ঢাকা ০২:৪১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
সরকারের কোনো আশ্বাসেই সড়ক ছাড়বেন না

অভ্যুত্থানে আহতদের আলটিমেটাম

  • আপডেট সময় : ০৫:১০:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ২১ বার পড়া হয়েছে

গত শনিবার দিবাগত রাত থেকে রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতাল ও শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। ছবি-সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাত দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে এই রুটে যান চলাচল। ফলে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।

শনিবার দিবাগত রাতে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেওয়ার এক পর্যায়ে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার পর থেকেই শিশুমেলা সড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করেন জুলাই আন্দোলনে আহত পঙ্গু হাসপাতাল ও চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা। দুপুর প্রায় তিনটা নাগাদ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও জানান তারা।

আন্দোলনকারী মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়কে অবস্থান করবো। যদি উপদেষ্টারা কেউ এসে আমাদের আশ্বস্ত করেন তবুও আমরা রাস্তা ছাড়বো না। তাদের ওপর থেকে আমাদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আর আশ্বাসে চলবে না। বিকেল ৪টার মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো। পরবর্তীসময়ে আলটিমেটামের মেয়াদ আরও দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা হয়।

সাত দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর শ্যামলী শিশুমেলার ফুটওভার ব্রিজের নিচে অবরোধ করে দাবি আদায়ের কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ফলে গাবতলী থেকে ধানমন্ডিগামী ও ধানমন্ডি থেকে গাবতলীগামী সড়কের দুই পাশে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ গাড়ির জট।

টানা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির ফলে গাড়ি থেকে নেমে শত শত মানুষ পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের উদ্দেশে।

রাজধানীর গাবতলী থেকে গুলিস্তানে যাচ্ছেন আরিফ হাসান। তিনি বলেন, গাবতলী থেকে গাড়িতে উঠেছিলাম গুলিস্থান যাবো। কিন্তু টেকনিক্যাল পার হতেই যানজটে আটকে আগে বাস। টেকনিক্যাল থেকে হাঁটতে হাঁটতে কেবল শ্যামলী পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আরও কতদূর হাঁটতে হবে কে জানে!
পরিবার নিয়ে আজিমপুর থেকে শিশু হাসপাতালে এসেছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাচ্চাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য শিশু হাসপাতালে এসেছি। ধানমন্ডি পর্যন্ত এসে গাড়ি বন্ধের কারণে যানজটে পড়ি। পরে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি। এখানে সড়ক অবরোধের কারণে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়েও অনেক যানজট লেগে গেছে।

এর আগে গত শনিবার রাতে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এসময় তারা সাত দফা দাবি জানান। সেগুলো হলো-

সাত দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা

১. চব্বিশের যোদ্ধাদের মধ্যে আহত এবং শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বিচার করতে হবে।
২. বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেফতার করতে হবে।
৩. আহতদের ক্যাটাগরি সঠিকভাবে প্রণয়ন।
৪. আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন।
৫. আহতদের চিকিৎসার সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. আহত এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এবং
৭. আহতদের আর্থিক অনুদানের অঙ্ক বৃদ্ধিসহ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার বিষয় সুসংহত করতে হবে।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

সরকারের কোনো আশ্বাসেই সড়ক ছাড়বেন না

অভ্যুত্থানে আহতদের আলটিমেটাম

আপডেট সময় : ০৫:১০:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাত দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে এই রুটে যান চলাচল। ফলে দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুটে চলাচলকারী সাধারণ মানুষ।

শনিবার দিবাগত রাতে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেওয়ার এক পর্যায়ে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার পর থেকেই শিশুমেলা সড়কে অবস্থান নিয়ে দাবি আদায়ে আন্দোলন শুরু করেন জুলাই আন্দোলনে আহত পঙ্গু হাসপাতাল ও চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা। দুপুর প্রায় তিনটা নাগাদ এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্দোলনকারীরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও জানান তারা।

আন্দোলনকারী মো. আইয়ুব হোসেন বলেন, আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা সড়কে অবস্থান করবো। যদি উপদেষ্টারা কেউ এসে আমাদের আশ্বস্ত করেন তবুও আমরা রাস্তা ছাড়বো না। তাদের ওপর থেকে আমাদের আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। এখন আর আশ্বাসে চলবে না। বিকেল ৪টার মধ্যে আমাদের দাবি আদায় না হলে আমরা সচিবালয়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবো। পরবর্তীসময়ে আলটিমেটামের মেয়াদ আরও দুই ঘণ্টা বাড়িয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত করা হয়।

সাত দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা

সরেজমিনে দেখা যায়, রাজধানীর শ্যামলী শিশুমেলার ফুটওভার ব্রিজের নিচে অবরোধ করে দাবি আদায়ের কর্মসূচি পালন করছেন তারা। ফলে গাবতলী থেকে ধানমন্ডিগামী ও ধানমন্ডি থেকে গাবতলীগামী সড়কের দুই পাশে দেখা দিয়েছে দীর্ঘ গাড়ির জট।

টানা প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির ফলে গাড়ি থেকে নেমে শত শত মানুষ পায়ে হেঁটে রওনা দিয়েছেন গন্তব্যের উদ্দেশে।

রাজধানীর গাবতলী থেকে গুলিস্তানে যাচ্ছেন আরিফ হাসান। তিনি বলেন, গাবতলী থেকে গাড়িতে উঠেছিলাম গুলিস্থান যাবো। কিন্তু টেকনিক্যাল পার হতেই যানজটে আটকে আগে বাস। টেকনিক্যাল থেকে হাঁটতে হাঁটতে কেবল শ্যামলী পর্যন্ত আসতে পেরেছি। আরও কতদূর হাঁটতে হবে কে জানে!
পরিবার নিয়ে আজিমপুর থেকে শিশু হাসপাতালে এসেছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাচ্চাকে ডাক্তার দেখানোর জন্য শিশু হাসপাতালে এসেছি। ধানমন্ডি পর্যন্ত এসে গাড়ি বন্ধের কারণে যানজটে পড়ি। পরে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়ে অনেক কষ্টে এই পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছি। এখানে সড়ক অবরোধের কারণে মোহাম্মদপুরের ভেতর দিয়েও অনেক যানজট লেগে গেছে।

এর আগে গত শনিবার রাতে পঙ্গু হাসপাতালের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। এসময় তারা সাত দফা দাবি জানান। সেগুলো হলো-

সাত দফা দাবি আদায়ে রাজধানীর শিশুমেলা সংলগ্ন মিরপুর সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা

১. চব্বিশের যোদ্ধাদের মধ্যে আহত এবং শহীদদের হত্যার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পূর্ণাঙ্গ বিচার করতে হবে।
২. বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীদের সরকারের বিভিন্ন পদ থেকে অপসারণ ও গ্রেফতার করতে হবে।
৩. আহতদের ক্যাটাগরি সঠিকভাবে প্রণয়ন।
৪. আহতদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে বাস্তবায়ন।
৫. আহতদের চিকিৎসার সর্বোচ্চ সুব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. আহত এবং শহীদদের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ প্রয়োজনীয় আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। এবং
৭. আহতদের আর্থিক অনুদানের অঙ্ক বৃদ্ধিসহ ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার বিষয় সুসংহত করতে হবে।