঘটনার পর তার মামা তাকে গোপালগঞ্জে নিয়ে গেছেন বলে জানান, বারডেম হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক ডা. নিজামুল ইসলাম। তিনি জানান, দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় থাকতেন তিনি। ছেলে ঢাকা আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। মেয়ে পড়ছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। বারডেম হাসপাতালে গত ২০ বছর ধরে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন বাসুদেব সাহা। তিনি কাজ করতেন অবেদনবিদ (অ্যানেসথেসিওলজিস্ট) হিসেবে।
ডা. নিজামুল বলেন, “দুর্ঘটনায় পড়ার কিছুক্ষণ আগেই পরিবারসহ তোলা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন বাসুদেব সাহা। কিছুক্ষণ পরই দুর্ঘটনায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। “তার মৃত্যুতে বারডেমের সবাই খুব ভেঙে পড়েছে। স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেন না।”
বাসুদেব সাহা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৩১ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার মহাসচিব ডা. মোহাম্মদ ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী এ ঘটনায় ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লিখেন, “আজকে এই দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর বার বার এসব স্মৃতির কথা মনে পড়ছে আর বুকটা ফেটে যাচ্ছে। পরম করুণাময় যেন সহযোদ্ধা বাসুকে পরপারে ভাল রাখেন এই প্রার্থনা করি।” পরে ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, “পরিবারসহ একটি ছবি ফেরিতে তোলা হয়েছিল। দুর্ঘটনার আগে সেটা ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন বাসুদেব। “দুর্ঘটনার খবরটি টেলিভিশনে দেখছিলাম। তখনও জানতাম না গাড়িটা আমাদের বাসুর। সে আমাদের এক ব্যাচ পরের। আমি যখন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম সে আমার কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিল। খুব ভালো মানুষ ছিল আমাদের বাসু।” ডা. বাসুদেব সাহার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন, বিএমএ।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অসুস্থ মাকে দেখতে যাওয়ার পথে স্ত্রী-সন্তানসহ প্রাণ গেল চিকিৎসকের

আপডেট সময় : ০১:৫৮:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ মে ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক : অসুস্থ মাকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার পথে ফেরিতে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে সেলফি তুলে ফেইসবুকে পোস্ট দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন বারডেম হাসপাতালের এক চিকিৎসকসহ বাকিরাও।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে কাশিয়ারী উপজেলার দক্ষিণ ফুকরা মিল্টন বাজার এলাকার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দুর্ঘটনায় পড়ে হাসপাতালের অ্যানেসথেশিয়া বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. বাসুদেব সাহার গাড়ি।

মাওয়া হয়ে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাট দিয়ে পদ্মা পার হলে ওই দুর্ঘটনাস্থলের দূরত্ব ৮০ কিলোমিটার। সেখান থেকে আর ২০ কিলোমিটার পেরুলেই গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডে বাসুদেব সাহার বাড়ি। তার বাবা প্রফুল্ল কুমার সাহা। খুলনা থেকে ঢাকাগামী রাজীব পরিবহনের বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান বাসুদেব সাহা, তার স্ত্রী শিবানী সাহা এবং ছেলে স্বপ্নিল সাহা এবং গাড়ির চালক। ওই ঘটনায় দুজন মোটসাইকেল আরোহীসহ আরও চারজন নিহত হন। মেডিকেল কলেজে পড়ুয়া একমাত্র মেয়ে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বাসায় থাকায় তিনি বেঁচে যান। দুর্ঘটনার পর তার মামা তাকে গোপালগঞ্জে নিয়ে গেছেন বলে জানান, বারডেম হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক ডা. নিজামুল ইসলাম। তিনি জানান, দুই সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকার ফার্মগেট এলাকায় থাকতেন তিনি। ছেলে ঢাকা আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ত। মেয়ে পড়ছে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে। বারডেম হাসপাতালে গত ২০ বছর ধরে সিনিয়র মেডিকেল অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন বাসুদেব সাহা। তিনি কাজ করতেন অবেদনবিদ (অ্যানেসথেসিওলজিস্ট) হিসেবে।
ডা. নিজামুল বলেন, “দুর্ঘটনায় পড়ার কিছুক্ষণ আগেই পরিবারসহ তোলা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন বাসুদেব সাহা। কিছুক্ষণ পরই দুর্ঘটনায় পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন। “তার মৃত্যুতে বারডেমের সবাই খুব ভেঙে পড়েছে। স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেন না।”
বাসুদেব সাহা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ৩১ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মী বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার মহাসচিব ডা. মোহাম্মদ ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী এ ঘটনায় ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লিখেন, “আজকে এই দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর বার বার এসব স্মৃতির কথা মনে পড়ছে আর বুকটা ফেটে যাচ্ছে। পরম করুণাময় যেন সহযোদ্ধা বাসুকে পরপারে ভাল রাখেন এই প্রার্থনা করি।” পরে ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী বলেন, “পরিবারসহ একটি ছবি ফেরিতে তোলা হয়েছিল। দুর্ঘটনার আগে সেটা ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেন বাসুদেব। “দুর্ঘটনার খবরটি টেলিভিশনে দেখছিলাম। তখনও জানতাম না গাড়িটা আমাদের বাসুর। সে আমাদের এক ব্যাচ পরের। আমি যখন ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম সে আমার কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিল। খুব ভালো মানুষ ছিল আমাদের বাসু।” ডা. বাসুদেব সাহার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন, বিএমএ।