ঢাকা ১১:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

অর্ধশত বছরের শতাধিক গাছ বিক্রি

  • আপডেট সময় : ১১:৫২:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২
  • ৭৯ বার পড়া হয়েছে

মাদারীপুর সংবাদদাতা : মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে অর্ধশত বছরের পুরোনো শতাধিক গাছ পানির দরে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নামমাত্র মূল্য দেখিয়ে মেহেগনি, রেইনট্রিসহ বিভিন্ন গাছ বিক্রি করায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। গাছ বিক্রিতে দুর্নীতি হয়েছে কিনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ভিত্তিক সংগঠনের নেতারা। যদিও উপজেলা প্রশাসনের দাবি, নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গাছগুলো নিয়ম মেনে বিক্রি করা হয়েছে। জানা গেছে, কালকিনির সিডিখান থেকে শিকদার বাজার পর্যন্ত ১১৮টি গাছ বিক্রির জন্য গত ১৩ জুলাই উপজেলা ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে নিলামের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ২৪ জুলাই নিলামে অংশ নিয়ে গাছগুলো অপসারণের দায়িত্ব পান মাতুল মাতুব্বর নামে এক ব্যবসায়ী। অর্ধশত বছরের পুরোনো মেহগনি, রেইনট্রি, চাম্বুল, শিশুসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক গাছের মূল্য নির্ধারণ করা হয় দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯৮০ টাকা। এরই মধ্যে নিলামে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী তড়িঘড়ি করে গাছগুলো কাটতে শুরু করেছেন। নামমাত্র দাম দেখিয়ে গাছগুলো বিক্রি করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। জানা গেছে, গাছ বিক্রি কিংবা নিলামের জন্য কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিংকি সাহাকে সভাপতি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইমরান খানকে সদস্য সচিব, কালকিনি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রেজাউল করিম ও উপজেলা বন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খানকে সদস্য করা হয়। প্রথমে বন কর্মকর্তা গাছগুলোর মূল্য নির্ধারণ করেন, পরে বিষয়টি উপজেলা এলজিইডির ইঞ্জিনিয়ার অধিকতর তদন্ত ও যাছাই-বাছাই শেষে একই মূল্য অর্থাৎ দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯৮০ টাকা নির্ধারণ করে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্বাস শিকদার বলেন, ১১৮টি গাছের মূল্য মাত্র দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯৮০ টাকা হয় কি করে? এক একটি গাছের দাম ২০-৩০ হাজার টাকা। এখানে দুর্নীতি হয়েছে, এ ঘটনায় দোষীদের বিচার হওয়া দরকার। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, কয়টি গাছ বিক্রি করা হয়েছে তাও জানি না। কে বা কারা কত টাকায় গাছগুলো বিক্রি করছে তাও জানি না। চিহ্ন দেওয়া গাছ কাটা হচ্ছে, চিহ্নের বাইরেও গাছ কাটা হচ্ছে। আসলে এটা দেখার কেউ নেই। নিলামে অংশ নেওয়া গাছ ব্যবসায়ী মাতুল মাতুব্বর বলেন, কাগজপত্রেই সব কিছু আছে। নিয়ম মেনেই গাছ কাটা হয়েছে। গাছগুলো টেন্ডার নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপের ভাতিজা মানিক। আমি তার কাছ থেকে নিয়েছি। মাদারীপুরের স্থানীয় পরিবেশ ভিত্তিক সংগঠন ফ্রেন্ড অব নেচারের নির্বাহী পরিচালক রাজন মাহমুদ বলেন, গাছগুলোর মূল্য দুই থেকে তিন কোটি টাকা। পুরো ঘটনাটি দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অর্ধশত বছরের শতাধিক গাছ বিক্রি

আপডেট সময় : ১১:৫২:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ অগাস্ট ২০২২

মাদারীপুর সংবাদদাতা : মাদারীপুর জেলার কালকিনিতে অর্ধশত বছরের পুরোনো শতাধিক গাছ পানির দরে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। নামমাত্র মূল্য দেখিয়ে মেহেগনি, রেইনট্রিসহ বিভিন্ন গাছ বিক্রি করায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। গাছ বিক্রিতে দুর্নীতি হয়েছে কিনা তদন্তের দাবি জানিয়েছেন পরিবেশ ভিত্তিক সংগঠনের নেতারা। যদিও উপজেলা প্রশাসনের দাবি, নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই গাছগুলো নিয়ম মেনে বিক্রি করা হয়েছে। জানা গেছে, কালকিনির সিডিখান থেকে শিকদার বাজার পর্যন্ত ১১৮টি গাছ বিক্রির জন্য গত ১৩ জুলাই উপজেলা ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে নিলামের জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। পরে ২৪ জুলাই নিলামে অংশ নিয়ে গাছগুলো অপসারণের দায়িত্ব পান মাতুল মাতুব্বর নামে এক ব্যবসায়ী। অর্ধশত বছরের পুরোনো মেহগনি, রেইনট্রি, চাম্বুল, শিশুসহ বিভিন্ন প্রজাতির শতাধিক গাছের মূল্য নির্ধারণ করা হয় দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯৮০ টাকা। এরই মধ্যে নিলামে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ী তড়িঘড়ি করে গাছগুলো কাটতে শুরু করেছেন। নামমাত্র দাম দেখিয়ে গাছগুলো বিক্রি করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। জানা গেছে, গাছ বিক্রি কিংবা নিলামের জন্য কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিংকি সাহাকে সভাপতি, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. ইমরান খানকে সদস্য সচিব, কালকিনি উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রেজাউল করিম ও উপজেলা বন কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খানকে সদস্য করা হয়। প্রথমে বন কর্মকর্তা গাছগুলোর মূল্য নির্ধারণ করেন, পরে বিষয়টি উপজেলা এলজিইডির ইঞ্জিনিয়ার অধিকতর তদন্ত ও যাছাই-বাছাই শেষে একই মূল্য অর্থাৎ দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯৮০ টাকা নির্ধারণ করে। স্থানীয় বাসিন্দা আব্বাস শিকদার বলেন, ১১৮টি গাছের মূল্য মাত্র দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯৮০ টাকা হয় কি করে? এক একটি গাছের দাম ২০-৩০ হাজার টাকা। এখানে দুর্নীতি হয়েছে, এ ঘটনায় দোষীদের বিচার হওয়া দরকার। স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, কয়টি গাছ বিক্রি করা হয়েছে তাও জানি না। কে বা কারা কত টাকায় গাছগুলো বিক্রি করছে তাও জানি না। চিহ্ন দেওয়া গাছ কাটা হচ্ছে, চিহ্নের বাইরেও গাছ কাটা হচ্ছে। আসলে এটা দেখার কেউ নেই। নিলামে অংশ নেওয়া গাছ ব্যবসায়ী মাতুল মাতুব্বর বলেন, কাগজপত্রেই সব কিছু আছে। নিয়ম মেনেই গাছ কাটা হয়েছে। গাছগুলো টেন্ডার নিয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুস সোবহান গোলাপের ভাতিজা মানিক। আমি তার কাছ থেকে নিয়েছি। মাদারীপুরের স্থানীয় পরিবেশ ভিত্তিক সংগঠন ফ্রেন্ড অব নেচারের নির্বাহী পরিচালক রাজন মাহমুদ বলেন, গাছগুলোর মূল্য দুই থেকে তিন কোটি টাকা। পুরো ঘটনাটি দুর্নীতির মাধ্যমে হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।