নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের অনুমতি ছাড়াই ওয়াকিটকি বিক্রি ও ভাড়া দিচ্ছিল একটি সিন্ডিকেট। এতে সরকার তরঙ্গ ফি বাবদ বিপুল অর্থ বা রাজস্ব হারাচ্ছিল। বিটিআরসির সহযোগিতায় গত শনিবার রাত থেকে গতকাল রোববার সকাল পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই সিন্ডিকেটের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে এলিট ফোর্স র্যাব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মেহেদী হাসান, সাদিক হাসান, মোহাম্মদ ফয়সাল, তালিবুর রহমান ও ফারুক হাসান। এসময় তাদের কাছ থেকে ৩১৭টি অবৈধ ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট ও ১১৬টি মোবাইল ও পাঁচ হাজার ২৪৪টি বিভিন্ন প্রকার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়, যার মূল্য প্রায় অর্ধকোটি টাকা। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান। র্যাব বলছে, ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য কোনো ধরনের লাইসেন্স বা তরঙ্গ গ্রহণ করেননি তারা।রাজধানীর সায়েদাবাদ, মনিপুরীপাড়া, রাজারবাগ ও শেওড়াপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব-১০ এর অধিনায়ক জানান, ওয়াকিটকি সেটের অবৈধ আমদানি, মজুদ, বিক্রি, বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রদর্শন, ইজারা প্রতিহত করার লক্ষ্যে যৌথ অভিযানটি চালানো হয়। অভিযানকালে গ্রেপ্তার মেহেদীর কাছ থেকে ২২৪টি, ফারুকের কাছ থেকে ৩০ এবং পলাতক গোলাম মোহাম্মদ ফেরদৌসের বাসা থেকে ৬৩টি ওয়াকিটকি ওয়্যারলেস সেট ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়। তারা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ওয়াকিটকি ব্যবহারের জন্য কোনো লাইসেন্স বা তরঙ্গ গ্রহণ করেননি।
এছাড়া একই আইনের ৫৭(৩) ধারা অনুযায়ী ওয়াকিটকি আমদানি করার আগে বিটিআরসি থেকে অনাপত্তিপত্র গ্রহণের বিধান থাকলেও আটকরা তা ভঙ্গ করে অবৈধভাবে ওয়াকিটকিগুলো আমদানি এবং বিক্রি করছিল। সিন্ডিকেটটি চট্টগ্রামের কতিপয় ব্যক্তির মাধ্যমে বিদেশ থেকে দীর্ঘ এক বছর ধরে লাইসেন্স ছাড়া ওয়াকিটকি সেট ও সরঞ্জমাদি অবৈধ পথে সংগ্রহ করেছিলেন। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে র্যাব বলছে, এ পর্যন্ত আটক ব্যক্তিরা আনুমানিক ১১৫০টি ওয়াকিটকি সেট অবৈধ পন্থায় ক্রয়-বিক্রয় ও ইজারা দিয়েছে। এক্ষেত্রে ওয়াকিটকি সেট ও প্রয়োজনীয় তরঙ্গ ব্যবহারের লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে সরকার যে মূল্যবান রাজস্ব পেত, তা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।মূলত সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে পলাতক ব্যক্তিসহ আটকরা অবৈধ উপায়ে ওয়াকিটকি ও সরঞ্জমাদি আমদানি করেছে।
র্যাব জানায়, বিটিআরসির নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করতে পারবেন না। এটি সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। এক্ষেত্রে আটক ব্যক্তিরা দেশের প্রচলিত আইন অমান্য করে অবৈধভাবে সাধারণ মানুষের কাছে কালো রঙের ওয়াকিটকি সেট বিক্রি করেছেন, যা সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। এই ধরনের অবৈধ ওয়াকিটকি সেট ব্যবহার করে অপরাধী চক্র ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, দস্যুতা, চাঁদাবাজি, প্রতারণাসহ বহুবিধ অপরাধ করে থাকে।
অবৈধভাবে ওয়াকিটকি বিক্রি ও ভাড়া সিন্ডিকেট
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ