নিজস্ব প্রতিবেদক: বর্তমানে দেশে পরিবারভিত্তিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে। যার মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ, সাপ্লাই চেইনে বিঘ্ন ও বিনিয়োগে অনীহা। এছাড়া আছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত, শুল্কযুদ্ধ ও দেশে সরকার পরিবর্তনের পর অনিশ্চিত পরিস্থিতির মতো রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। পাশাপাশি পারিবারিক দ্বন্দ্ব, নেতৃত্ব হস্তান্তর ও উত্তরাধিকার নিয়ে জটিলতার মতো অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। তবে দক্ষতার উন্নয়ন ও কৌশল অবলম্বন করে এসব চ্যালেঞ্জ থেকে উত্তরণ সম্ভব।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) কার্যালয়ে ‘যেখানে পারিবারিক মূল্যবোধ ভবিষ্যতের দৃষ্টিকোণকে মিলিত করে: টেকসই উত্তরাধিকারের কৌশল’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এমসিসিআই, সিঙ্গাপুরভিত্তিক আইন সংস্থা রাজাহ অ্যান্ড ট্যান সিঙ্গাপুর এলএলপি ও এএজেড অ্যান্ড পার্টনার্স যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান, পরিচালক আনাস এ খান ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তপন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
পারিবারিক ব্যবসায় উত্তরাধিকার নিয়ে এমসিসিআই সভাপতি কামরান বলেন, উত্তরাধিকার কেবল দায়িত্ব হস্তান্তর নয়, এটি কৌশলগত প্রক্রিয়া। সুপরিকল্পিত উত্তরাধিকার ব্যবস্থা পরিবার ও ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখে, স্থিতিশীলতা আনে ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ায়। কিন্তু উত্তরাধিকার পরিকল্পনাকে প্রায়ই বিলম্বিত করা হয়। কখনো কখনো এড়ানো হয়। ফলে অনেক সময় একটি পরিষ্কার কৌশলের অনুপস্থিতিতে বিশৃঙ্খলা হয়। এমনকি ব্যবসা বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যায়, যা তৈরি করতে (কয়েক) দশক সময় লেগেছে।
এমসিসিআইয়ের পরিচালক আনিস বলেন, উত্তরাধিকার একটি মানবিক যাত্রা, যেখানে শুধু সম্পদ নয়; স্বপ্ন, সংস্কৃতি ও উদ্দেশ্যও নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। উত্তরাধিকারের পরিকল্পনা শুধু সংকটের সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে না। এটি কৌশলগত চিন্তার ভিত্তি হিসেবে পরিণত হতে হবে। দ্রুত প্রযুক্তিগত পরিবর্তন এবং পরিবর্তনশীল জনসংখ্যা ও বৈশ্বিক অনিশ্চিতার যুগে, স্পষ্টতা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে দায়িত্ব হস্তান্তরের ক্ষমতা শুধু একটি পারিবারিক উদ্বেগ নয়, এটি একটি ব্যবসায়িক প্রয়োজনীয়তা।
সেমিনারে বাংলাদেশ ও সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়িক পরিবেশের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হয়। সেখানে বলা হয়- বাংলাদেশে কোম্পানি নিবন্ধনে সময় লাগে প্রায় ৩০ দিন, প্রয়োজন বহুমাত্রিক অনুমোদন ও বিদেশি মালিকানায় কড়াকড়ি আছে। বিপরীতে সিঙ্গাপুরে নিবন্ধন সম্ভব মাত্র ১৪ দিনে, বিদেশি মালিকানায় বাধা নেই ও ১০০টিরও বেশি দেশের সঙ্গে দ্বৈত কর সনদ বিদ্যমান। এছাড়া বাংলাদেশে করপোরেট করের পরিমাণ ২২ শতাংশ, যেখানে সিঙ্গাপুরে তা ১৭ শতাংশ।