বিনোদন ডেস্ক: নিজের অভিনয় ও ব্যক্তিত্বের জাদুবলে ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পে অমিতাভ বচ্চন নিজেকে একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। তাকে ভালোবেসে সবাই ‘বলিউড শাহেনশাহ’ বলে ডাকেন। আজ (১১ অক্টোবর) শনিবার অমিতাভের ৮৩ তম জন্মদিনে। এ উপলক্ষে তাকে শুভেচ্ছা জানালেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদ এবং কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে কাটানো দিনগুলোর স্মৃতির কথা তার শুভেচ্ছা বার্তায় মনে করেন তিনি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ মমতা অমিতাভ বচ্চনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, ‘সুস্থ থাকুন। সুখসমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক আপনার জীবন। ১৯৮৪ সালে প্রথমবার সংসদের সদস্য হই দুজনে। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে অমিতাভ এবং জয়া বচ্চনের উপস্থিতিতে আমরা আপ্লুত। আমাদের উৎসব পরিবারের সদস্য তারা।’
এখন তিনি বলিউডের শাহেনশাহ হলেও, ক্যারিয়ারের শুরুটা মোটেই সহজ ছিল না অমিতাভের। কলকাতা শহরে পা দিয়ে ছোটোখাটো চাকরি করেছেন। রাশভারী আওয়াজের মালিক হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন রেডিওতেও। কিন্তু ব্যর্থ হন তিনি। অতিরিক্ত ভারী আওয়াজ হওয়ার কারণে বেতারে কাজ জোটেনি। ঠিক সেই সময়ে পরিচালক মৃণাল সেনের নজরে পড়েন।
অমিতাভের আওয়াজকে মৃণাল সেন ব্যবহার করেন তার ছবি ‘ভুবন সোমে’। সেই থেকেই সিনেমায় কাজ শুরু করেন। তবে শুধু আওয়াজে নয়, দীঘল চেহারার অমিতাভ সিনেপর্দায় পা দেওয়া মাত্রই নতুন স্ট্রাগল শুরু। প্রথম সিনেমা ‘সাত হিন্দুস্থানি’। ক্যারিয়ারের শুরু একাধিক ছবি ফ্লপ করে। ভাগ্য ফেরে ‘দিওয়ার’, ‘জঞ্জির’ থেকে। হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি পায় ‘অ্যাংরি ইয়ংম্যান’। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অমিতাভ মানেই বক্স অফিস সুপারহিট। রীতিমতো ইতিহাস তৈরি করতে শুরু করেন বলিউডের এ অভিনেতা। ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’, ‘শোলে’, ‘শরাবি’, ‘নমকহালাল’, ‘ইয়ারানা’, ‘মর্দ’, একের পর এক বিখ্যাত সিনেমা তিনি উপহার দেন।
অমিতাভ বচ্চনের সত্তর-আশির দশকের চলচ্চিত্রের পর্দার শাহেনশার ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে হঠাৎ করে। নয়ের দশকে একের পর এক ছবি ফ্লপ করে। সিনেমার ব্যবসায় নেমে ক্ষতির মুখ দেখতে হয়। চূড়ান্ত অর্থ কষ্টের মধ্যে পড়তে হয় অমিতাভকে। কিন্তু বরাবরই লড়াকু স্বভাবের মানুষ তিনি। ফের ঘুরে দাঁড়ান তিনি। অনেকটা তার বিখ্যাত সব সিনেমার মতোই প্রত্যাবর্তন ঘটান বাস্তব জীবনে। নিজেকে নিয়ে শুরু করেন বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ইমেজ ভেঙে নিজেই তৈরি করেন নিজের এক নতুন সিনেমা।
‘ব্ল্যাক’, ‘পা’, ‘কাভি খুশি কাভি গাম’, ‘মহব্বাতে’র মতো বিভিন্ন স্বাদের সিনেমা করে অমিতাভ নিজেকে বদলে দিতে শুরু করেন। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে বদলাতে থাকেন। ধারণা, ভাবনা বদলে ফেলে সময়ের উপযোগী হয়ে ওঠেন। টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে শুরু করেন।
অমিতাভ বচ্চনকে হয়তো তার এ নিয়মিত বদলে যাওয়ার গুণই তাকে করে তুলেছে সবার সেরা। চলচ্চিত্রের পর্দা থেকে টেলিভিশন- এখনো সব জায়গা তার আয়ত্বে।
এসি/আপ্র/১১/১০/২০২৫