ঢাকা ০৭:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

অভিনেত্রী ও গায়িকা মারিয়ান ফেইথফুলের জীবনাবসান

  • আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৪ বার পড়া হয়েছে

বিনোদন ডেস্ক: ষাটের দশকের সাড়া তোলা ‘অ্যা টিয়ার্স গো বাই’ গানের ব্রিটিশ গায়িকা ও অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল মারা গেছেন।

এই শিল্পীর মৃত্যুর খবর জানিয়ে বিবিসি লিখেছে ফেইথফুলের বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর, তিনি স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।

ফেইথফুলের মৃত্যুর জানিয়ে তার মুখপাত্র একটি বিবৃতিতে বলেছেন, হৃদয়ে গভীর ব্যথা নিয়ে জানাচ্ছি লন্ডনে বৃহস্পতিবার মারিয়ান ফেইথফুল মারা গেছেন। তার পরিবারের সদস্যরা সে সময় তাকে ঘিরে ছিল। তার মৃত্যু হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে।

ফেইথফুলের পরিবার এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভক্তরা তাকে মিস করবেন বলেও জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।

মারণব্যাধি ক্যান্সার ছাড়াও ফেইথফুল অতিরিক্ত ধূমাপানের কারণে কিছু রোগে ভুগছিলেন বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে টানা ২২ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সে সময় চিকিৎসকরা এই গায়িকার বেঁচে থাকার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময়ে সুস্থ হয়ে পরের বছর ২০২১ সালে তার ২১তম অ্যালবাম ‘সি ওয়াকস ইন বিউটি’ প্রকাশ করেন ফেইথফুল। যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেডে ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরে জন্ম নেওয়া গায়িকার গানের জীবন শুরু ১৯৬৪ সালে।

সংগীত জীবনের শুরুতে ফেইথফুলকে পাওয়া যায় কফি হাউজের ফোক গায়িকা হিসাবে। সেখান থেকেই তাকে গানের মূল জগতে নিয়ে আসেন প্রখ্যাত ব্যান্ড দ্য রোলিং স্টোনের ম্যানেজার অ্যান্ড্রু লুং ওল্ডহ্যাম। ‘অ্যা টিয়ার্স গো বাই’ গানটি ফেইথফুলের ক্যারিয়ারের অন্যতম জনপ্রিয় একটি গান। রোলিং স্টোনের দুই সদস্য মিক জ্যাগার ও কেই থ রিচার্ডসেরই লেখা এই গানটি ১৯৬৪ সালে মুক্তির পর যুক্তরাজ্যের টপ চার্টের শীর্ষ ১০ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছিল। এরপর ফেইথফুল ধীরে ধীরে পরিচিত পান তার সুরেলা কণ্ঠস্বরের জন্য। এই শিল্পীর আরো দুইটি দআলোচিত গান হল ‘কাম অ্যান্ড স্টে উইথম মি’ ও ‘দ্য লিটল বার্ড অ্যান্ড সামার নাইটস’।

তার ‘ওয়াইল্ড হর্সেস’ এবং ‘ইউ কান্ট অলওয়েজ গেট ইউ ওয়ান্ট’ শিরোনামের গান দুটিও সাড়া তোলে। সত্তরের দশকে হেরোইন আসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিরি। পরে ক্ল্যাসিক অ্যালবাম ‘ব্রোকেন ইংলিশের’ মাধ্যমে তিনি সংগীত জগতে ফিরে আসেন।

 

ফেইথফুলের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে তার বন্ধু রোলিং স্টোন ব্যান্ডের গায়ক মিক জ্যাগার বলেছেন, একজন চমৎকার বন্ধু, ভালো শিল্পী এবং মহান অভিনেত্রীকে আমরা হারালাম।

জ্যাগারের সঙ্গে ফেইথফুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত। শিল্পী কিথ রিচার্ডস বলেছেন, ফেইথফুলের মৃত্যুতে তিনি ‘শোকাহত’। আমি তাকে মিস করব- বলেন রিচার্ডস।

রোলিং স্টোনের গিটারিস্ট রনি উড ইনস্টাগ্রামে গান রেকর্ডিংয়ের স্টুডিওতে ফেইথফুল এবং রিচার্ডসের একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, “বিদায় প্রিয় বন্ধু, ভালো থেক।”

এই গায়িকা পরবর্তীতে এসেছিলেন অভিনয়েও। ১৯৬৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য গার্ল অন এ মোটরসাইকেল’, ‘ঘোস্ট স্টোরি’, ‘হ্যামলেট’, ‘শপিং’সহ আরো কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন ফেইথফুল। তবে মঞ্চ নাটকেও ছিলেন ফেইথফুল; ১৯৬৭ সালে অন্তন চেখভের গল্প অবলম্বনে মঞ্চ নাটক করেছেন তিনি।

পারিবারিক জীবনে তিনি তিনবার বিয়ে করেছেন। ১৯৬৫ সালে ম্যাক্সিকান-ব্রিটিশ শিল্পী জন ডানবারকে বিয়ে করলেও, ফেইথফুলের সেই সংসার টিকেছিল মাত্র এক বছর। এরপর দুইবার বিয়ে করেছিলেন, তবে ওই দুই সংসারও ভেঙে যায় এই গায়িকার। পরিবারে ছেলে নিকোলাস ডানবারকে রেখে গেছেন ফেইথফুল।

ট্যাগস :

যোগাযোগ

সম্পাদক : ডা. মোঃ আহসানুল কবির, প্রকাশক : শেখ তানভীর আহমেদ কর্তৃক ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেস, ১৬৭ ইনার সার্কুলার রোড, মতিঝিল থেকে মুদ্রিত ও ৫৬ এ এইচ টাওয়ার (৯ম তলা), রোড নং-২, সেক্টর নং-৩, উত্তরা মডেল টাউন, ঢাকা-১২৩০ থেকে প্রকাশিত। ফোন-৪৮৯৫৬৯৩০, ৪৮৯৫৬৯৩১, ফ্যাক্স : ৮৮-০২-৭৯১৪৩০৮, ই-মেইল : [email protected]
আপলোডকারীর তথ্য

অভিনেত্রী ও গায়িকা মারিয়ান ফেইথফুলের জীবনাবসান

আপডেট সময় : ০৪:৪৮:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫

বিনোদন ডেস্ক: ষাটের দশকের সাড়া তোলা ‘অ্যা টিয়ার্স গো বাই’ গানের ব্রিটিশ গায়িকা ও অভিনেত্রী মারিয়ান ফেইথফুল মারা গেছেন।

এই শিল্পীর মৃত্যুর খবর জানিয়ে বিবিসি লিখেছে ফেইথফুলের বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর, তিনি স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন।

ফেইথফুলের মৃত্যুর জানিয়ে তার মুখপাত্র একটি বিবৃতিতে বলেছেন, হৃদয়ে গভীর ব্যথা নিয়ে জানাচ্ছি লন্ডনে বৃহস্পতিবার মারিয়ান ফেইথফুল মারা গেছেন। তার পরিবারের সদস্যরা সে সময় তাকে ঘিরে ছিল। তার মৃত্যু হয়েছে শান্তিপূর্ণভাবে।

ফেইথফুলের পরিবার এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভক্তরা তাকে মিস করবেন বলেও জানিয়েছেন তার মুখপাত্র।

মারণব্যাধি ক্যান্সার ছাড়াও ফেইথফুল অতিরিক্ত ধূমাপানের কারণে কিছু রোগে ভুগছিলেন বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে। এর আগে ২০২০ সালে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে টানা ২২ দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সে সময় চিকিৎসকরা এই গায়িকার বেঁচে থাকার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময়ে সুস্থ হয়ে পরের বছর ২০২১ সালে তার ২১তম অ্যালবাম ‘সি ওয়াকস ইন বিউটি’ প্রকাশ করেন ফেইথফুল। যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেডে ১৯৪৬ সালের ডিসেম্বরে জন্ম নেওয়া গায়িকার গানের জীবন শুরু ১৯৬৪ সালে।

সংগীত জীবনের শুরুতে ফেইথফুলকে পাওয়া যায় কফি হাউজের ফোক গায়িকা হিসাবে। সেখান থেকেই তাকে গানের মূল জগতে নিয়ে আসেন প্রখ্যাত ব্যান্ড দ্য রোলিং স্টোনের ম্যানেজার অ্যান্ড্রু লুং ওল্ডহ্যাম। ‘অ্যা টিয়ার্স গো বাই’ গানটি ফেইথফুলের ক্যারিয়ারের অন্যতম জনপ্রিয় একটি গান। রোলিং স্টোনের দুই সদস্য মিক জ্যাগার ও কেই থ রিচার্ডসেরই লেখা এই গানটি ১৯৬৪ সালে মুক্তির পর যুক্তরাজ্যের টপ চার্টের শীর্ষ ১০ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছিল। এরপর ফেইথফুল ধীরে ধীরে পরিচিত পান তার সুরেলা কণ্ঠস্বরের জন্য। এই শিল্পীর আরো দুইটি দআলোচিত গান হল ‘কাম অ্যান্ড স্টে উইথম মি’ ও ‘দ্য লিটল বার্ড অ্যান্ড সামার নাইটস’।

তার ‘ওয়াইল্ড হর্সেস’ এবং ‘ইউ কান্ট অলওয়েজ গেট ইউ ওয়ান্ট’ শিরোনামের গান দুটিও সাড়া তোলে। সত্তরের দশকে হেরোইন আসক্তিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিরি। পরে ক্ল্যাসিক অ্যালবাম ‘ব্রোকেন ইংলিশের’ মাধ্যমে তিনি সংগীত জগতে ফিরে আসেন।

 

ফেইথফুলের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে তার বন্ধু রোলিং স্টোন ব্যান্ডের গায়ক মিক জ্যাগার বলেছেন, একজন চমৎকার বন্ধু, ভালো শিল্পী এবং মহান অভিনেত্রীকে আমরা হারালাম।

জ্যাগারের সঙ্গে ফেইথফুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল ১৯৬৬ সাল থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত। শিল্পী কিথ রিচার্ডস বলেছেন, ফেইথফুলের মৃত্যুতে তিনি ‘শোকাহত’। আমি তাকে মিস করব- বলেন রিচার্ডস।

রোলিং স্টোনের গিটারিস্ট রনি উড ইনস্টাগ্রামে গান রেকর্ডিংয়ের স্টুডিওতে ফেইথফুল এবং রিচার্ডসের একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, “বিদায় প্রিয় বন্ধু, ভালো থেক।”

এই গায়িকা পরবর্তীতে এসেছিলেন অভিনয়েও। ১৯৬৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য গার্ল অন এ মোটরসাইকেল’, ‘ঘোস্ট স্টোরি’, ‘হ্যামলেট’, ‘শপিং’সহ আরো কিছু সিনেমায় অভিনয় করেছেন ফেইথফুল। তবে মঞ্চ নাটকেও ছিলেন ফেইথফুল; ১৯৬৭ সালে অন্তন চেখভের গল্প অবলম্বনে মঞ্চ নাটক করেছেন তিনি।

পারিবারিক জীবনে তিনি তিনবার বিয়ে করেছেন। ১৯৬৫ সালে ম্যাক্সিকান-ব্রিটিশ শিল্পী জন ডানবারকে বিয়ে করলেও, ফেইথফুলের সেই সংসার টিকেছিল মাত্র এক বছর। এরপর দুইবার বিয়ে করেছিলেন, তবে ওই দুই সংসারও ভেঙে যায় এই গায়িকার। পরিবারে ছেলে নিকোলাস ডানবারকে রেখে গেছেন ফেইথফুল।