ঢাকা ১০:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পুঁজিবাজারে আতঙ্ক

অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পুঁজিবাজারে আতঙ্ক

  • আপডেট সময় : ১১:০০:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩
  • ৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রিজার্ভের টানা পতনে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পরিশোধে অনিশ্চয়তা, রেমিট্যান্স প্রবাহে ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি আর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠার মধ্যে পুঁজিবাজারে বড় দরপতন দেখল বিনিয়োগকারীরা। ফ্লোর প্রাইসের বেশি দর থাকা কোম্পানির শেয়ারগুলো ফ্লোরমুখি হওয়ার ইঙ্গিতের মধ্যে নতুন করে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা। ফলে লেনদেন কমে নেমেছে সাত সপ্তাহের সর্বনি¤œ অবস্থানে। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস গতকাল রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলোর শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে বেশি, তার ১৩৫টিই দর হারিয়েছে, বেড়েছে কেবল ১২টির। ডিএসইতে দিনভর হাতবদল হয়েছে কেবল ৩৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার। এই লেনদেন গত ১৬ অগাস্টের পর সর্বনি¤œ। সেদিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫১ কোটি ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এই লেনদেনের ৪০ শতাংশই হয়েছে ৪০টি কোম্পানিতে। দুইশরও বেশি কোম্পানির কার্যত কোনো ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার মধ্যেও ২৪ পয়েন্টের দরপতনে ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্সকে নামিয়ে এনেছে ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে। লেনদেনের মতোই সূচকের এই অবস্থানও গত ১৬ অগাস্টের পর সর্বনি¤œ। সেদিন ডিএসইর সার্বিক সূচক ছিল ৬ হাজার ২২০ পয়েন্টে।
আতঙ্কের নানা কারণ: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সহসভাপতি আহমেদ রশিদ লালী এই দরপতনের জন্য একটি জাতীয় দৈনিকের একটি লেখাকে দায়ী করেছেন। তার দৃষ্টিতে ‘বাংলাদেশকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের পদক্ষেপ আসছে’, এমন লেখা ভাইরাল হওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়েছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। তিনি বলেন, “কয়েকটি কারণে আমাদের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির একটি বিষয় আছে। এর মধ্যে একটি পত্রিকায় লেখা হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় পদক্ষেপ আসছে। এই দুইয়ে মিলে জনমনে যে অস্থিরতা, তা বাজারেও আতঙ্ক তৈরি করেছে। “দ্বিতীয়ত আমাদের অর্থনীতির যেসব সূচক আছে, যেমন রিজার্ভ, রেমিট্যান্স, সেগুলোর নি¤œমুখী। এর কারণেও আতঙ্ক বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা ভাবছেন, ‘একটু দেখি, কী হয়’।”
ফ্লোর প্রাইসের কারণে আড়াইশটির মতো কোম্পানির শেয়ারের দর কমতে না পারার কারণে লেনদেন আটকে যাওয়াও লেনদেন খরার কারণ বলে মনে করেন তিনি। লালী বলেন, “বাজারের মধ্যে ১৫০-৬০টা ইনস্ট্রুমেন্টের লেনদেন হচ্ছে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ব্যক্তি খাতের বড় বিনিয়োগকারীদের ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। তারা বিক্রিও করতে পারছে না, না পারলে সুইচিং করতে। এসব কারণে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। কারণে বিনিয়োগকারীরা বসে আছে।“ নির্বাচনের আগে পুঁজিবাজারে গতি ফেরার আশাও দেখছেন না এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, “ভোট শেষে যখন একটি স্থিতিশীল সরকার আসবে, তখন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর হবে, আবার তখন ফ্লোর প্রাইস নিয়েও হয়ত বিএসইসি সিদ্ধান্তে আসবে, তখন বাজারে অংশগ্রহণ বাড়বে।”
সবচেয়ে বেশি ধাক্কা বীমা খাতে: মন্দা পুঁজিবাজারেও গত মাসে সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে লাফাচ্ছিল। অন্যান্য খাতের দরপতনের মধ্যেও এসব কোম্পানির শেয়ারদর টানা বেড়ে চলেছিল। লেনদেনেও সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল খাতটি। লেনদেনের দিক দিয়ে এদিনও সবার ওপরে সাধারণ বীমা। তবে ৪২টি কোম্পানির মধ্যে ৪০টিই দর হারিয়েছে। একটি আগের দিনের দরে এবং একটি দর বেড়ে লেনদেন শেষ করেছে। দরপতনের হারেও অন্য খাতকে ছাড়িয়ে গেছে সাধারণ বীমা। সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানির মধ্যে আটটিই ছিল এই খাতের। সাধারণ বীমার দুটি কোম্পানি ৮ শতাংশের বেশি, চারটি ৭ শতাংশের বেশি, সাতটি ৬ শতাংশের বেশি, পাঁচটি ৫ শতাংশের বেশি, ছয়টি কোম্পানি ৪ শতাংশের বেশি, আটটি কোম্পানি ৩ শতাংশের বেশি, পাঁচটি কোম্পানি ২ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে। এই ঝড়ের মধ্যেও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ১০ পয়সা বেড়েছে, ফ্লোর প্রাইসে আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের একটি শেয়ার। এই দরপতনের মধ্যেও লেনদেনের প্রায় এক চতুর্থাংশ ছিল সাধারণ বীমা খাতের অবদান। হাতবদল হয়েছে ৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। জীবন বীমা খাতের চিত্রটিও আলাদা কিছু নয়। লেনদেনে এই খাতের অংশগ্রহণ খুব বেশি ছিল না। দিনভর কেবল ১০ কোটি টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে এই খাতের ১২ কোম্পানিতে, যা মোট লেনদেনের ৩.১৯ শতাংশ মাত্র। তিনটি কোম্পানির লেনদেনই হয়নি। এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর হারিয়েছে ছয়টি, ফ্লোর প্রাইসে থাকা চারটি কোম্পানি আগের দিনের দরে এবং একটি সামান্য দর বেড়ে লেনদেন শেষ করেছে।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে দুর্বল কোম্পানি: ঢালাও দরপতনের দিনটিতে সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে লেনদেন শেষ করেছে ওষুধ খাতের লোকসানি কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মা। লোকসানের কারণে টানা তিন বছর লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানি গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য এখনও লভ্যাংশের সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে মার্চে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে শেয়ার প্রতি ১৯ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি। এই কোম্পানিটির শেয়ারদর গত এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত লাফিয়ে ১০ টাকা থেকে উঠে যায় ১৬ টাকা ৯০ পয়সায়। তবে প্রায় তিন মাসের দরপতনে গত বৃগস্পতিবার দর স্থির হয় ১১ টাকা ১০ পয়সা। ৯.৯১ শতাংশ বেড়ে সেটি লেনদেন শেষ করেছে ১২ টাকা ২০ পয়সায়। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এমারেল্ড অয়েলের দর বেড়েছে ৮.৮৪ শতাংশ। ছয় মাস আগেও ৩০ টাকার ঘরে হাতবদল হওয়া কোম্পানিটির উৎপাদনে আসার খবরেই শেয়ারদর ১৮৮ টাকায় উঠে গিয়েছিল। সেখান থেকে কমতে কমতে বৃহস্পতিবার দর দাঁড়ায় ১১১ টাকা ১০ পয়সায়। সেখান থেকে ৭ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে দর স্থির হয়েছে ১১৮ টাকা ৭০ পয়সায়। লোকসানি এপেক্স ট্যানারির দর ২ শতাংশের বেশি, আরেক লোকসানি ন্যাশনাল টি কোম্পানির দর ২ শতাংশের কাছাকাছি বেড়েছে। এছাড়া বহুজাতিক কোম্পনি বাটা শুর দর এক শতাংশের কিছুটা বেশি বেড়েছে।
দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর দর কয়েক পয়সা বেড়েছে, যা শতকরা হিসাবেে এক শতাংশেরও কম।

 

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

‘ক্ষমতায় থাকতে’ ইউনূস মৌলবাদীদের ‘একখানে করেছেন’: গয়েশ্বর

অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পুঁজিবাজারে আতঙ্ক

অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় পুঁজিবাজারে আতঙ্ক

আপডেট সময় : ১১:০০:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : রিজার্ভের টানা পতনে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পরিশোধে অনিশ্চয়তা, রেমিট্যান্স প্রবাহে ঘাটতি, মূল্যস্ফীতি আর রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠার মধ্যে পুঁজিবাজারে বড় দরপতন দেখল বিনিয়োগকারীরা। ফ্লোর প্রাইসের বেশি দর থাকা কোম্পানির শেয়ারগুলো ফ্লোরমুখি হওয়ার ইঙ্গিতের মধ্যে নতুন করে বিনিয়োগ করতে চাইছেন না বিনিয়োগকারীরা। ফলে লেনদেন কমে নেমেছে সাত সপ্তাহের সর্বনি¤œ অবস্থানে। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস গতকাল রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে যেগুলোর শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসের চেয়ে বেশি, তার ১৩৫টিই দর হারিয়েছে, বেড়েছে কেবল ১২টির। ডিএসইতে দিনভর হাতবদল হয়েছে কেবল ৩৬৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার। এই লেনদেন গত ১৬ অগাস্টের পর সর্বনি¤œ। সেদিন লেনদেন হয়েছিল ৩৫১ কোটি ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এই লেনদেনের ৪০ শতাংশই হয়েছে ৪০টি কোম্পানিতে। দুইশরও বেশি কোম্পানির কার্যত কোনো ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকার মধ্যেও ২৪ পয়েন্টের দরপতনে ডিএসইর সাধারণ সূচক ডিএসইএক্সকে নামিয়ে এনেছে ৬ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে। লেনদেনের মতোই সূচকের এই অবস্থানও গত ১৬ অগাস্টের পর সর্বনি¤œ। সেদিন ডিএসইর সার্বিক সূচক ছিল ৬ হাজার ২২০ পয়েন্টে।
আতঙ্কের নানা কারণ: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সহসভাপতি আহমেদ রশিদ লালী এই দরপতনের জন্য একটি জাতীয় দৈনিকের একটি লেখাকে দায়ী করেছেন। তার দৃষ্টিতে ‘বাংলাদেশকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের পদক্ষেপ আসছে’, এমন লেখা ভাইরাল হওয়ার কারণে বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়েছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা। তিনি বলেন, “কয়েকটি কারণে আমাদের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক কাজ করছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির একটি বিষয় আছে। এর মধ্যে একটি পত্রিকায় লেখা হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় পদক্ষেপ আসছে। এই দুইয়ে মিলে জনমনে যে অস্থিরতা, তা বাজারেও আতঙ্ক তৈরি করেছে। “দ্বিতীয়ত আমাদের অর্থনীতির যেসব সূচক আছে, যেমন রিজার্ভ, রেমিট্যান্স, সেগুলোর নি¤œমুখী। এর কারণেও আতঙ্ক বাড়ছে। বিনিয়োগকারীরা ভাবছেন, ‘একটু দেখি, কী হয়’।”
ফ্লোর প্রাইসের কারণে আড়াইশটির মতো কোম্পানির শেয়ারের দর কমতে না পারার কারণে লেনদেন আটকে যাওয়াও লেনদেন খরার কারণ বলে মনে করেন তিনি। লালী বলেন, “বাজারের মধ্যে ১৫০-৬০টা ইনস্ট্রুমেন্টের লেনদেন হচ্ছে। এখানে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী, ব্যক্তি খাতের বড় বিনিয়োগকারীদের ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা আটকে আছে। তারা বিক্রিও করতে পারছে না, না পারলে সুইচিং করতে। এসব কারণে বাজারে আস্থার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। কারণে বিনিয়োগকারীরা বসে আছে।“ নির্বাচনের আগে পুঁজিবাজারে গতি ফেরার আশাও দেখছেন না এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, “ভোট শেষে যখন একটি স্থিতিশীল সরকার আসবে, তখন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি দূর হবে, আবার তখন ফ্লোর প্রাইস নিয়েও হয়ত বিএসইসি সিদ্ধান্তে আসবে, তখন বাজারে অংশগ্রহণ বাড়বে।”
সবচেয়ে বেশি ধাক্কা বীমা খাতে: মন্দা পুঁজিবাজারেও গত মাসে সাধারণ বীমা কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে লাফাচ্ছিল। অন্যান্য খাতের দরপতনের মধ্যেও এসব কোম্পানির শেয়ারদর টানা বেড়ে চলেছিল। লেনদেনেও সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছিল খাতটি। লেনদেনের দিক দিয়ে এদিনও সবার ওপরে সাধারণ বীমা। তবে ৪২টি কোম্পানির মধ্যে ৪০টিই দর হারিয়েছে। একটি আগের দিনের দরে এবং একটি দর বেড়ে লেনদেন শেষ করেছে। দরপতনের হারেও অন্য খাতকে ছাড়িয়ে গেছে সাধারণ বীমা। সবচেয়ে বেশি দর হারানো ১০টি কোম্পানির মধ্যে আটটিই ছিল এই খাতের। সাধারণ বীমার দুটি কোম্পানি ৮ শতাংশের বেশি, চারটি ৭ শতাংশের বেশি, সাতটি ৬ শতাংশের বেশি, পাঁচটি ৫ শতাংশের বেশি, ছয়টি কোম্পানি ৪ শতাংশের বেশি, আটটি কোম্পানি ৩ শতাংশের বেশি, পাঁচটি কোম্পানি ২ শতাংশের বেশি দর হারিয়েছে। এই ঝড়ের মধ্যেও ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ১০ পয়সা বেড়েছে, ফ্লোর প্রাইসে আগের দিনের দরে হাতবদল হয়েছে প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের একটি শেয়ার। এই দরপতনের মধ্যেও লেনদেনের প্রায় এক চতুর্থাংশ ছিল সাধারণ বীমা খাতের অবদান। হাতবদল হয়েছে ৭৬ কোটি ৩০ লাখ টাকা। জীবন বীমা খাতের চিত্রটিও আলাদা কিছু নয়। লেনদেনে এই খাতের অংশগ্রহণ খুব বেশি ছিল না। দিনভর কেবল ১০ কোটি টাকার শেয়ার হাতবদল হয়েছে এই খাতের ১২ কোম্পানিতে, যা মোট লেনদেনের ৩.১৯ শতাংশ মাত্র। তিনটি কোম্পানির লেনদেনই হয়নি। এই খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর হারিয়েছে ছয়টি, ফ্লোর প্রাইসে থাকা চারটি কোম্পানি আগের দিনের দরে এবং একটি সামান্য দর বেড়ে লেনদেন শেষ করেছে।
দর বৃদ্ধির শীর্ষে দুর্বল কোম্পানি: ঢালাও দরপতনের দিনটিতে সার্কিট ব্রেকার ছুঁয়ে লেনদেন শেষ করেছে ওষুধ খাতের লোকসানি কোম্পানি সেন্ট্রাল ফার্মা। লোকসানের কারণে টানা তিন বছর লভ্যাংশ না দেওয়া কোম্পানি গত জুনে সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য এখনও লভ্যাংশের সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে মার্চে তৃতীয় প্রান্তিক শেষে শেয়ার প্রতি ১৯ পয়সা লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি। এই কোম্পানিটির শেয়ারদর গত এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত লাফিয়ে ১০ টাকা থেকে উঠে যায় ১৬ টাকা ৯০ পয়সায়। তবে প্রায় তিন মাসের দরপতনে গত বৃগস্পতিবার দর স্থির হয় ১১ টাকা ১০ পয়সা। ৯.৯১ শতাংশ বেড়ে সেটি লেনদেন শেষ করেছে ১২ টাকা ২০ পয়সায়। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা এমারেল্ড অয়েলের দর বেড়েছে ৮.৮৪ শতাংশ। ছয় মাস আগেও ৩০ টাকার ঘরে হাতবদল হওয়া কোম্পানিটির উৎপাদনে আসার খবরেই শেয়ারদর ১৮৮ টাকায় উঠে গিয়েছিল। সেখান থেকে কমতে কমতে বৃহস্পতিবার দর দাঁড়ায় ১১১ টাকা ১০ পয়সায়। সেখান থেকে ৭ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে দর স্থির হয়েছে ১১৮ টাকা ৭০ পয়সায়। লোকসানি এপেক্স ট্যানারির দর ২ শতাংশের বেশি, আরেক লোকসানি ন্যাশনাল টি কোম্পানির দর ২ শতাংশের কাছাকাছি বেড়েছে। এছাড়া বহুজাতিক কোম্পনি বাটা শুর দর এক শতাংশের কিছুটা বেশি বেড়েছে।
দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর দর কয়েক পয়সা বেড়েছে, যা শতকরা হিসাবেে এক শতাংশেরও কম।