ঢাকা ০২:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

অল্প হাঁটাচলাও ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

  • আপডেট সময় : ১০:৫৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৭৫ বার পড়া হয়েছে

সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে যে, খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়। স্পোর্টস মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় গবেষকরা সাতটি ভিন্ন গবেষণা বিশ্লেষণ করেছেন যে কীভাবে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পরিবর্তে হালকা শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, যেমন দাঁড়ানো এবং হাঁটা রক্তে শর্করার মাত্রাসহ হার্টের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে দুপুরের খাবার বা রাতের খাবারের পর বসে বা শুয়ে না থেকে ২ থেকে ৫ মিনিট হালকা হাঁটা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে। এ ছাড়া খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও সুগার মাত্রা কমে যেতে পারে। এই গবেষণার লেখক আইদান বাফেট স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটকে বলেছেন, ‘হালকা কার্যকলাপ আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে প্রমাণিত হয়।’
ডায়াবেটিসের হাত ধরেই জন্ম নেয় আরও অনেক শারীরিক সমস্যা। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে রেহাই পাবেন অনেক শারীরিক সমস্যা থেকে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে হাঁটার ভূমিকা অপরিসীম। তবে ডায়াবেটিস থাকলে হাঁটতেও হবে নিয়ম মেনে। প্রথমে ধীর গতিতে শুরু করতে হবে। তিন থেকে পাঁচ মিনিট ধীরপায়ে হাঁটার পর গতি বাড়াতে হবে। মাঝারি গতিতে পাঁচ থেকে দশ মিনিট পর্যন্ত হাঁটতে হবে। টাইপ টু-র ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভাবে হাঁটাহাঁটি স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ ভাল।
উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে, শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে থাকে। এটি পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল স্পাইক নামে পরিচিত। শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে ইনসুলিন নামক হরমোন নিঃসরণ শুরু হয়, যা রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে কোষে গ্লুকোজ পাঠায়, যাতে এটি শক্তির জন্য ব্যবহার করা যায়। কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ইনসুলিনের মধ্যে এই ভারসাম্য খুবই সূক্ষ্ম এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
যদি শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বাড়তে থাকে তবে কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া বন্ধ করে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে। যা প্রি ডায়াবেটিস বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন এই গবেষণার লেখক বলেছেন, আপনি যদি খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হালকা হাঁটাহাঁটি করেন, তাহলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে পারে, যা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
গবেষকরা দেখেছেন যে খাবারের পরে বসার পরিবর্তে কিছুক্ষণ হাঁটা বা দাঁড়ালে পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল গ্লুকোজের মাত্রা কমানো যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, হালকা হাঁটা খুবই উপকারী প্রমাণিত হতে পারে, এটি খাওয়ার পরে ইনসুলিনের মাত্রাও উন্নত করে। গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে খাবারের পরে হালকা হাঁটা শুধুমাত্র রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় না, ইনসুলিনের মাত্রাও বজায় রাখে। এছাড়াও গবেষকরা বলেন, সারাদিনে কিছুক্ষণ হাঁটাও খুব উপকারী প্রমাণিত হতে পারে। সম্ভব হলে সারাদিন বসে থাকার পরিমাণ কমিয়ে দিন। আপনার কাজ যদি বসেই করতে হয়, তাহলে প্রতি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পরপর উঠে একটু হাঁটুন। এর ফলে হাঁটা-চলা আপনার জীবনীশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। কারণ হাঁটা-চলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অল্প হাঁটাচলাও ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

আপডেট সময় : ১০:৫৬:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৩

সম্প্রতি নতুন এক গবেষণায় জানা গেছে যে, খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাঁটলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে যায়। স্পোর্টস মেডিসিন জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় গবেষকরা সাতটি ভিন্ন গবেষণা বিশ্লেষণ করেছেন যে কীভাবে দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার পরিবর্তে হালকা শারীরিক ক্রিয়াকলাপ, যেমন দাঁড়ানো এবং হাঁটা রক্তে শর্করার মাত্রাসহ হার্টের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে দুপুরের খাবার বা রাতের খাবারের পর বসে বা শুয়ে না থেকে ২ থেকে ৫ মিনিট হালকা হাঁটা রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে পারে। এ ছাড়া খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেও সুগার মাত্রা কমে যেতে পারে। এই গবেষণার লেখক আইদান বাফেট স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইটকে বলেছেন, ‘হালকা কার্যকলাপ আপনার স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে প্রমাণিত হয়।’
ডায়াবেটিসের হাত ধরেই জন্ম নেয় আরও অনেক শারীরিক সমস্যা। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে রেহাই পাবেন অনেক শারীরিক সমস্যা থেকে। চিকিৎসকেরা বলছেন, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে হাঁটার ভূমিকা অপরিসীম। তবে ডায়াবেটিস থাকলে হাঁটতেও হবে নিয়ম মেনে। প্রথমে ধীর গতিতে শুরু করতে হবে। তিন থেকে পাঁচ মিনিট ধীরপায়ে হাঁটার পর গতি বাড়াতে হবে। মাঝারি গতিতে পাঁচ থেকে দশ মিনিট পর্যন্ত হাঁটতে হবে। টাইপ টু-র ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এ ভাবে হাঁটাহাঁটি স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ ভাল।
উচ্চ কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার খেলে, শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে থাকে। এটি পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল স্পাইক নামে পরিচিত। শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে গেলে ইনসুলিন নামক হরমোন নিঃসরণ শুরু হয়, যা রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে কোষে গ্লুকোজ পাঠায়, যাতে এটি শক্তির জন্য ব্যবহার করা যায়। কিন্তু রক্তে শর্করার মাত্রা এবং ইনসুলিনের মধ্যে এই ভারসাম্য খুবই সূক্ষ্ম এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
যদি শরীরে রক্তে শর্করার মাত্রা খুব বেশি বাড়তে থাকে তবে কোষগুলো ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া বন্ধ করে এবং ইনসুলিন প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে। যা প্রি ডায়াবেটিস বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন এই গবেষণার লেখক বলেছেন, আপনি যদি খাবার খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হালকা হাঁটাহাঁটি করেন, তাহলে তা রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে পারে, যা ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পারে।
গবেষকরা দেখেছেন যে খাবারের পরে বসার পরিবর্তে কিছুক্ষণ হাঁটা বা দাঁড়ালে পোস্টপ্র্যান্ডিয়াল গ্লুকোজের মাত্রা কমানো যেতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, হালকা হাঁটা খুবই উপকারী প্রমাণিত হতে পারে, এটি খাওয়ার পরে ইনসুলিনের মাত্রাও উন্নত করে। গবেষকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে খাবারের পরে হালকা হাঁটা শুধুমাত্র রক্তে শর্করার মাত্রা কমায় না, ইনসুলিনের মাত্রাও বজায় রাখে। এছাড়াও গবেষকরা বলেন, সারাদিনে কিছুক্ষণ হাঁটাও খুব উপকারী প্রমাণিত হতে পারে। সম্ভব হলে সারাদিন বসে থাকার পরিমাণ কমিয়ে দিন। আপনার কাজ যদি বসেই করতে হয়, তাহলে প্রতি ২০ থেকে ৩০ মিনিট পরপর উঠে একটু হাঁটুন। এর ফলে হাঁটা-চলা আপনার জীবনীশক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে। কারণ হাঁটা-চলা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।