ঢাকা ১১:৪৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫

অভিবাসী প্রত্যাবর্তনে সম্মতিতে কলম্বিয়ায় শুল্ক আরোপ স্থগিত

  • আপডেট সময় : ০৭:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

বিদেশের খবর ডেস্ক : কলম্বিয়া নির্বাসিত অভিবাসীদের কোনো বাধা ছাড়াই গ্রহণ করতে সম্মত হওয়ায়, কলম্বিয়ার ওপর আরোপিত শুল্ক স্থগিত করেছে ট্রাম্প বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। গতকাল সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রকাশিত সংবাদে এ তথ্য জানা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার (২৬ জানুয়ারি) কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট দুইটি মার্কিন সামরিক বিমান অবতরণে বাধা দেওয়ার পর দেশটির সকল পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

প্রথমদিকে, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেছিলেন, তার দেশ কেবল সাধারণ বিমানে প্রবাসীদের গ্রহণ করবে, তবে তাদের সাথে অপরাধীর মতো আচরণ করা হবে না। তবে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কলম্বিয়া এখন মার্কিন সামরিক বিমানে অভিবাসীদের গ্রহণ করতে কোনো বিলম্ব ছাড়াই সম্মত হয়েছে। কলম্বিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষার জন্য সংলাপ অব্যাহত থাকবে। হোয়াইট হাউস এই চুক্তিকে ট্রাম্পের কঠোর নীতির বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছে। কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই অচলাবস্থা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমাধান হয়েছে।

এর আগে পেত্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক দীর্ঘ পোস্টে ট্রাম্পের অবরোধ নীতির নিন্দা করেন। পেত্রো বলেছিলেন, অভিবাসীদের মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানো উচিত। এর জবাবে ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ শুল্ক এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে তাৎক্ষণিক এবং দৃঢ় প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা ঘোষণা করেন। পেত্রো এক্স-এ পাল্টা পোস্টে কলম্বিয়ার ঐতিহ্য উদ্যাপন করে বলেন, ‘আপনার (ডোনাল্ড ট্রাম্প) অবরোধ আমাকে ভয় দেখায় না, কারণ কলম্বিয়া শুধু সৌন্দর্যের দেশ নয়, এটি বিশ্বের হৃদয়।’

অবশেষে, উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। হোয়াইট হাউস জানায়, কলম্বিয়া ট্রাম্পের সব দাবি মেনে নিয়েছে। তবে চুক্তি ভঙ্গ হলে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক কার্যকর হবে বলে সতর্ক করেছে হোয়াইট হাউস। এছাড়া ট্রাম্প ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং সীমান্তে কলম্বিয়ানদের ওপর কড়াকড়ি চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। এই নিষেধাজ্ঞা প্রথম দফার অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন সফলভাবে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে। এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপক অভিবাসী প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছে। এই নীতির অংশ হিসেবে শিকাগোতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তারা গ্রেফতার অভিযানও চালিয়েছে। মার্কিন কংগ্রেস সম্প্রতি লেকেন রিলি আইন পাস করেছে, যা অভিবাসন কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়াবে।

তবে ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ বলেছেন, এই আইন নাগরিক অধিকারগুলোর মৌলিক ক্ষয় ডেকে আনবে।
প্রসঙ্গত, কলম্বিয়ার অপরাধ ছিল, তারা নির্বাসিত অভিবাসী বহনকারী দুইটি মার্কিন বিমানকে অবতরণ করতে দেয়নি। এই ঘটনায় ট্রাম্প শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন। ২৪ ঘণ্টায় এই দুই দেশের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো এমন; প্রথমে অবৈধ অভিবাসীসহ কলম্বিয়ায় মার্কিন মিলিটারি প্লেন পাঠান ট্রাম্প। অভিবাসী নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশটি সেই প্লেনগুলোকে অবতরণের অনুমতি দেয়নি। এই ঘটনায় ক্ষেপে যাওয়া ট্রাম্প কলম্বিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ ট্যারিফ আরোপের ঘোষণা দিলেন।

পরে ট্যারিফ থেকে বাঁচতে অভিবাসী নিতে রাজি হয় কলম্বিয়া আর ট্রাম্পও খুশি মনে ট্যারিফ প্রত্যাহার করেন। পরে কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। আর হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, বোগোতা কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই অভিবাসীদের গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছে যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করবে না।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অভিবাসী প্রত্যাবর্তনে সম্মতিতে কলম্বিয়ায় শুল্ক আরোপ স্থগিত

আপডেট সময় : ০৭:৩৭:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

বিদেশের খবর ডেস্ক : কলম্বিয়া নির্বাসিত অভিবাসীদের কোনো বাধা ছাড়াই গ্রহণ করতে সম্মত হওয়ায়, কলম্বিয়ার ওপর আরোপিত শুল্ক স্থগিত করেছে ট্রাম্প বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে। গতকাল সোমবার (২৭ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রকাশিত সংবাদে এ তথ্য জানা গেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার (২৬ জানুয়ারি) কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট দুইটি মার্কিন সামরিক বিমান অবতরণে বাধা দেওয়ার পর দেশটির সকল পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

প্রথমদিকে, কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো বলেছিলেন, তার দেশ কেবল সাধারণ বিমানে প্রবাসীদের গ্রহণ করবে, তবে তাদের সাথে অপরাধীর মতো আচরণ করা হবে না। তবে হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কলম্বিয়া এখন মার্কিন সামরিক বিমানে অভিবাসীদের গ্রহণ করতে কোনো বিলম্ব ছাড়াই সম্মত হয়েছে। কলম্বিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাদের নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষার জন্য সংলাপ অব্যাহত থাকবে। হোয়াইট হাউস এই চুক্তিকে ট্রাম্পের কঠোর নীতির বিজয় হিসেবে অভিহিত করেছে। কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই অচলাবস্থা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমাধান হয়েছে।

এর আগে পেত্রো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক দীর্ঘ পোস্টে ট্রাম্পের অবরোধ নীতির নিন্দা করেন। পেত্রো বলেছিলেন, অভিবাসীদের মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানো উচিত। এর জবাবে ট্রাম্প নিজের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যাল-এ শুল্ক এবং ভিসা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দিয়ে তাৎক্ষণিক এবং দৃঢ় প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা ঘোষণা করেন। পেত্রো এক্স-এ পাল্টা পোস্টে কলম্বিয়ার ঐতিহ্য উদ্যাপন করে বলেন, ‘আপনার (ডোনাল্ড ট্রাম্প) অবরোধ আমাকে ভয় দেখায় না, কারণ কলম্বিয়া শুধু সৌন্দর্যের দেশ নয়, এটি বিশ্বের হৃদয়।’

অবশেষে, উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। হোয়াইট হাউস জানায়, কলম্বিয়া ট্রাম্পের সব দাবি মেনে নিয়েছে। তবে চুক্তি ভঙ্গ হলে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত শুল্ক কার্যকর হবে বলে সতর্ক করেছে হোয়াইট হাউস। এছাড়া ট্রাম্প ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং সীমান্তে কলম্বিয়ানদের ওপর কড়াকড়ি চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। এই নিষেধাজ্ঞা প্রথম দফার অভিবাসীদের প্রত্যাবাসন সফলভাবে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে। এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসন ব্যাপক অভিবাসী প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছে। এই নীতির অংশ হিসেবে শিকাগোতে যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তারা গ্রেফতার অভিযানও চালিয়েছে। মার্কিন কংগ্রেস সম্প্রতি লেকেন রিলি আইন পাস করেছে, যা অভিবাসন কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা ব্যাপকভাবে বাড়াবে।

তবে ডেমোক্র্যাট কংগ্রেস সদস্য আলেক্সান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্তেজ বলেছেন, এই আইন নাগরিক অধিকারগুলোর মৌলিক ক্ষয় ডেকে আনবে।
প্রসঙ্গত, কলম্বিয়ার অপরাধ ছিল, তারা নির্বাসিত অভিবাসী বহনকারী দুইটি মার্কিন বিমানকে অবতরণ করতে দেয়নি। এই ঘটনায় ট্রাম্প শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেন। ২৪ ঘণ্টায় এই দুই দেশের মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো এমন; প্রথমে অবৈধ অভিবাসীসহ কলম্বিয়ায় মার্কিন মিলিটারি প্লেন পাঠান ট্রাম্প। অভিবাসী নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশটি সেই প্লেনগুলোকে অবতরণের অনুমতি দেয়নি। এই ঘটনায় ক্ষেপে যাওয়া ট্রাম্প কলম্বিয়ার পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ ট্যারিফ আরোপের ঘোষণা দিলেন।

পরে ট্যারিফ থেকে বাঁচতে অভিবাসী নিতে রাজি হয় কলম্বিয়া আর ট্রাম্পও খুশি মনে ট্যারিফ প্রত্যাহার করেন। পরে কলম্বিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। আর হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে জানায়, বোগোতা কোনো পূর্বশর্ত ছাড়াই অভিবাসীদের গ্রহণ করতে সম্মত হয়েছে যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়ার বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপ করবে না।