ঢাকা ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫

অভ্যুত্থানের বছরে আয়-ব্যয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে জামায়াত

  • আপডেট সময় : ০৯:২৫:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫
  • ৩ বার পড়া হয়েছে

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পাওয়া জামায়াতে ইসলামী জুলাই অভ্যুত্থানের বছরে আয় আর ব্যয়ের হিসাবে সব দলকে ছাড়িয়ে গেছে।
২০২৪ সালে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা আয়ের বিপরীতে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে দলটি।
জামায়াত বলছে, কর্মীদের চাঁদা থেকেই তারা আয় করেছে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। আর কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে গিয়েই তাদের সবচেয়ে বেশি, সাড়ে ৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আয়ের এই অংক বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ, জাতীয় পার্টির প্রায় ১১গুণ বেশি।

গতবছরের হিসাবে জামায়াত স্থিতি দেখিয়েছে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাজার ১২২ টাকা। আর ২০২৪ সাল তারা শুরু করেছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা স্থিতি নিয়ে।
সে হিসেবে ২০২৫ সালের শুরুতে তাদের তহবিলে স্থিতি ছিল ১৫ কোটি ৭৩ লাখ ৭ হাজার ৩১৩ টাকা।
জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল গত ৩১ জুলাই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ২০২৪ পঞ্জিকাবর্ষের আয়-ব্যয়ের যে হিসাব জমা দেয়। তবে সেই প্রতিবেদনের তথ্য সাংবাদিকরা জানতে পারেন মঙ্গলবার (১২ আগস্ট)।
২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলতি বছর তারা নিবন্ধন ফিরে পায়। সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এক যুগ পর ফের আয় ব্যয়ের হিসাব দিলো দলটি।

ইসির উপসচিব মাহবুব আলম শাহ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সাংবাদিকদের বলেন, নির্ধারিত সময়েই দলটি অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জামাত ভোটে না থাকলেও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা শুরু করে দিয়েছে অনেক নির্বাচনি এলাকায়। নির্বাচনি তৎপরতায় ব্যয়ের প্রতিফলনও অডিট রিপোর্টে দেখা গেছে। তবে সেখানে বলা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর কোনো ব্যাংক হিসাব নেই।

কোথা থেকে কত আয়: কর্মী ও সদস্যদের চাঁদা থেকে আয় ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা।
কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে আয় ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

কোথায় কত ব্যয়: কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা। বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধে ব্যয় ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা। প্রচার ও পরিবহনে ব্যয় ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা। ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠানে ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।

বাকিরা অনেক দূর: ২০২৪ সালে বিএনপির আয় দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। আর ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২০ টাকা। ব্যাংকে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা জমা রয়েছে। একই বছর জাতীয় পার্টির আয় হয়েছে ২ কেটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা; ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। দলের হিসাবে জমা আছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয় করেছে এক কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪৪ টাকা। গণঅধিকার পরিষদের আয় ৪৬ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮ টাকা। এছাড়া বাকি দলগুলোর আয়-ব্যয় আরো অনেক কম।

 

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া অংশীদারিত্ব আরো গভীর করার অঙ্গীকার

অভ্যুত্থানের বছরে আয়-ব্যয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে জামায়াত

আপডেট সময় : ০৯:২৫:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক: এক যুগ পর নিবন্ধন ফিরে পাওয়া জামায়াতে ইসলামী জুলাই অভ্যুত্থানের বছরে আয় আর ব্যয়ের হিসাবে সব দলকে ছাড়িয়ে গেছে।
২০২৪ সালে ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা আয়ের বিপরীতে ২৩ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১৭৭ টাকা ব্যয় দেখিয়েছে দলটি।
জামায়াত বলছে, কর্মীদের চাঁদা থেকেই তারা আয় করেছে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা। আর কর্মীদের বেতন-ভাতা দিতে গিয়েই তাদের সবচেয়ে বেশি, সাড়ে ৬ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর আয়ের এই অংক বিএনপির প্রায় দ্বিগুণ, জাতীয় পার্টির প্রায় ১১গুণ বেশি।

গতবছরের হিসাবে জামায়াত স্থিতি দেখিয়েছে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৬২ হাজার ১২২ টাকা। আর ২০২৪ সাল তারা শুরু করেছিল ১০ কোটি ৪৯ লাখ ৪৫ হাজার ১৯১ টাকা স্থিতি নিয়ে।
সে হিসেবে ২০২৫ সালের শুরুতে তাদের তহবিলে স্থিতি ছিল ১৫ কোটি ৭৩ লাখ ৭ হাজার ৩১৩ টাকা।
জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল গত ৩১ জুলাই নির্বাচন কমিশনে গিয়ে ২০২৪ পঞ্জিকাবর্ষের আয়-ব্যয়ের যে হিসাব জমা দেয়। তবে সেই প্রতিবেদনের তথ্য সাংবাদিকরা জানতে পারেন মঙ্গলবার (১২ আগস্ট)।
২০১৩ সালে নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আগে সর্বশেষ আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছিল জামায়াতে ইসলামী। জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চলতি বছর তারা নিবন্ধন ফিরে পায়। সেই বাধ্যবাধকতা অনুযায়ী এক যুগ পর ফের আয় ব্যয়ের হিসাব দিলো দলটি।

ইসির উপসচিব মাহবুব আলম শাহ মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সাংবাদিকদের বলেন, নির্ধারিত সময়েই দলটি অডিট রিপোর্ট জমা দিয়েছে। দশম থেকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত জামাত ভোটে না থাকলেও ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা শুরু করে দিয়েছে অনেক নির্বাচনি এলাকায়। নির্বাচনি তৎপরতায় ব্যয়ের প্রতিফলনও অডিট রিপোর্টে দেখা গেছে। তবে সেখানে বলা হয়েছে, জামায়াতে ইসলামীর কোনো ব্যাংক হিসাব নেই।

কোথা থেকে কত আয়: কর্মী ও সদস্যদের চাঁদা থেকে আয় ১৬ কোটি ৫৬ লাখ ৪২ হাজার ১৬২ টাকা।
কার্যনির্বাহী কমিটি অথবা উপদেষ্টা পরিষদের চাঁদা অথবা অন্যান্য চাঁদা ৩৭ লাখ ৮৭ হাজার ১৪৯ টাকা। বিভিন্ন ব্যক্তি অথবা সংস্থার কাছ থেকে অনুদান ১১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৯ টাকা। দলের পত্রিকা, সাময়িকী, বইপুস্তক বিক্রি থেকে আয় ৯ লাখ ১১ হাজার ২৯০ টাকা। অন্যান্য চাঁদা থেকে আয় ৭ লাখ ২১ হাজার ৭৯ টাকা। মোট আয় ২৮ কোটি ৯৭ লাখ ২৯৯ টাকা।

কোথায় কত ব্যয়: কর্মীদের বেতন-ভাতা ও বোনাসে ৬ কোটি ৫৭ লাখ ৬৭ হাজার ৮৭৩ টাকা। আবাসন ও প্রশাসনিক খরচ ২ কোটি ৬৮ লাখ ৭ হাজার ৪৯৫ টাকা। বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাসসহ বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধে ব্যয় ২ লাখ ৪৬ হাজার ১৮ টাকা। ডাক, টেলিফোন, ইন্টারনেট, কুরিয়ার সার্ভিস, পত্রিকা বাবদ ব্যয় ৮ লাখ ৪৪ হাজার ৫২৬ টাকা। আপ্যায়নে ব্যয় ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬২ টাকা। প্রচার ও পরিবহনে ব্যয় ২ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ৫৬৩ টাকা। যাতায়াত বাবদ খরচ ১ কোটি ২৭ লাখ ১ হাজার ৭৭৬ টাকা। জনসভা, পথসভা, ঘরোয়া বৈঠকে ব্যয় ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৫ টাকা। প্রার্থীদের অনুদান দেওয়া হয়েছে ১১ কোটি ৫ লাখ ১৫ হাজার ৪২০ টাকা। ধর্মীয় বিশেষ অনুষ্ঠানে ব্যয় ৩২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৫০ টাকা। অন্যান্য ব্যয় ১ কোটি ১২ লাখ ৫৬ হাজার ৯৮৯ টাকা।

বাকিরা অনেক দূর: ২০২৪ সালে বিএনপির আয় দেখানো হয়েছে ১৫ কোটি ৬৫ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪২ টাকা। আর ব্যয় দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৪ হাজার ৮২০ টাকা। ব্যাংকে ১০ কোটি ৮৫ লাখ ৯০ হাজার ১৯ টাকা জমা রয়েছে। একই বছর জাতীয় পার্টির আয় হয়েছে ২ কেটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮ টাকা; ব্যয় দেখিয়েছে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৮৮ হাজার ৪৪ টাকা। দলের হিসাবে জমা আছে ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯৪ টাকা।
আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয় করেছে এক কোটি ৩৭ লাখ ৯৪ হাজার ৩৪৪ টাকা। গণঅধিকার পরিষদের আয় ৪৬ লাখ ৪ হাজার ৩০০ টাকা। আর ব্যয় হয়েছে ৪৫ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮ টাকা। এছাড়া বাকি দলগুলোর আয়-ব্যয় আরো অনেক কম।