ক্রীড়া ডেস্ক : মার্সেলোর জীবনে রিয়াল মাদ্রিদকে ‘দ্বিতীয় বাড়ি’ বললেও কম বলা হয়। সেই ২০০৭ সালে স্পেনের দলটিতে যোগ দেওয়ার পর কেটে গেছে ১৫টি বছর। দীর্ঘ এই পথচলায় পেয়েছেন অনেক সাফল্য, এসেছে কঠিন সময়ও। সত্যিকারের এক যোদ্ধার মতো কাটিয়ে উঠেছেন সব বাধা। উপভোগ করেছেন আরও বড় সাফল্য। অবশেষে এবার সেই যাত্রার ইতি। বিদায় বেলায় মনে ভর করছে হাজারো স্মৃতি। এতদিনের প্রিয় আঙিনা ছেড়ে যেতে মন কাঁদছে। তবে মার্সেলো তা বুঝতে দিতে চাইলেন না। বিদায় জানানোর মঞ্চে আটকাতে চাইলেন চোখের পানি। হাসলেনও। জানালেন, এখান থেকে চলে যাচ্ছেন ঠিকই, তবে মন থেকে সান্তিয়াগো বের্নাবেউকে বিদায় জানাচ্ছেন না। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের পরই মার্সেলো জানিয়ে দেন, রিয়ালের হয়ে শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন তিনি। সোমবার সেটাই আনুষ্ঠানিক রূপ পেল। সংবাদ সম্মেলনে আরও অনেক বছর খেলে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন ৩৪ বছর বয়সি ডিফেন্ডার।
“আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব একটা ভাবি না, বর্তমান নিয়ে থাকতেই পছন্দ করি। তবে সারাটা জীবন যে ক্লাবে খেলেছি, সেখান থেকে চলে যাওয়া সত্যিই খুব কঠিন। আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত নই। আমি এখনে যা চেয়েছিলাম তাই করেছি এবং সামনের চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছি। অনিশ্চয়তা নিয়ে আমি ভীত নই, বরং রোমাঞ্চিত।” নতুন ঠিকানার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেননি মার্সেলো। তবে অবসরের ভাবনা বা দেশের কোনো ক্লাবে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা নাকোচ করে দিয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান। ইউরোপের কোনো ক্লাবেই খেলার ইঙ্গিত দিয়েছেন রিয়ালের হয়ে সব মিলিয়ে ২৫টি ট্রফি জেতা এই গ্রেট। এমন কোনো ক্লাবে খেলতে চান, যারা আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। ১৮ বছর বয়সে রিয়ালে যোগ দেওয়া মার্সেলো ক্লাবটির হয়ে খেলেছেন মোট ৫৪৬ ম্যাচ। যে ২৫টি শিরোপা জিতেছেন এই সময়ে, তার মধ্যে লা লিগা ৬টি, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ৫টি। বিশেষ এই অনুষ্ঠানে মার্সেলোর পরিবার ও বন্ধুরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তার সতীর্থরা ও কোচ কার্লো আনচেলত্তি। অনেক চেষ্টা করেও একটা সময় আর অশ্রু ধরে রাখতে পারেননি মার্সেলো। “আমি মাথা উঁচু করে এখান থেকে বিদায় নিচ্ছি। আমার পরিবার আমাকে নিয়ে গর্বিত।” শেষ কয়েক মৌসুম অবশ্য রিয়ালের একাদশে নিয়মিত ছিলেন না মার্সেলো। ২০২১-২২ মৌসুমে লিগে খেলেছেন মাত্র ১২ ম্যাচ। যদিও ক্লাবের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন তিনিই। নিয়মিত খেলতে না পারা নিয়ে একটা সময় খুব হতাশা কাজ করত তার মধ্যে। কিন্তু একটা সময় অনুধাবন করতে পারলেন, মাঠের বাইরেও তিনি কার্যকরী হতে পারেন। “আমি আনচেলত্তির সঙ্গে ও গত বছর জিদানের সঙ্গে তর্ক করেছি, কারণ আমি খেলতে চাইতাম। তবে এই বছর যত গড়িয়েছে, আমি শিখেছি যে মাঠের বাইরে অন্য উপায়েও কার্যকরী হওয়া যায়। ড্রেসিং রুমে একজন নেতা হিসেবে আমার সতীর্থরা যা করছিল তার প্রশংসা করতে শিখেছি।” সত্যিই তাই, ডাগআউটে সবসময় একজন প্রাণবন্ত মার্সেলোকেই দেখা গেছে। এই মার্সেলোর অভাব নিশ্চিতভাবে অনুভব করবে রিয়াল সমর্থকেরা।
অশ্রু লুকিয়ে হাসিমুখে রিয়ালকে বিদায় জানালেন মার্সেলো
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ


























