ঢাকা ০১:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

অভিশংসিত ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট

  • আপডেট সময় : ০৫:০৫:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক: ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতের্তে অভিশংসিত হয়েছেন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের আইনপ্রণেতারা; যাদের বেশিরভাগই প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের ঘনিষ্ঠ, এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এটি ফিলিপাইনের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক বিভক্তিকে আরও গভীর করল।

অভিশংসনের মূল অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতি, তার স্ত্রী ও স্পিকারের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি, অফিসের গোপন তহবিলের অনিয়ম এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে ব্যর্থতা।

মার্কোস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করলেও, দুতের্তের বাবা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। অভিশংসনের বিষয়ে সারা দুতের্তে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার ভাই, প্রতিনিধি পাওলো দুতের্তে বলেছেন, ‘এটি স্পষ্ট রাজনৈতিক হয়রানি।’

অভিশংসন মামলার নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, বিরোধী আইনপ্রণেতারা দ্রুত স্বাক্ষর সংগ্রহ করে ভিত্তিহীন অভিশংসন মামলা সিনেটে পাঠানোর চেষ্টা করেছেন।
দুতের্তে দীর্ঘদিন ধরে প্রেসিডেন্ট মার্কোস, তার স্ত্রী এবং কাজিন, প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মার্টিন রোমুয়ালদেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দুর্বল নেতৃত্ব এবং ২০২৮ সালে সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতাকে বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ তুলেছেন। প্রতিনিধি পরিষদের অন্তত ২১৫ জন সদস্য অভিশংসন প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন; যা দ্রুত সিনেটে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। প্রতিনিধি পরিষদের সচিব রেজিনাল্ড ভেলাসকো জানান, চার মাসের দীর্ঘ বিরতির আগে শেষ অধিবেশনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

প্রেসিডেন্টের ছেলে, প্রতিনিধি সান্দ্রো মার্কোস এবং স্পিকার রোমুয়ালদেজও অভিযোগে স্বাক্ষর করেন। তারা সিনেটকে অভিশংসন আদালত গঠন করে ভাইস-প্রেসিডেন্টের বিচার পরিচালনা এবং তাকে পদ থেকে অপসারণের আহ্বান জানান।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘দুতের্তের আচরণ জনগণের বিশ্বাসের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের পরিচয় বহন করে, যা তাকে সরকারি পদে থাকার জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য প্রমাণ করে।’

২০২২ সালের নির্বাচনে মার্কোস ও দুতের্তে ঐক্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। উভয়ের পরিবারই অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, তবে তাদের আঞ্চলিক সমর্থন তাদের নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করে।

মার্কোস ও সারা দুতের্তের রাজনৈতিক জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুর্বল হতে থাকে।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত দীর্ঘ সংসদীয় তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৬১২.৫ মিলিয়ন পেসো (১০.৫ মিলিয়ন ডলার) গোপন তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠে। পরে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে অব্যক্ত সম্পদ, সম্পদ ঘোষণার ব্যর্থতা এবং মার্কোস সরকারের নীতির অবমূল্যায়ন। অভিশংসন অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তিনি দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসন নিয়ে নীরব থেকেছেন; যা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। এখন সিনেট সিদ্ধান্ত নেবে, সারা দুতের্তেকে অপসারণ ও ভবিষ্যতে সরকারি পদে নিষিদ্ধ করা হবে কি না।

 

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

হাসিনার সহিংস আচরণের প্রতিক্রিয়ায় বাড়ি ভাঙার ঘটনা: অন্তর্বর্তী সরকার

অভিশংসিত ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট

আপডেট সময় : ০৫:০৫:১৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক: ফিলিপাইনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সারা দুতের্তে অভিশংসিত হয়েছেন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটির প্রতিনিধি পরিষদের আইনপ্রণেতারা; যাদের বেশিরভাগই প্রেসিডেন্ট ফের্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়রের ঘনিষ্ঠ, এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এটি ফিলিপাইনের শীর্ষ দুই নেতার মধ্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক বিভক্তিকে আরও গভীর করল।

অভিশংসনের মূল অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতি, তার স্ত্রী ও স্পিকারের বিরুদ্ধে হত্যার হুমকি, অফিসের গোপন তহবিলের অনিয়ম এবং দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে ব্যর্থতা।

মার্কোস যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করলেও, দুতের্তের বাবা ও সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতের্তে চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। অভিশংসনের বিষয়ে সারা দুতের্তে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার ভাই, প্রতিনিধি পাওলো দুতের্তে বলেছেন, ‘এটি স্পষ্ট রাজনৈতিক হয়রানি।’

অভিশংসন মামলার নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকার অভিযোগ এনে তিনি বলেন, বিরোধী আইনপ্রণেতারা দ্রুত স্বাক্ষর সংগ্রহ করে ভিত্তিহীন অভিশংসন মামলা সিনেটে পাঠানোর চেষ্টা করেছেন।
দুতের্তে দীর্ঘদিন ধরে প্রেসিডেন্ট মার্কোস, তার স্ত্রী এবং কাজিন, প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মার্টিন রোমুয়ালদেজের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, দুর্বল নেতৃত্ব এবং ২০২৮ সালে সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতাকে বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ তুলেছেন। প্রতিনিধি পরিষদের অন্তত ২১৫ জন সদস্য অভিশংসন প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেন; যা দ্রুত সিনেটে পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি। প্রতিনিধি পরিষদের সচিব রেজিনাল্ড ভেলাসকো জানান, চার মাসের দীর্ঘ বিরতির আগে শেষ অধিবেশনে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

প্রেসিডেন্টের ছেলে, প্রতিনিধি সান্দ্রো মার্কোস এবং স্পিকার রোমুয়ালদেজও অভিযোগে স্বাক্ষর করেন। তারা সিনেটকে অভিশংসন আদালত গঠন করে ভাইস-প্রেসিডেন্টের বিচার পরিচালনা এবং তাকে পদ থেকে অপসারণের আহ্বান জানান।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, ‘দুতের্তের আচরণ জনগণের বিশ্বাসের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের পরিচয় বহন করে, যা তাকে সরকারি পদে থাকার জন্য সম্পূর্ণ অযোগ্য প্রমাণ করে।’

২০২২ সালের নির্বাচনে মার্কোস ও দুতের্তে ঐক্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একসঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। উভয়ের পরিবারই অতীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের মুখে পড়েছিল, তবে তাদের আঞ্চলিক সমর্থন তাদের নিরঙ্কুশ জয় নিশ্চিত করে।

মার্কোস ও সারা দুতের্তের রাজনৈতিক জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দুর্বল হতে থাকে।
টেলিভিশনে সম্প্রচারিত দীর্ঘ সংসদীয় তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৬১২.৫ মিলিয়ন পেসো (১০.৫ মিলিয়ন ডলার) গোপন তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগ উঠে। পরে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের কারণে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে অব্যক্ত সম্পদ, সম্পদ ঘোষণার ব্যর্থতা এবং মার্কোস সরকারের নীতির অবমূল্যায়ন। অভিশংসন অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তিনি দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের আগ্রাসন নিয়ে নীরব থেকেছেন; যা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। এখন সিনেট সিদ্ধান্ত নেবে, সারা দুতের্তেকে অপসারণ ও ভবিষ্যতে সরকারি পদে নিষিদ্ধ করা হবে কি না।