বিদেশের খবর ডেস্ক : মিয়ানমারের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল দিয়ে অবৈধভাবে নৌকায় করে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে ৮০ জনের বেশি রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে। মানব পাচারকারীদের মাধ্যমে তারা অবৈধ পথে যাত্রা করছিল। একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে শনিবার এক প্রতিবেদনে তথ্যটি জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি নিরাপত্তা সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, এই দলটির মধ্যে নারী ও শিশু রয়েছে। শুক্রবার তাদেরকে সোম রাজ্যের থানবিউজাত শহরের কাছ থেকে কর্তৃপক্ষ আটক করেছিল।
মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলমানদের বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে ব্যাপকভাবে অবৈধ অভিবাসী হিসেবে গণ্য করা হয়। তারা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছে, নাগরিকত্ব, স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
নিরাপত্তা সূত্রটি এএফপিকে বলেছে, ‘রাখাইন রাজ্য থেকে নৌকা নিয়ে যাওয়ার পর তারা রাবার বাগানের কাছে লুকিয়ে ছিল। পাচারকারীরা তাদের মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
নিপীড়নের শিকার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যাওয়ার প্রধান গন্তব্য হয় মালয়েশিয়া।
তাদের নিয়ে একটি তদন্ত চলছে। রাখাইন রাজ্য ছেড়ে যাওয়ার জন্য এই গোষ্ঠীটি ফৌজদারি অভিযোগের মুখোমুখি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এমনকি অভিবাসন আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত রোহিঙ্গাদের দুই বছরের জেলও হতে পারে মিয়ানমারে।
ইয়াঙ্গুন এবং নেপিদোতে মানব পাচার বিরোধী বিভাগ মামলার বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, এমনও খবর পাওয়া গেছে যে, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর একটি জাহাজ মোন রাজ্যের মুডন শহরের কাছে একটি নৌকায় ১২০ জন রোহিঙ্গাকে খুঁজে পেয়েছে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সামরিক দমন অভিযান, হত্যা, অগ্নিসংযোগ এবং ধর্ষণের ব্যাপক ঘটনার পর প্রায় ৭ লাখ ৫০ হাজার রোহিঙ্গা বাধ্য হয়ে রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল রাখাইন রাজ্যে তাদের বসবাসের অবস্থাকে ‘বর্ণবাদ’- এর সঙ্গে তুলনা করেছে।
ঘটনার পর মিয়ানমার জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতে গণহত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হচ্ছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে একটি অভ্যুত্থানের পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটি বিশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে। একটি স্থানীয় পর্যবেক্ষণ গ্রুপের মতে, অভ্যুত্থানের পর ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।