ঢাকা ০৯:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
স্বাস্থ্য প্রতিদিন=========

অমৃত ফল আমলকী

  • আপডেট সময় : ০৬:২৬:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • ৭ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

হাকিম মহাম্মদ আশরাফুল আলম

আসুন, পিচ্চি ফল আমলকী সম্বন্ধে কিছু জানা যাক। আমলকী বর্তমানে কম বেশী সবাই চিনি বা জানি। কারণ ন্যাচারাল মেডিসিনের বড় একটা অংশ ঐ পিচ্চি ফলটার দখলে। স্মরণীয় যে, ২০টা কমলালেবুর রসে যে পরিমাণ ঠরঃধসরহ ঈ রয়েছে, একটা আমলকীতে সে পরিমাণ ঠরঃধসরহ ঈ পাওয়া যায়।

আমলকী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সম্মৃদ্ধ ও মানবদেহ ডিটক্সিফিকেশনে রয়েছে ফলটির অনন্য ভূমিকা। আয়ুর্বেদ বিজ্ঞানের আলোকে বলতে গেলে বলতে হয়, আমলকীর অন্তর্নীহিত গুণ হচ্ছে বায়ু, পিত্ত, কফের যে কোনো বিকৃতিকে স্বাভাবিক করে দেয়। ফলে মানবদেহ রোগ মুক্ত থাকে। মনে রাখবেন- বায়ু, পিত্ত, কফের ভারসাম্যহীনতা রোগ আত্রুমনের প্রধান কারন।

শরীর রক্ষার জন্য প্রথম এবং প্রধান যে উপাদানের প্রয়োজন হয় শুদ্ধ রসের, তাছাড়া দেহে ক্ষয় পূরণের প্রয়োজনে যে পার্থিব সত্তার প্রয়োজন হয়- সেটি এই পিচ্চি ফলে সৃষ্টি হয়; যা শোনিত সৃষ্টির মূল উৎস। এই হলো জীবন বিজ্ঞানের ভাষ্য।

আসুন, ইউনানি তথা ট্রাডিশনাল বিজ্ঞান কি বলে একটু জানার চেষ্টা করি। ইউনানী বিজ্ঞানে আমলকী বলকারক হৃদযন্ত্র, যকৃৎ, পেশি ও স্নায়ুর শক্তিবর্ধক। রক্ত পরিষ্কারক, চর্ম বা ত্বকের লাবণ্য আনায়ন কারক এবং নার্ভাস সিস্টেমকে উজ্জীবিত রাখতে ভূমিকা রাখে ছোট্ট ফল আমলকী। এ ছাড়া চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে, আমলকী ঘটিত তৈল সুনিদ্রা আনায়নে মহীরুহের মতো ভূমিকা রাখে। আমলকী পিত্তজনিত রোগে ভূমিকা রাখে।

প্রখ্যাত বিজ্ঞানীগন আমলকীকে কষায় রস, রক্ত পরিশোধনকারী, এবং অম্ল পিত্তনাশক হিসেবে বর্ননা করেছেন। আমলকী যে ন্যাচারাল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। আর এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, আমলকী ভিটামিন ‘সি’ সম্মৃদ্ধ ফল। এর ভিটামিন ‘সি’র পরিমাণ ‘কমলালেবুর রসের বিশগুণ। এই পিচ্চি ফলটাকে বলা যেতে পারে ‘অমৃত ফল’।

অ্যন্টি-অক্সিডেন্ট আসলে কি সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। অক্সিডাইজড প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানবদেহের শেল বা তন্তকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের প্রভাব থেকে সেলগুলো ডিটক্সিফাইড বা আমরা মেটে বাংলায় বলতে পারি পরিষ্কারকরণ বা পিউরিফাইং এটিই হচ্ছে অ্যন্টি-অক্সিডেন্ট। তাহলে এ কথা পরিষ্কার আমলকী মানবদেহের শেল পরিষ্কারকরণে এবং ড্যামেজ বা ক্ষতিগ্রস্ত সেলকে পুনরুজ্জীবিত রাখতে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, আমলকী নির্যাস বা চূর্ণ মানবদেহকে এসিডিক থেকে অ্যালকালাইনে উন্নীত করে সহজেই। এ জন্যই আমলকীর নির্যাস বা চূর্ণ মানবদেহের ক্যানসার সেলগুলোকে গ্রোথ হতে বাধা দান করে বা সহজেই মেরে ফেলে।

আসুন, আমি কিছু বাস্তব তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। আমাদের দেশে তথা বিশ্বে ডিজেনারেটিভ বা অসংক্রামক ব্যাধি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এগুলোর বহু কারণ। আমি সেদিকে যাচ্ছি না। ভিজেনারেটিভ রোগগুলো সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। যেমন- ডায়াবেটিক, কিডনি রোগ, ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, সোরিয়াসিস। এ রোগগুলোর পূর্ণ সমাধান আধুনিক বিজ্ঞান দিতে পারছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারণও অজ্ঞাত।

ডায়াবেটিস মেটাবলিজম সিস্টেমের রোগ। এর কাজ হচ্ছে শুধু মানবদেহের শক্তি ক্ষয় করা। কনভেনশনাল মেডিসিনে এ রোগ নিয়ন্ত্রন ও নিরাময় কোনটাই সম্ভব নয়; বরং দীর্ঘদিন ওষুধনির্ভর থাকার কারণে জটিল সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে।

লেখক: বিএ.ডি.ইউ.এম.এস (ঢাকা), ট্রাডিশনাল মেডিসিনের গবেষক, আই.টি.এম, ইউনানি ও ন্যাচারাল মেডিসিনের চিকিৎসক

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : prottashasmf@yahoo.com
আপলোডকারীর তথ্য

স্বাস্থ্য প্রতিদিন=========

অমৃত ফল আমলকী

আপডেট সময় : ০৬:২৬:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

হাকিম মহাম্মদ আশরাফুল আলম

আসুন, পিচ্চি ফল আমলকী সম্বন্ধে কিছু জানা যাক। আমলকী বর্তমানে কম বেশী সবাই চিনি বা জানি। কারণ ন্যাচারাল মেডিসিনের বড় একটা অংশ ঐ পিচ্চি ফলটার দখলে। স্মরণীয় যে, ২০টা কমলালেবুর রসে যে পরিমাণ ঠরঃধসরহ ঈ রয়েছে, একটা আমলকীতে সে পরিমাণ ঠরঃধসরহ ঈ পাওয়া যায়।

আমলকী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সম্মৃদ্ধ ও মানবদেহ ডিটক্সিফিকেশনে রয়েছে ফলটির অনন্য ভূমিকা। আয়ুর্বেদ বিজ্ঞানের আলোকে বলতে গেলে বলতে হয়, আমলকীর অন্তর্নীহিত গুণ হচ্ছে বায়ু, পিত্ত, কফের যে কোনো বিকৃতিকে স্বাভাবিক করে দেয়। ফলে মানবদেহ রোগ মুক্ত থাকে। মনে রাখবেন- বায়ু, পিত্ত, কফের ভারসাম্যহীনতা রোগ আত্রুমনের প্রধান কারন।

শরীর রক্ষার জন্য প্রথম এবং প্রধান যে উপাদানের প্রয়োজন হয় শুদ্ধ রসের, তাছাড়া দেহে ক্ষয় পূরণের প্রয়োজনে যে পার্থিব সত্তার প্রয়োজন হয়- সেটি এই পিচ্চি ফলে সৃষ্টি হয়; যা শোনিত সৃষ্টির মূল উৎস। এই হলো জীবন বিজ্ঞানের ভাষ্য।

আসুন, ইউনানি তথা ট্রাডিশনাল বিজ্ঞান কি বলে একটু জানার চেষ্টা করি। ইউনানী বিজ্ঞানে আমলকী বলকারক হৃদযন্ত্র, যকৃৎ, পেশি ও স্নায়ুর শক্তিবর্ধক। রক্ত পরিষ্কারক, চর্ম বা ত্বকের লাবণ্য আনায়ন কারক এবং নার্ভাস সিস্টেমকে উজ্জীবিত রাখতে ভূমিকা রাখে ছোট্ট ফল আমলকী। এ ছাড়া চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে, আমলকী ঘটিত তৈল সুনিদ্রা আনায়নে মহীরুহের মতো ভূমিকা রাখে। আমলকী পিত্তজনিত রোগে ভূমিকা রাখে।

প্রখ্যাত বিজ্ঞানীগন আমলকীকে কষায় রস, রক্ত পরিশোধনকারী, এবং অম্ল পিত্তনাশক হিসেবে বর্ননা করেছেন। আমলকী যে ন্যাচারাল অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমত নেই। আর এটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত যে, আমলকী ভিটামিন ‘সি’ সম্মৃদ্ধ ফল। এর ভিটামিন ‘সি’র পরিমাণ ‘কমলালেবুর রসের বিশগুণ। এই পিচ্চি ফলটাকে বলা যেতে পারে ‘অমৃত ফল’।

অ্যন্টি-অক্সিডেন্ট আসলে কি সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। অক্সিডাইজড প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানবদেহের শেল বা তন্তকে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের প্রভাব থেকে সেলগুলো ডিটক্সিফাইড বা আমরা মেটে বাংলায় বলতে পারি পরিষ্কারকরণ বা পিউরিফাইং এটিই হচ্ছে অ্যন্টি-অক্সিডেন্ট। তাহলে এ কথা পরিষ্কার আমলকী মানবদেহের শেল পরিষ্কারকরণে এবং ড্যামেজ বা ক্ষতিগ্রস্ত সেলকে পুনরুজ্জীবিত রাখতে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, আমলকী নির্যাস বা চূর্ণ মানবদেহকে এসিডিক থেকে অ্যালকালাইনে উন্নীত করে সহজেই। এ জন্যই আমলকীর নির্যাস বা চূর্ণ মানবদেহের ক্যানসার সেলগুলোকে গ্রোথ হতে বাধা দান করে বা সহজেই মেরে ফেলে।

আসুন, আমি কিছু বাস্তব তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। আমাদের দেশে তথা বিশ্বে ডিজেনারেটিভ বা অসংক্রামক ব্যাধি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এগুলোর বহু কারণ। আমি সেদিকে যাচ্ছি না। ভিজেনারেটিভ রোগগুলো সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক। যেমন- ডায়াবেটিক, কিডনি রোগ, ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, সোরিয়াসিস। এ রোগগুলোর পূর্ণ সমাধান আধুনিক বিজ্ঞান দিতে পারছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারণও অজ্ঞাত।

ডায়াবেটিস মেটাবলিজম সিস্টেমের রোগ। এর কাজ হচ্ছে শুধু মানবদেহের শক্তি ক্ষয় করা। কনভেনশনাল মেডিসিনে এ রোগ নিয়ন্ত্রন ও নিরাময় কোনটাই সম্ভব নয়; বরং দীর্ঘদিন ওষুধনির্ভর থাকার কারণে জটিল সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে।

লেখক: বিএ.ডি.ইউ.এম.এস (ঢাকা), ট্রাডিশনাল মেডিসিনের গবেষক, আই.টি.এম, ইউনানি ও ন্যাচারাল মেডিসিনের চিকিৎসক

আজকের প্রত্যাশা/কেএমএএ